খোকসায় একই পরিবারের পাঁচজনের করোনা শনাক্ত : নেই কোনো উপসর্গ
মাথাভাঙ্গা অনলাইন: কুষ্টিয়ার খোকসায় একই পরিবারের পাঁচজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তবে তাদের কারোর শরীরে করোনার কোনো উপসর্গ দেখা দেয়নি। মঙ্গলবার তাদের বাড়ি ও একটি বাজার লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে করোনার কোনো উপসর্গ না থাকায় পুনরায় পরীক্ষার দাবি করেন পরিবারের বাকি সদস্যরা। এই পাঁচজন হলেন- শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ মো. হাফিজুর উদ্দিন, তার স্ত্রী সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক আঞ্জুমান আরা বেগম, তাদের কন্যা শেরে বাংলা কৃষি বিশ্বদ্যালয়ের ছাত্রী মিতু, এইচএসসি পরীক্ষার্থী নিশান ও স্থানীয় সরকারী কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ঋতু।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার এসবিতে কর্মরত পুলিশের এএসআই কাজী আতাউল হোসেন করোনা পজেটিভ নিয়ে সম্প্রতি (২১এপ্রিল) উপজেলার ওসমানপুরের নিজ বাড়ি ফিরে আসেন। কুষ্টিয়া রাজবাড়ি আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে আসার পথে উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের চাচাত ভগ্নিপতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ মো. হাফিজ উদ্দিনের বাড়ির পাশের দাঁড়ায়। এ সময় ওই শিক্ষক তার এক পুত্র ও স্ত্রী নিয়ে তার সাথে দেখা করেন। রাতে তারা জানতে পারে আতাউরের শরীরে করোনা পজেটিভের বিষয়। নিজেদের উদ্যোগে হোম কোয়ারেন্টাইন শুরু করেন। বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের একটিদল পুলিশ সদস্য আতাউলের সংস্পর্শে আসা ১২ জনের নমুনা সংগ্রহ করে কুষ্টিয়া ও যশোর প্রযুক্তি বিদ্যবিদ্যালয় ল্যাবে পাঠায়। সোমবার দিনে পুলিশের পরিবারের সাত সদস্যের শরীরে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। এ দিন রাত সাড়ে ১০টার পর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে মোবাইল ফোনে শিক্ষক ও স্বাস্থ্যকর্মীর পরিবারের ৫ জনের শরীরে করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে বলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার নিশ্চিত করেন। শরীরে করোনা পজেটিভ পাওয়া প্রধান শিক্ষক শেখ মো. হাফিজ উদ্দিন জানান, তারা স্বামী-স্ত্রী ও এক সন্তানসহ তিনজন করোনা আক্রান্ত শ্যালকের সাথে নিরাপদ দূরত্ব রক্ষা করে কথা বলেছিলেন। তাদের পরিবারের পাঁচজনের কারো মধ্যে জ্বর, সর্দি, কাশিসহ করোনার কোন প্রকার লক্ষণ নেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কামরুজ্জামান জানান, সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস তাকে মোবাইল ফোনে খবরটি নিশ্চিত করেন। এরপর কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ও স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তে শিক্ষক ও স্বাস্থ্য কর্মীর বাড়ি ও পাশের একটি বাজার লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ঢাকায় এসবিতে কর্মরত পুলিশের এএসআই আতাউল অসুস্থ হয়ে মঙ্গলবার রাতে উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। রাতেই মোবাইলের খুদে বার্তায় জানতে পারেন তার শরীরে করোনাভাইরাস পজেটিভ পাওয়া গেছে। পরে বিষয়টি স্থানীয় থানা পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের জানান তিনি।