মেহেরপুরের মুজিবনগরে স্বাধীনতা সড়ক পরিদর্শনকালে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম
ভারতের সঙ্গে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করবে স্বাধীনতা সড়ক
শেখ সফি: স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, মেহেরপুরের মুজিবনগর থেকে ভারতের নদীয়া হয়ে কোলকাতা পর্যন্ত ‘স্বাধীনতা সড়কটি’ ভারতের সাথে বাংলাদেশের সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করবে। যে সড়ক ধরে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল জাতীয় চার নেতা মুজিবনগরে এসে শপথ নিয়েছিলেন। জাতীয় চার নেতার সাথে এই সড়ক ধরে এসেছিলেন অসংখ্য বিদেশি সংবাদকর্মী ও মুক্তিযোদ্ধা। বাঙালি জাতির কাছে এ সড়কটির গুরুত্ব অপরিসীম। শনিবার সকাল ১১টার দিকে মেহেরপুরের মুজিবনগরে সদ্য নির্মিত স্বাধীনতা সড়ক পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন তিনি। মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ভারতের সাথে চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের অংশের ৫০০ মিটার রাস্তার কাজ আমরা শেষ করেছি। ভারতের অংশের কাজ ভারত সরকার শেষ করবে। কবে নাগাদ উদ্বোধন হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী আগামী ২৬ মার্চ বাংলাদেশে আসবেন। ২৬-২৭ মার্চ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বাধীনতা সড়কের উদ্বোধন করবেন। দু’দেশের মধ্যে এই সড়ক স্থাপনের চুক্তি অনুযায়ী আমরা আমাদের অংশের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেছি। ভারতের অংশের কাজ করবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। স্বল্প সময়ের মধ্যে এলজিআরডি কর্তৃপক্ষ নির্মাণকাজ সম্পন্ন করায় তাদের সাধুবাদ জানান মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। এর আগে এদিন বেলা ১১টার দিকে এলজিআরডি মন্ত্রীর বহনকারী হেলিকপ্টার মুজিবনগর কমপ্লেক্সের হেলিপ্যাডে অবতরণ করে। তার সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি এবং এলজিইডি প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ খান। মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীকে লাল গালিচার শুভেচ্ছা এবং গার্ড অব অনার প্রদান করে পুলিশের একটি চৌকস দল। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের শুভেচ্ছায় সিক্ত মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ মুনসুর আলম খাঁন, গাংণী সাবেক এমপি মকবুল হোসেন, পৌর মেয়ের আহম্মদ আলী, মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউদ্দীন বিশ্বাস, নির্বাহী অফিসার সুজন সরকার, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ গোলাম রসুল, পৌরমেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন,জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদকে এম এ খালেক, যুগ্নসম্পাদক এড্যভকেট ইব্রাহিম শাহিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আয়ূব হোসেন, সদস্য রফিকুল ইসলাম তোতা, মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ আমাম হোসেন মিলুসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অংগ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রথম সরকারের মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরা বৈদ্যনাথতলা তথা বর্তমান মুজিবনগর আ¤্রকাননে শপথ গ্রহণ করেন। মুজিবনগর সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালিত হয়। জাতীয় চার নেতাসহ নেতৃবৃন্দ, দেশি বিদেশি সাংবাদিক ভারত থেকে এই সড়ক দিয়ে মুজিবনগরে প্রবেশ করেছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সাথে সড়কটির নাম জড়িয়ে থাকায় তা সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয় বর্তমান সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় ভারত-বাংলাদেশের মধ্যকার চুক্তি অনুযায়ী স্বাধীনতা সড়ক দিয়ে দেশের মানুষ চলাচল করতে পারবে।