কলাবাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার নামিয়ে ভালাইপুর হয়ে ফেরার সময় আলমসাধু বিকল হয়ে বিপত্তি
দামুড়হুদা ব্যুরো: সড়ক দুর্ঘটনায় আহত দামুড়হুদার কিশোর আবিদ ইসলাম (১৬) মারা গেছে। নিহত কিশোর আবিদ দামুড়হুদা মাদরাসাপাড়ার আব্দুল কাদেরের ছেলে। গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে। গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে দামুড়হুদা ডিএস দাখিল মাদরাসা প্রাঙ্গণে নিহতের লাশের নামাজে জানাজা শেষে ব্র্যাকমোড়স্থ কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। গত শনিবার বিকেলে দামুড়হুদা থেকে আলমসাধুযোগে ২০টি গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে কলাবাড়ি যায়। ওখানে গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডারগুলো নামিয়ে ৫টি খালি গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে ভালাইপুর হয়ে বাড়ি ফেরার সময় পথিমধ্যে আলমসাধু বিকল হয়ে পড়লে অন্য একটি আলমসাধুর সাথে দড়ি বেঁধে সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী নিহতের সাথে থাকা প্রতিবেশী আবুল কালামের ছেলে বিপ্লব (১৮) জানান, শনিবার বিকেল ৩টার দিকে আবিদ দামুড়হুদা ব্রিজ রোডের একটি দোকান থেকে ২০টি গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে আলমসাধুযোগে কলাবাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। এসময় আবিদ আমাকে তার সাথে যেতে বলে। আমরা একই আলমসাধুতে বিষ্ণুপুর হয়ে কলাবাড়ি পৌছায়। ওখানে একটি দোকানে গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডারগুলো নামায়। এসময় দোকানদার ৫টি খালি সিলিন্ডার নিয়ে যেতে বলে। আমরা ওই ৫টি খালি সিলিন্ডার নিয়ে ভালাইপুর হয়ে বাড়ি ফেরার জন্য রওনা হই। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ভালাইপুর মোড় হয়ে চুয়াডাঙ্গা অভিমুখে আসার সময় আলমসাধুটি বিকল হয়ে যায়। ওই সময় রাস্তায় কোন যানবাহন না পেয়ে আবিদকে রেখে আমি বাড়ি ফিরে আসি। বাড়ি থেকে আমাদের আলমসাধুটি নিয়ে ভালাইপুর পৌছায় এবং বিকল আলমসাধুটি আমার আলমসাধুর সাথে দড়ি দিয়ে বেঁধে টেনে আনতে থাকি। আমরা হাফ কিলোমিটার পথ আসার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে আলুকদিয়ামোড়ে এসে আবিদ আলমসাধুর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং গাড়ি থেকে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। তার বুকে প্রচ- আঘাত লাগে। সে বমি করতে থাকে। বমির সাথে বেশকিছু রক্তও বের হয়। এসময় স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিউদ্দীন এগিয়ে আসেন এবং অ্যাম্বুলেন্স ডেকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পৌছানোর ব্যবস্থা করেন। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার এক পর্যায়ে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। রাত ১টার দিকে রাজশাহীর উদ্দেশে অ্যাম্বুলেন্স ছেড়ে যায়। অ্যাম্বুলেন্সটি ভোর সাড়ে ৪টার দিকে রাজশাহীতে পৌছায়। ওখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বেলা ১১টার দিকে মারা যায় হাসিমাখা সবার প্রিয় মুখ আবিদ। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আবিদের লাশ নিজ বাড়িতে পৌছুলে কাঁন্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকজন। মা রাশিদা খাতুন মিতাসহ পরিবারের লোকজনের কাঁন্না আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে আসে। ২ ভাইয়ের মধ্যে নিহত আবিদ ছিলেন ছোট।