স্টাফ রিপোর্টার: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুল প্রতীক্ষিত করোনা ভ্যাকসিন (টিকা) আসছে অক্টোবর-নভেম্বরেই। এমনটা জানিয়েছে অক্সফোর্ডের টিকা তৈরির দায়িত্ব পাওয়া ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। এদিকে ভারতের ৭ গবেষণাগারে চলছে করোনার টিকা তৈরির কাজ। ফাইজার ও বায়ো এন টেকের সম্ভাব্য করোনা টিকার ৬০ কোটি ডোজ পেতে চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল শুক্রবার এক ভিডিও কনফারেন্সে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কে সেরামের সিইও আদার পুনাওয়ালা বলেন, এ বছরের শেষেই করোনা টিকা তৈরি হয়ে যাবে। আশা করছি অক্টোবর-নভেম্বরেই। আর টিকার আগামী ট্রায়াল ভারতে আগামী মাসের মাঝামাঝি শুরু হবে।
তিনি বলেন, এজন্য আগ্রহী স্বেচ্ছাসেবকের স্বাস্থ্যের অবস্থা খতিয়ে দেখে তাদের নমুনা দিল্লির একটি নির্দিষ্ট ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হচ্ছে। রিপোর্ট এসে গেলে নির্দিষ্ট কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবকের ওপর নির্দেশিকা মেনে করোনা টিকার পরীক্ষা হবে। টিকা তৈরি হয়ে গেলে এবং তা ছাড়পত্র পেয়ে গেলে ওড়িশা সরকার ও সেরাম ইনস্টিটিউট এ ব্যাপারে চুক্তিবদ্ধ হতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, আদার পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, ভারতের সাধারণ মানুষকে বিনামূল্যে এ করোনার টিকা দেয়া হবে।
এদিকে ভারতের সাতটি সংস্থা ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে রয়েছে। এসব সংস্থার মধ্যে রয়েছে- ভারত বায়োটেক, সিরাম ইনস্টিটিউট, জাইডাস ক্যাডিলা, পানাসিয়া বায়োটেক, ইন্ডিয়ান ইমিউনোলজিক্যালস, মাইনভ্যাক্স ও বায়োলজিক্যালই। এরমধ্যে ‘ভারত বায়োটেক’ হায়দরাবাদের বিখ্যাত কোম্পানি। করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দৌড়ে তারাই সবার আগে। গত সপ্তাহ থেকেই তাদের তৈরি কো-ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়াল শুরু হয়েছে।
সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেটের ফেজ থ্রি ট্রায়ালের প্রস্তুতি চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগস্টের মধ্যেই শুরু হবে এর হিউম্যান ট্রায়াল। ‘জাইড্যাস ক্যাডিলা’ কোম্পানির প্রধান জানিয়েছেন, আগামী ৭ মাসের মধ্যে তাদের করোনা ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়াল সম্পন্ন হবে। ‘পানাসিয়া বায়োটেক’র তৈরি করোনার প্রতিষেধকের এখনও নামকরণ করা হয়নি। এ সংস্থা আয়ারল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে ভ্যাকসিন আবিষ্কারে নেমেছে। ‘ইন্ডিয়ান ইমিউনোলজিক্যালস’ জাতীয় দুগ্ধ উন্নয়ন বোর্ডের একটি সহায়ক সংস্থা। এ কোম্পানিটি অস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ রয়েছে। তারা যৌথ উদ্যোগে করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কারের চেষ্টা চালাচ্ছে। ‘মাইনভ্যাক্স’ সংস্থাটি করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কারে নিরলসভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আগামী ১৮ মাসের মধ্যে মাইনভ্যাক্সের তৈরি করোনার ভ্যাকসিন বাজারে আসবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। ‘বায়োলজিক্যাল-ই’ এর তৈরি ভ্যাকসিনও বর্তমানে প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে রয়েছে।
৬০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন পেতে চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের: মার্কিন ওষুধ কোম্পানি ফাইজার ও জার্মান জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বায়ো এন টেকের ভ্যাকসিনের ৬০ কোটি ডোজ পেতে চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তি অনুযায়ী ভ্যাকসিনটি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেলে যুক্তরাষ্ট্র প্রাথমিকভাবে ১০ কোটি ডোজ পাবে। চুক্তিতে দুটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি ৫০ কোটি ডোজ কেনার সুযোগ রয়েছে।
চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র নোভাভাক্সর সঙ্গে ১০ কোটি ডোজ পেতে ১৬০ কোটি ডলারের চুক্তি করেছে। এর আগে মে মাসে অক্সফোর্ড-আস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন পেতে তাদের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের চুক্তি করেছে। এছাড়াও জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাকসিনের জন্য ৪৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার এবং মডার্নার সঙ্গে ৪৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার ও ইমার্জেন্ট বায়োসলিউশনের সঙ্গে ৬২ কোটি ৮০ লাখ ডলারের চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
পূর্ববর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ