সুস্থ রাজনীতি চর্চা না হলে একুশের চেতনা ভুলণ্ঠিত হবে

দর্শনা অনির্বাণের একুশে মেলার ৭ম দিনের আলোচনাসভায় বক্তারা

দর্শনা অফিস: একুশের ঐকতানে, আজ বাঙালি বিশ্বমানে এ স্লোগানকে সামনে রেখে দর্শনা অনির্বাণ থিয়েটারের আয়োজনে ৮ দিনব্যাপী মহান একুশে মেলা ও নাট্যোৎসবের গতকাল সোমবার ছিলো ৭ম দিন। দর্শনা সরকারি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত একুশে মেলার এ আলোচনা পর্বের বিষয় ছিলো শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র রাজনীতি। শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রধান আলোচকের আলোচনায় চুয়াডাঙ্গা জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদুল ইসলাম আজাদ বলেন, একুশকে কেন্দ্র করেই বাঙালি জাতি হয়েছে সচেতন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর সাহস দেখিয়েছে। ছাত্র রাজনীতির মধ্যদিয়েই গড়ে উঠে রাজনীতির মূল ভীত। শুধু একুশের আন্দোলনই নয়, দেশের সবকটি আন্দোলনে ছাত্রদের অগ্রণী ভূমিকা প্রসংশার দাবি কুড়িয়েছে। একুশকে ধরেই আজ আমরা পেয়েছে মহান স্বাধীনতা। তাই সুস্থ রাজনীতি চর্চার মধ্যদিয়ে ছাত্র রাজনীতির সোনালী অতীত ফিরিয়ে আনতে হবে। ওয়ার্কার্সপার্টির জেলা পলিট ব্যুরো সদস্য সৈয়দ মজনুর রহমান বলেন, একুশ আমাদের দিয়েছে দুটি মহাকাব্য। একুশের আন্দোলনে ছাত্ররা যেমন জীবনবাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো, তেমনিভাবে জাতীর কল্যাণে তাদের কাজ করা উচিত। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আজকের ছাত্র রাজনীতি শুধু টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও ভাগ বাটোয়ারা মত্ত।

দৈনিক মাথাভাঙ্গার সম্পাদক ও প্রকাশক সরদার আল আমিন বলেন, আমরা কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রাজনীতির কথা বলছি? যে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা নিজেদের শিক্ষক না ভেবে শুধু চাকরিজীবি মনে করেন, আমরা কি সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কথা বলছি নাকি শুধু শুধু আজকের প্রজন্মকে দায়ী করছি? বর্তমান সময়ের সাথে যদি আজকের প্রজন্মকে মানিয়ে নিতে না পারি, তবে সে জন্যে দায়ী আমরাই। বর্তমানে প্রবীণদের তুলনায় নবীনরা অনেকটাই এগিয়ে। শিক্ষাঙ্গনের সুষ্ঠু রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে প্রবীন রাজনীতিবীদর এগিয়ে আসা খুবই জরুরি। কেননা, নতুনদের সুপথে রাখতে বা সঠিক পথ দেখানোর দায়িত্ব প্রবীণদের। নতুনদের সুপথে রাখতে না পেরে ওদের দোষারোপ মানে নিজেদের ব্যর্থতাকে আড়াল করার চেষ্টা। তবে এটা ঠিক যে, প্রজন্মর মাঝে রাজনৈতিক সচেতনতা ছড়ানোর জন্য দরকার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব। আমরা মূলত তারই অপেক্ষায়। দামুড়হুদা উপজেলা আ.লীগের যুগ্মসম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান, সাবেক ছাত্রনেতা জাকারিয়া আলম বলেন, রাজনীতিবিদদের সঠিক নির্দেশনার অভাবে, ছাত্র রাজনীতির আজ এ দশা। তবুও আমরা আশাবাদি ছাত্ররা শৈরাচার, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াবে। এ ছাত্র সমাজ ভাষা আন্দোলন ও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে প্রমাণ করেছে তাদের শ্রেষ্ঠতকে। শুধু ছাত্রনীতির দোষারোপ করে কোনো লাভ নেই। রাজনীতি আজ অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের হাতে চলে গেছে। তবুও ছাত্র রাজনীতি জাগরণকে কোনোভাবে দমিয়ে রাখা যাবে না।

দর্শনা পৌর আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম বলেন, আজকের মাতৃভাষা ও স্বাধীনতা সবই ছাত্রদের আন্দোলনের সুফল। তাই ছাত্রদের বাদ দিয়ে বাংলার ইতিহাস লেখা যাবে না। সভাপতিত্ব করেন অনির্বাণ কর্মী, উথলী মহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক সায়েমুল হক টিপু। অনির্বাণের কর্মী মাহবুবুর রহমান মুকুলের উপস্থাপনায় ছিলেন অ্যাড. শহিদুল ইসলাম, বদরুল আলম ফিট্টু, অনির্বাণ থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। আলোচনাপর্বের আগে নৃত্য ও সঙ্গীত ও পরে নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More