ভোজ্য তেল, চিনিসহ আরও কয়েকটি নিত্যপণ্য আমদানিতে ভ্যাট তুলে নিয়েছে সরকার। ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতির লাগাম টানতেই সরকারের এই সিদ্ধান্ত। সরকারের ভ্যাট প্রত্যাহারের এ সিদ্ধান্তে ভোজ্য তেল লিটার প্রতি ২৫ থেকে ৩০ টাকা কমে আসবে বলে আশা করছে সরকার। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল গতকাল বৃহস্পতিবার ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন। এছাড়াও সারাদেশের কম আয়ের এক কোটি পরিবারকে টিসিবির মাধ্যমে পণ্য পৌঁছে দিতে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিসিবির কার্যক্রম স¤প্রসারণ করা হচ্ছে। বিষয়গুলো খুবই ইতিবাচক। তেলের বাজারের এই লাগামহীন অবস্থার সঠিক কারণ কী, তার কোনো যৌক্তিক কারণ ও ব্যাখ্যা না থাকলেও নানা কারসাজি আর বৈশ্বিক পরিস্থিতিকে দায়ী করা হচ্ছে। রমজান মাসকে সামনে রেখে বিগত বছরগুলোতে একটু আগে থেকে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার যে কালচার শুরু হয়েছে, এবারের ঘটনাও তার পুনরাবৃত্তি। কাজেই সরকারের ভ্যাট কমানোর সিদ্ধান্তে জনগণ ঠিক কতোটা লাভবান হবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েই যাচ্ছে।
টিসিবি তথ্যমতে, ২০২০ সালে ফেব্রæয়ারির তুলনায় এবছর ফেব্রæয়ারিতে মোটা চালের দাম ৩২ শতাংশ, সরু চাল ২৮, বোতলজাত সয়াবিন তেল ৫৫, খোলা সয়াবিন তেল ৮২, মোটা দানার মসুর ডাল ৬৩, চিনি ৩২, ব্রয়লার মুরগি ২১, খোলা আটা ২২ ও এলপি গ্যাসের দাম ১৮ শতাংশ করে বেড়েছে। আর এই মার্চ মাসের শুরুতে সবকিছুর দাম আরও বেড়েছে।
কিছুদিন বন্ধ রাখার পরে টিসিবি কর্তৃপ¶ আবারও ট্রাকে ও নির্দিষ্ট স্পটে পণ্য বিক্রি শুরু করেছে। তবে শুরু করার পর থেকেই নানা ঘটনা আর অনিয়মের অভিযোগ আসতে শুরু করেছে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে টিসিবি’র ট্রাকের সামনে পণ্য সংগ্রহের প্রতিযোগিতা ও সংঘর্ষ যেন নিয়মিত ঘটনা। আবার টানা পাঁচদিন ধরে লাইনে দাঁড়িয়েও পণ্য না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। সাধারণ মানুষ বলছেন, এরপরও নিয়মের ধার ধারছে না টিসিবি কর্তৃপ¶। রমজান মাসে খাদ্য পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়, আর দামও বাড়ে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতির মধ্যে রমজান মাসের চাপে বড় কোনো সমস্যা সৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, ভোক্তা অধিকার কর্তৃপ¶ এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কার্যকর তদারকিসহ পদ¶েপ নেবেন বলে আমাদের আশাবাদ।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ