আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে যেতে প্রতিবেশী ও আঞ্চলিক দেশগুলোর মধ্য সহযোগিতা ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি। এক্ষেত্রে বলা দরকার, বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারত। ফলে দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ বজায় রাখার মধ্যদিয়ে সম্পর্কের উন্নয়নে উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে এমনটি কাম্য। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের বিষয়টি সামনে এসেছে। এছাড়া তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে বৈঠকে। আমরা মনে করি, সমঝোতা স্মারকসহ দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থরক্ষা এবং সমৃদ্ধির লক্ষ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট রাখতে হবে। এছাড়া দুই দেশের মধ্যকার যেসব বিষয় ইস্যু আছে সেগুলোর সমাধানে কাজ করতে হবে। এর মধ্যদিয়ে সম্পর্ক আরো উন্নীত হবে বলেই প্রতীয়মান হয়।
জি-২০ সম্মেলন উপলক্ষে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি পৌঁছান। উল্লেখ্য যে, যে তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে তা হলো, কৃষি গবেষণায় সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক বিনিময় ও দুই দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে আর্থিক লেনদেন সহজীকরণ।
আমরা মনে করি, চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের যেমন উদ্যোগী হতে হবে, তেমনিভাবে দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের কাজ করতে হবে। তিস্তা চুক্তি, সীমান্ত হত্যাসহ সামগ্রিক বিষয়গুলো নিয়েও দুই দেশের সংশ্লিষ্টরা কাজ করবে এমনটি কাম্য। কেননা, এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, দুই দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে এসব বিষয়গুলোর সুষ্ঠু সমাধান জরুরি।
এ কথাও বলা দরকার, সীমান্তে হত্যাকা-, নির্যাতনসহ বিভিন্ন ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা সন্দেহাতীতভাবেই অত্যন্ত উদ্বেগজনক। অথচ বহু দেনদরবার, আলাপ-আলোচনা, সমঝোতা এবং প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও সীমান্ত হত্যা যেমন বন্ধ হয়নি, তেমনি ঘটছে নির্যাতনের ঘটনাও। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা কমিয়ে আনতে নেয়া হয়েছে অনেক উদ্যোগ। মিলেছে আশ্বাসও। কিন্তু এরপরেও একের পর এক সীমান্ত হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বাংলাদেশিরা। ফলে সামগ্রিকভাবে এই বিষয়গুলোর দিকেও সংশ্লিষ্টদের নজর দিতে হবে এবং দুই দেশের সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে সামগ্রিক পরিস্থিতির উন্নয়নে কাজ করতে হবে।
স্মর্তব্য, এর আগে সীমান্তে প্রাণহানির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন এবং দুইপক্ষ সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার বিষয়েও সম্মত হয়েছিলেন। ফলে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, সীমান্ত হত্যা বন্ধে যথাযথ উদ্যোগ অব্যাহত রাখা এবং সব ধরনের প্রচেষ্টা বজায় রাখা। এটাও বলা দরকার, বন্ধুপ্রতিম দেশের সঙ্গে সম্পর্কে এগিয়ে নিতে পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষা করা যেমন জরুরি তেমনি বিভিন্ন ইস্যুগুলোর সমাধানের বিকল্প নেই। ফলে দুই দেশের সংশ্লিষ্টরা সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সামগ্রিক বিষয় পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে যথাযথ উদ্যোগ অব্যাহত রাখবে এমনটি প্রত্যাশিত।
সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, কৃষি গবেষণা ও সাংস্কৃতিক চুক্তির মেয়াদ ২০২৩ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে, এর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন হোক। দুই দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে আর্থিক লেনদেনও সহজ হোক। একইসঙ্গে দুই দেশের স্বার্থরক্ষা, তিস্তা, সীমান্ত হত্যাসহ সামগ্রিক বিষয়গুলো আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করুক। বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র ভারত, ফলে বন্ধুত্বপূর্ণ এই সম্পর্কে আরও বেশি দৃঢ় করতে দুই দেশের সংশ্লিষ্টরা সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে গ্রহণযোগ্য ও কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।