বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী পালিত
মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা, মেহেরপুর ও কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে ৩ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ। এছাড়া আলমডাঙ্গায় আলোচনাসভা, আবৃত্তি ও নাটক পরিবেশিত হয়। মেহেরপুরেও এ উপলক্ষে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গায় কবি গুরুর ১৫৬তম জন্মজয়ন্তী পালিত হয়েছে। কবির জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা, আবৃত্তি, সঙ্গীত-নৃত্য ও নাটক পরিবেশিত হয় ওই জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে। আলমডাঙ্গা উপজেলা চত্বরে অবস্থিত এরশাদমঞ্চে অনুষ্ঠিত এ জন্মজয়ন্তীর আয়োজন করে রবীন্দ্র-নজরুল জন্মজয়ন্তী উদযাপন পরিষদ। ২৫ বোশেখ বিকেলে রবীন্দ্র-নজরুল জন্মজয়ন্তি উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা শেখ নূর মোহাম্মদ জকুর সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত শান্তি নিকেতনের প্রাক্তন মেধাবী ছাত্র আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মকবুলার রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক নওরোজ মোহম্মদ সাঈদ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজাদ জাহান, পৌর মেয়র হাসান কাদির গনু, আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক মালেকা হক রুন্নু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী খালেদুর রহমান অরুণ, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাস্টার, প্রেসক্লাব সভাপতি খন্দকার শাহ আলম মন্টু, সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম আজম, সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সিরাজ সামজী। বক্তব্য রাখেন রবীন্দ্র-নজরুল জন্মজয়ন্তী উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব শামীম রেজা। হারদী এমএস জোহা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক একেএম ফারুকের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সহসভাপতি কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষ জামসিদুল হক মুনি, হাটবোয়ালিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক আসিফ জাহান, মুক্তিযোদ্ধা সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সভাপতি আশরাফুল হক লুলু, সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন, গোলাম রহমান চৌধুরী প্রমুখ।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে মেহেরপুর জেলা প্রশাসন ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান মফিজ। উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক খাইরুল হাসান, জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) পল্লব ভট্টাচার্য, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সহসভাপতি নুরুল আহম্মেদ, মোমিনুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ, আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল, সদস্য সহকারী অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত) সাইদুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক হাসানুজ্জামান মালেক প্রমুখ। অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন শামীম জাহাঙ্গীর সেন্টু। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আবু হাসনাত দিপু। পরে শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা রবীন্দ্র সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন। সঙ্গীত ও নৃত্য শিল্পীরা হলেন- সাফিনাজ আরা ইরানী, ফৌজিয়া আফরোজ তুলি, অ্যাড. রাসেল, মোমিনুল ইসলাম, সোহাগ, নির্ঝর প্রমুখ।
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়েছে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল সোমবার দুপুরে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ। এ সময় তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ বাঙালির জীবন ও সাহিত্যে প্রবলভাবে বিচরণ করছেন এবং করবেন। ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল অর্জন করে তিনি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে যেমন বিশ্ব দরবারে স্থান করে দিয়েছেন, তেমনি বাঙালিকেও মর্যাদা এনে দিয়েছেন। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, গাল্পিক, প্রাবন্ধিক, শিশুসাহিত্যিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ, ভ্রমণপিয়াসী, চিত্রকর, দার্শনিক, সমাজ-চিন্তক, মানব-হিতৈষী। সাহিত্যের যে শাখাতেই হাত রেখেছেন, সেখানেই সোনা ফলেছে। বাউল গানের মধ্যে, বাউল সম্প্রদায়ের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ সন্ধান পেয়েছিলেন মানবধর্মের সুর উল্লেখ করে হানিফ বলেন, লালন ফকিরের মতো লৌকিক প্রতিভাকে রবীন্দ্রনাথ আবিষ্কার করেছিলেন। এছাড়াও লালনের শিষ্য গগন হরকরার গান, ‘আমার মনের মানুষ যে-রে, কোথায় পাবো তারে,’ যে সুরে রচিত, ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটিও সেই সুরে রচিত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি রচনা করেছেন বাউল সুর দিয়ে।
জেলা প্রশাসক জহির রায়হানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. আবুল আহসান চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, কুষ্টিয়া সরকারি মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাসুদ রহমান ও রবীন্দ্র সম্মিলন পরিষদের জেলা শাখার সভাপতি কবি আলম আরা জুই, কুমারখালী উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খান, লালন একাডেমীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাইজাল আলী খান, কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনুজ্জামান প্রমুখ।