আবুল হোসেন স্মৃতি গ্রন্থাগার ও শ্রীমন্ত টাউন হল পুনরুদ্ধারে সাত দিনের আল্টিমেটাম : জেলা প্রশাসকের তদন্ত কমিটি

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা আবুল হোসেন স্মৃতি সাধারণ গ্রন্থাগার ও শ্রীমন্ত টাউন হল পুনরুদ্ধার কমিটি দুই দফা দাবিতে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান ও জেলা প্রশাসকের গণশুনানিতে অংশ নিয়েছেন। গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে গণশুনানিতে অংশ ও স্মারকলিপি প্রদান করেন চুয়াডাঙ্গার দুটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান পুনরুদ্ধার কমিটি। স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও বিশিষ্ট গবেষক অধ্যাপক এমএ মোহিত, চুয়াডাঙ্গা নাগরিক কমিটি ও চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শেখ সেলিম, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চুয়াডাঙ্গা জেলা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার আবু হোসেন, বিশিষ্ট আইনজীবী ও আবুল হোসেনের উত্তরাধিকার অ্যাড. কাইজার হোসেন জোয়ার্দ্দার শিল্পী, ডা. হারুন অর রশিদ পলাশ, অরিন্দম সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাবেক সভাপতি মো. আলাউদ্দীন, চুয়াডাঙ্গা আলিয়া মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিক, প্রগতি লেখক সংঘের সাধারণ সম্পাদক কাজল মাহমুদ ও সমাজকর্মী লাভলু রহমান প্রমুখ।
স্মারকলিপি গ্রহণকালে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনে পরাজয়ের কারণেই কি তারা গ্রন্থাগারটির এই পরিণতি করেছে। আপাতত মনে হচ্ছে তাদের কাগজপত্র সঠিক না। আমি একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছি। বিষয়গুলো তিনি যাচাই-বাচাই করবেন।’
লিখিতভাবে জেলা প্রশাসক বরাবরে দেয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ‘গত ১৯১৮ সালে চুয়াডাঙ্গার শহীদ আবুল কাশেম সড়কে চুয়াডাঙ্গা জেলা আবুল হোসেন স্মৃতি সাধারণ গ্রন্থাগার ও গত ১৯২২ সালে তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক শ্রীমন্ত বাবুর নাম অনুসারে শ্রীমন্ত টাউন হল প্রতিষ্ঠা করেন। অত্র এলাকার স্থানীয় সুধী, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক কর্মী ও জ্ঞান পিপাসু ব্যাক্তিদের সাবির্ক সহযোগীতায় প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু গত ২০১১ সালে ৯৯ বছর পর তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার পাশ্ববর্তী জেলা মেহেরপুর থেকে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের ১৮/০৪/১৯৯২ তারিখের সিডি/বি বোর্ড শাখা টিসিএস এর স্মারকপত্র ও স্থানীয় সরকার পৌর-২ শাখার ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে আবুল হোসেন স্মৃতি সাধারণ গ্রন্থাগারকে (পাবলিক লাইব্রেরি) এবং শ্রীমন্ত টাউন হলকে (পাবলিক টাউন হল) দেখিয়ে উল্লেখিত আদেশের বরাত দিয়ে জেলা প্রশাসক চুয়াডাঙ্গা বরাবর উক্ত দুটি প্রতিষ্ঠান হস্তান্তরের আবেদন করেন। উক্ত আবেদনটি যাচাই-বাচাই না করে তৎকালীন জেলা প্রশাসকের পক্ষে সহকারী কমিশনার (সাধারণ শাখা) তৎকালীন নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক বরাবরে প্রতিষ্ঠান দুটি হস্তান্তর করার নির্দেশনা জারি করেন। যা ছিলো অবৈধ, বেআইনী এবং চুয়াডাঙ্গার সুধি মানুষের কাছে লজ্জাস্কর। কারণ ৯৯ বছর চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা কোনো আইনেই এটিকে নিজ সম্পত্তি দাবি করতে পারে না। সেহেতু- ১. আগামী সাত দিনের মধ্যে উক্ত প্রতিষ্ঠান দুটি তৎকালীন নির্বাচিত চুয়াডাঙ্গা জেলা আবুল হোসেন স্মৃতি সাধারণ গ্রন্থাগার ও শ্রীমন্ত টাউন হল পরিচালনা কমিটির কাছে হস্তান্তরের দাবি করছি। ২. আবুল হোসেন স্মৃতি সাধারণ গ্রন্থাগারের নামে স্থানীয় ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংক চুয়াডাঙ্গা শাখায় গচ্ছিত গত ৩০/১২/২০১১ তারিখে ১২ লাখ ২২ হাজার ৮৩৬ টাকা এবং লাইব্রেরির আসবাবপত্র, আলমারি, পাঠক টেবিল-চেয়ার এবং ২৪ হাজার মূল্যবান বই পুস্তক ও অনান্য গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র তৎকালীন নির্বাচিত কমিটির কাছে লাইব্রেরির গঠনতন্ত্রের বিধি মোতাবেক হস্তান্তরের দাবি জানাচ্ছি। চুয়াডাঙ্গার জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং এই জেলার মানুষের জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা সমুন্নত রাখতে অবিলম্বে আমাদের দাবি কার্যকর করতে হবে। তা না হলে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচী ঘোষণা করবো। যার দায়-দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনকেই বহন করতে হবে।’

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More