মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: মালয়েশিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে দেশটিতে ২৪ ঘণ্টার সংক্রমণের যে পরিসংখ্যান এটা আগের চেয়ে কয়েকগুন বেড়েছে। আজ রোববার ২৪ ঘণ্টায় মালয়েশিয়ায় ৩৩ হাজার ৪০৬ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৬৭ জন। বছরখানেক আগে ২৪ ঘণ্টার সংক্রমণ পাঁচ হাজারের বেশি হলেই সারাদেশে লকডাউন দিয়ে সবকিছু বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। এতে দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি চরম হুমকিতে পড়েছে। কিন্তু এবার ২৪ ঘণ্টার সংক্রমণ ৩০ হাজারের বেশি ছাড়িয়ে গেছে, যা অতীতের চেয়ে কয়েকগুন বেশি। এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় গুরুত্ব দিয়ে নতুন করে আবার লকডাউন না দিতে অনড় সরকার।
শনিবার বিকেলে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী খয়েরি জামালুদ্দিন পেটালিং জায়াতে বার্ষিক ডায়ালাইসিস কনফারেন্স ২০২২ এর ১৬তম জাতীয় কিডনি ফাউন্ডেশন চালু করার সময় বলেন, আমরা এখন সরাসরি কোভিড-১৯ সাথে বসবাস করছি। কারণ গত বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় করোনার সংক্রমণ ছিল ৩০ হাজার। এই কয়েকদিনে সংক্রমণ হ্রাসের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তবে আমরা করোনা প্রতিরোধে সফল হচ্ছি ভ্যাকসিনের মাধ্যমে, যা মহামারীর প্রথম দিকে আমার হাতে ছিল না। আমরা এখন করোনার সাথেই বসবাস করতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। তবে আমরা করোনা প্রতিরোধে অনেকটা সফল হতে চলেছি বুস্টার ডোজ গ্রহণের মাধ্যমে। যারা বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেছে তারা খুব কমই নতুন করে সংক্রমিত হচ্ছে আর সংক্রামিত হলেও কম উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। আমরা এখন করোনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে পরিকল্পনার মাধ্যমে কাজ করছি। তবে এখন সারাদেশ জুড়ে আবারো নতুন করে লকডাউন ঘোষণার পরিকল্পনা করার দরকার মনে করি না। মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা অব্যাহত রেখেই করোনা প্রতিরোধে আমরা মনোযোগ দিচ্ছি।
মন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের মূল টার্গেট হচ্ছে ৫ থেকে ১১ বছরের শিশু এবং বৃদ্ধরা যাদের এন্টিবডি কম। তাদের সবাইকে পর্যায়েক্রমে বুস্টার ডোজের আওতায় আনা হচ্ছে। তাদের সম্পর্কে আরো বেশি যত্নশীল হতে হবে। তবে যে হারে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে দেশব্যাপী ভ্যাকসিনেশনের মাধ্যমে তা প্রতিরোধ করতে সক্ষম হতে পারছি। ইতোমধ্যে ভ্যাকসিন কার্যক্রমের বুস্টার ডোজ ৭০ শতাংশ জনগণকে দেয়া হয়েছে। যার ফলস্বরূপ করোনা সংক্রমিত হয়েও মানুষ সুস্থ হয়ে উঠছে।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় করোনা মহামারীর কারণে দেশের সার্বিকভাবে অর্থনীতি, জীবন যাত্রা, ব্যবসা বাণিজ্য, মানুষের আয় রোজগার কমে গিয়ে বৈশ্বিক মন্দার কবলে পড়েছেন। সরকার এই মন্দা কাটিয়ে উঠতে নানামুখী পরিকল্পনা হাতে নিয়ে তা ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন করছে। এর পজিটিভ ফলও জাতি পেতে শুরু করেছে। তাই যেখানে করোনার ক্ষতিকর প্রভাব কাটিয়ে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টায় মগ্ন সেখানে আবারো নতুন করে লকডাউন দিয়ে বাধাগ্রস্ত করতে সরকার রাজি হচ্ছে না।