চুয়াডাঙ্গা আবুল হোসেন স্মৃতি সাধারণ গণগ্রন্থাগার ও শ্রীমন্ত টাউনহল পুনরুদ্ধার কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা আবুল হোসেন স্মৃতি সাধারণ গণগ্রন্থাগার ও শ্রীমন্ত টাউনহল পুনরুদ্ধার কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিদ্ব করেন বিশিষ্ট সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তৌহিদ হোসেন। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও বিশিষ্ট গবেষক অধ্যাপক এমএ মোহিত, চুয়াডাঙ্গা নাগরিক কমিটি ও চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শেখ সেলিম, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চুয়াডাঙ্গা জেলা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার আবু হোসেন, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজিব হাসান কচি, চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি ইকবাল আতাহার তাজ, বিশিষ্ট্য আইনজীবী ও আবুল হোসেনের উত্তরাধিকার অ্যাড. কাইজার হোসেন জোয়ার্দ্দার শিল্পী, সাবেক প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন। আলোচনা করেন সংলাপ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সভাপতি নজির আহমেদ, প্রগতি লেখক সংঘের সাধারণ সম্পাদক কাজল মাহমুদ, উদীচীর সভাপতি হাবিবি জহির রায়হান ও সুবর্ণা মানব কল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালন মিম্মা সুলতানা মিতা প্রমুখ। আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা জেলা আবুল হোসেন স্মৃতি সাধারণ গণগ্রন্থাগার ১৯১৮ সালে ও চুয়াডাঙ্গা তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক শ্রীমন্ত বাবুর নামে ১৯২২ সালে শ্রীমন্ত টাউন হল প্রতিষ্ঠিত হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা আবুল হোসেন স্মৃতি গ্রন্থাগারের জমির পরিমাণ ৩ শতক ও শ্রীমন্ত টাউন হলের জমির পরিমাণ ছিলো ৮ শতক। বিনোদনী নামক এক মহিয়সী মহিলা উক্ত উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানের নামে দান করেছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। সেক্ষেত্রে ৯০ বছর পর চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা কিভাবে ওই জমির মালিক হলেন? আর কোন মালিকানা সত্ত্বে শতবছরের ঐতিহ্যবাহী চুয়াডাঙ্গা জেলা আবুল হোসেন স্মৃতি সাধারণ গণগ্রন্থাগার ও শ্রীমন্ত টাউন হল ধ্বংস করে সেখানে বাণিজ্যিকভাবে ভবন নির্মাণ করা হলো। এর আইনগত ভিত্তি কোথায় তা চুয়াডাঙ্গার মানুষ জানতে চাই।’ বিািশষ্ট গবেষক চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও বিশিষ্ট গবেষক অধ্যাপক এমএ মোহিত বলেন, ‘আমি প্রায় ৬২ বছর এই লাইব্রেরিতে পড়াশোনা করেছি এবং পাঠক ছিলাম। ২০০৮ সাল পর্যন্ত আমি এই লাইব্রেরির বই ক্রয় কমিটির সদস্য ছিলাম। ২০১০ সাল থেকে এই লাইব্রেরিটি সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রভাবে এবং একটি প্রজন্মকে জ্ঞান-বিজ্ঞান থেকে বিচ্যুত করার মানসে ধ্বংস করা হয়েছে। যা সভ্যতার ইতিহাসে বিরল।’চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি ইকবাল আতাহার তাজ বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা জেলা আবুল হোসেন স্মৃতি সাধারণ গণগ্রন্থাগার কখনোই পাবলিক লাইব্রেরি ছিলো না। আবার শ্রীমন্ত টাউন হল কখনোই পাবলিক টাউন হল ছিলো না। তাহলে কোন যুক্তিতে পৌরসভার তৎকালীন মেয়র এই প্রতিষ্ঠান দুটিকে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সম্পদ হিসেবে দাবি করে ধ্বংস করলেন? এবং চুয়াডাঙ্গার বর্তমান প্রজন্মকে অন্ধকারে ছুড়ে ফেললেন এর জবার কে দিবে’অধ্যাপক শেখ সেলিম বলেন, ‘আবুল হোসেন স্মৃতি সাধারণ গণগ্রন্থাগার ও শ্রীমন্ত টাউন হল জনগণের প্রতিষ্ঠান। জনগণই এর মালিক। অবৈধ পন্থায় যারা এটি দখল করেছে, তাদের স্বরুপ উম্মোচন সময়ের দাবি।’ তিনি আরও বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার মানুষ বৈধভাবেই এই প্রতিষ্ঠান দখল করবে। এবং এই সম্পদ পুনরুদ্ধারের সবোর্চ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবে।’ সাংস্কৃতিক কর্মী কাজল মাহমুদ বলেন, ‘নির্মিত তথাকথিত চুয়াডাঙ্গা পৌর হলটির নকশায় প্রথম ফ্লোরে কনভেনশন হল ও দ্বিতীয় ফ্লোরে লাইব্রেরি হওয়ার কথা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার দোকান নির্মাণ করে পজিশন বিক্রির মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকার মালিক হওয়ার লালসায় নিচ তলা এবং দুই তলায় দোকান নির্মাণ করেছেন। যা বেদনাদায়ক।’সভা শেষে প্রতিষ্ঠান দুটি পুনরুদ্ধারের জন্য আজ বুধবার সকাল সাড়ে নয়টায় জেলা প্রশাসকের সাথে চুয়াডাঙ্গা নাগরিক কমিটি, চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ, প্রগতি লেখক সংঘ, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দ, সংলাপ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী, অরিন্দম সাংস্কৃতিক সংগঠন, উদীচী ও চুয়াডাঙ্গা জেলা আবুল হোসেন স্মৃতি সাধারণ গণগ্রন্থাগার ও শ্রীমন্ত টাউন হল পুনরুদ্ধার কমিটি গণশুনানীতে অংশগ্রহণ শেষে স্মারকরিপি প্রদান করবেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More