সয়াবিন তেলের দাম আবারও বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এর আগে সর্বশেষ চলতি মাসের প্রথমদিকে তেলের দাম বাড়ানো হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার পর রোববার নতুন করে স্থানীয় বাজারে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। নতুন দাম কার্যকর হলে খুচরা বাজারে গ্রাহকদের বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেল কিনতে হবে ১৮০ টাকায়। বাজারে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, মাছ-মাংস, আটা-ময়দা, সবজিসহ সব ধরনের খাদ্যের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। মনে হচ্ছে, বাজারে কর্তৃপক্ষের কোনো নিয়ন্ত্রণ বা নজরদারি নেই। চালের উৎপাদন, বিপণন, মজুত ও আমদানি-সবকিছুতেই এবার রেকর্ড হয়েছে। ফলে অন্তত জুন পর্যন্ত চাহিদার তুলনায় চাল উদ্বৃত্ত থাকবে। স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, উদ্বৃত্ত থাকা সত্ত্বেও চালের দাম ক্রমাগত বাড়ছে কেন? বোঝা যাচ্ছে, বাজারে কারসাজি চলছে। কারসাজি শুধু চালের বাজারে নয়, রমজানে যেসব পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে, সেসব খাদ্যপণ্যও চলে গেছে সিন্ডিকেটের কব্জায়।
এদিকে পেঁয়াজের বাজারে হঠাৎ করে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। কখনো কখনো কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে নানা অজুহাতে দাম বাড়ানো হয় প্রতিটি নিত্যপণ্যের। অতীতে লক্ষ করা গেছে, দেশে সয়াবিনের তুলনায় পাম অয়েল আমদানি হয় বেশি। অথচ বাজারে পাম অয়েল তেমন দেখা যায় না, সিংহভাগই সয়াবিন তেল। বস্তুত অধিকাংশ পাম অয়েল বিক্রি হয় সয়াবিনের নামে। একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সয়াবিনের সঙ্গে পাম অয়েল মিশিয়ে সয়াবিন তেল নামে বিক্রি করছে। লাফিয়ে লাফিয়ে ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধির ফলে চরম বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। কিছুদিন আগেই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এতে জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন ব্যয় বাড়ছে, কিন্তু সে তুলনায় মানুষের আয় বাড়ছে না। প্রতিবছর ভোজ্যতেল আমদানি বাবদ বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়। অথচ সরিষার তেল হতে পারে আমাদের অন্যতম বিকল্প ভোজ্যতেল। দেশে সরিষার চাষাবাদ জনপ্রিয় করার জন্য কৃষক পর্যায়ে স্বল্প সুদে ঋণ বিতরণ করা গেলে একদিকে কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন, অন্যদিকে সরিষা চাষেও তারা উৎসাহিত হবেন। এতে ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমবে। আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম উর্ধ্বমুখী, এ অবস্থায় সরিষা, সূর্যমুখী ইত্যাদি বিকল্প ভোজ্যতেলের উৎপাদনে গুরুত্ব বাড়ানো জরুরি।
পূর্ববর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ