সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা সময় ও অর্থের সাশ্রয়

দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থ ও দাবি এবং অভিভাবকদের অসহনীয় ভোগান্তির বিষয়টি বিবেচনা করে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথমবর্ষে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তির কার্যক্রম কঠোরভাবে মেনে চলার জন্য সংশ্লিষ্ট সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আবারও চিঠি দিয়ে নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যুগ্ম সচিবের স্বাক্ষরে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে একই ধরনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছিলো।
উল্লেখ্য, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে দেশের ২৪টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছভুক্ত হয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষে (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষা নিয়েছিলো। কিন্তু এবারে অন্তত ৭টি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে এসে নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরিচালনার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। কেউ কেউ এমনকি ভর্তি বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছে গণমাধ্যমে। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে এখনো দোদুল্যমান। এ অবস্থায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশটি একটি দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে অবশ্যই।
উল্লেখ্য, আগামী ২৫ এপ্রিল গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হবে ভর্তি পরীক্ষা। তবে মোট কয়টি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছভুক্ত হয়ে পরীক্ষা নেবে তা চূড়ান্ত হয়নি এখনো। চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রায় ৫ লাখ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি এবং খরচ কমাতে অন্যতম উপায় হতে পারে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ। সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মানবিক বিবেচনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ আমলে নিয়ে গুচ্ছভুক্ত ভর্তি কার্যক্রম যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করবে বলেই প্রত্যাশা।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের ভর্তি এক নিয়মিত বিড়ম্বনায় পর্যবসিত হয়েছে। এর ফলে মেধাবী শিক্ষার্থীদের যেমন দুশ্চিন্তা প্রবল হয়, অন্যদিকে অভিভাবকদের সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় ভর্তি নিয়ে শুরু হয় বিপুল অর্থব্যয়সহ সমূহ দুর্ভাবনা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থান। সে অবস্থায় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার সমূহ ঝুঁকি নিয়ে ছুটে বেড়ানো, সেই সঙ্গে অভিভাবকদের বিপুল ব্যয়- সব মিলিয়ে দুর্ভোগ সহজেই অনুমেয়। আর ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী যদি হন নারী, তাহলে তা বোঝার ওপর শাকের আঁটি। কেননা, কোনো অভিভাবক ছেলেকে একা ছাড়তে রাজি হলেও মেয়েকে একা পাঠাতে ঝুঁকি নেবেন না কোনো অবস্থাতেই। সে অবস্থায় শিক্ষার্থীদের অহেতুক ছোটাছুটি, বিড়ম্বনা ও ব্যয় সাশ্রয়ে আমরা আশা করবো, সংশ্লিষ্ট উপাচার্যগণ শুধু অর্থ ও স্বার্থের দিকটি বিবেচনা না করে, লাখ লাখ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সমূহ দুশ্চিন্তা ও দুর্ভোগের বিষয়টির প্রতি সমধিক গুরুত্ব দেবেন। এক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্টস কমিশন ইউজিসিরও বিষয়টি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা বাঞ্ছনীয়। ইতোমধ্যে মেডিক্যাল ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। পাশের দেশ ভারতেও সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার মডেল বেশ কার্যকর। এতে শিক্ষার্থীদের সময় ও অর্থের সাশ্রয় হবে। ভোগান্তি কমে আসবে বহুলাংশে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More