সংস্কার প্রস্তাব ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্ধারণ করতে হবে

সংস্কার কমিশনগুলোর প্রতিবেদন প্রস্তুত হওয়ার পর সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের প্রশ্নটি সামনে চলে এসেছে। সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার মাধ্যমে শেষ ঠিকানায় পৌঁছুনো যাবে বলা ধারণা করা হচ্ছে। সরকারের সঙ্গে বসার আগে রাজনৈতিক দলগুলো দলীয় ফোরামে সংস্কারের প্রস্তাবগুলো নিয়ে আলোচনা করবে বলা হচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, প্রস্তাবগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে পাওয়ার পর আলোচনা হবে। ওদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, এখন তো কেবল সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলো এসেছে, এটাই চূড়ান্ত নয়।
প্রস্তাবগুলোর কোনটা গ্রহণ বা বাস্তবায়ন করা হবে, রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে সরকারের আলোচনার পর তা ঠিক হবে। আবার নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার মত হচ্ছে, সংবিধান সংশোধনের বিষয়টি নির্বাচিত সরকারের হাতে ছেড়ে দেয়াই ভালো। কমিশনের কিছু প্রস্তাব জটিলতা তৈরি করবে বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।
প্রকৃতপক্ষে, গত স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের পতনের পর দেশ কীভাবে চলবে, সে বিষয়ে জাতীয় ঐক্যের প্রশ্নটি খুব গুরুত্ব পাচ্ছে। আমাদের সংবিধান কেমন হওয়া উচিত, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান কীভাবে চলবে, আইনের শাসন কীভাবে প্রতিষ্ঠা করা যাবে, সত্যিকার অর্থেই জনপ্রতিনিধি নির্বাচন প্রক্রিয়া কীভাবে ত্রুটিমুক্ত করা যায়, এসব বিষয় খুব গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হচ্ছে। এ লক্ষ্যেই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কয়েকটি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে এবং আমরা জানলাম যে, গুরুত্বপূর্ণ কমিশনগুলো তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রশ্ন হলো, কোন কোন প্রস্তাব গ্রহণ করা উচিত, সে ব্যাপারে কি রাজনৈতিক দল ও স্টেকহোল্ডাররা ঐকমত্যে পৌঁছুতে পারবে? আমরা সেই পুরোনো কথাটার পুনরুল্লেখ করবো: ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে বড় দেশ। কোনো রাজনৈতিক দল যদি তার দলীয় স্বার্থে প্রস্তাব বাছাই করে, তাহলে তা হবে দুঃখজনক। প্রস্তাবগুলো থেকে বাছাই বা প্রস্তাব যুক্ত করার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে দেশপ্রেমের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখতে হবে। আরেকটি গুরুপূর্ণ বিষয় হলো, গৃহীত প্রস্তাবগুলো আগামী নির্বাচিত সংসদ যেন অনুমোদন করতে পারে, সে ব্যাপারেও ঐকমত্য থাকতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য থাকতেই পারে, এই মতপার্থক্যই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু মতপার্থক্য সত্ত্বেও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিগুলোর বিষয়ে সবাই একমত হলে আগামী দিনে আমরা একটি সুন্দর বাংলাদেশ দেখতে পাব।
ফেব্রুয়ারিতেই সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা প্রতিষ্ঠা হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। তা না হলে দেশ বড় ধরনের রাজনৈতিক সংকটে পড়বে বলে আশঙ্কা থাকবে। আমরা কেউই চাই না সমাজে অস্থিরতা বিরাজ করুক। শান্তিপ্রিয় সব নাগরিকের প্রত্যাশা, দেশ একটি স্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More