ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের চাঞ্চল্যকর সেনাসদস্য মো. সাইফুল ইসলাম সাইফ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ বুধবার। জেলা জজ বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল খুলনার আদালতে এ রায় ঘোষণা করা হবে। বিচারক মো. নজরুল ইসলাম হাওলাদার রায়ের জন্য ওই দিন ধার্য করেছেন। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- দাবি করেছেন পরিবারের সদস্যরা। এ খবর নিশ্চিত করেন ওই আদালতের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট আহাদুজ্জামান। ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে মোটরসাইকেল পাশের জেলা চুয়াডাঙ্গার বদরগঞ্জ বাজার (দশমাইল) থেকে ছোট ভাই নৌবাহিনীর করপোরাল মনিরুল ইসলাম ও শ্বশুর শামসুল মোল্লাকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে নিজ বাড়ি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামে ফিরছিলেন। পথে বেলতলাদাড়ির মাঠ নামক স্থানে রাস্তায় ব্যারিকেট সৃষ্টি করে তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে খুন করা হয় তাকে। নিহত সেনা সদস্য টাঙ্গাইল সালাউদ্দিন সেনানিবাসের মেডিকেল ট্রেনিং সেন্টারে সৈনিক পদে কর্মরত ছিলেন। এ ঘটনার একদিন আগে ঈদের ছুটিতে বাড়ি যান তিনি। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মো. হাফিজ উদ্দিন বিশ্বাস বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ১৯ আগস্ট ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। সাইফ খুনের ঘটনায় গোটা এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। কারণ ঘটনাটি ঘটে স্থানীয় (বংকিরা) পুলিশ ক্যাম্প থেকে অনুমান ১০০ গজের মধ্যে। এতে করে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে আটক করা হয়। ২০১৯ সালের ৩০ জুন ঝিনাইদহ সদর থানার তৎকালীন পরিদর্শক অপারেশন মো. মহসীন হোসেন আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেন। তারা হলো সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামের (১নং) আসামি আকিমুল ইসলাম, একই উপজেলার বোড়াই গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, চুয়াডাঙ্গা জেলার ভুলটিয়া গ্রামের মৃত সবেদ আলী মোল্লার ছেলে ডালিম মোল্লা, সদর উপজেলার আসাননগর গ্রামের নবী মোল্লার ছেলে মো. আব্বাস আলী, একই গ্রামের মৃত রমজান ম-লের ছেলে মো. আবুল কাশেম, মৃত সাহেব আলীর ছেলে মো. ফারুক হোসেন, বংকিরা গ্রামের মো. ইয়াকুব্বর ম-লের ছেলে মো. মতিয়ার রহমান ওরফে ফনে এবং সদর উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের দাউদ ম-লের ছেলে মো. মুক্তার হোসেন ওরফে মুক্তার। আসামিদের মধ্যে তিনজন এখনও পলাতক রয়েছে। তারা হলো মো. মতিয়ার রহমান ওরফে ফনে, মো. মুক্তার হোসেন ওরফে মুক্তার এবং ডালিম মোল্লা। ডালিম উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে সৌদি আরব পালিয়েছেন। নিহত সৈনিকের স্ত্রী শাম্মি আক্তার দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে মার্শাল আর্টে স্বর্ণপদকজয়ী। তিনি বলেন, ছোট ছেলে আবু হামজার বয়স এখন ৪ বছর। সে তার বাবাকে খুঁজে বেড়ায়। বড় ছেলে আবু হুরাইরার বয়স ৮ বছর। সে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। স্বামী হত্যার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন তিনি। সন্তানহারা বাবা মো. হাফিজ উদ্দিন বিশ্বাস ও নিহতের ছোট ভাই ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী মো. মনিরুল ইসলাম একই দাবি জানান। খুলনার সংশ্লিষ্ট আদালতের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট আহাদুজ্জামান জানান, মামলার তদন্তকারীসহ ২০জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন তিনি।
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ