ব্যালট যুগে ফিরছে ইসি : সুষ্ঠু নির্বাচন কাম্য

সম্পাদকীয়

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে নির্বাচন কমিশন। ৩০০ আসনেই ভোট হবে কাগজের ব্যালটে। সোমবার নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভা শেষে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব সাংবাদিকদের বৈঠকের সিদ্ধান্তের কথা জানান। ভোটের অন্তত সাত মাস আগে ইভিএম থেকে সরে এলো নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কমিশনের মতে, যেহেতু সব মেশিন রিফারবিশম্যান্ট করে নির্বাচন উপযোগী করার মতো পর্যাপ্ত অর্থ নির্বাচন কমিশনের হাতে এই মুহূর্তে নেই এবং এগুলো অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ বিষয়। সময়স্বল্পতা এবং অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ পাওয়ার নিশ্চয়তা না পাওয়া এবং রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে যে ঐক্যমত্যের অভাব রয়েছে। ইভিএমের ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক থাকলেও আগামী নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ইভিএমে ভোট নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইসি। এ জন্য নতুন ২ লাখ ইভিএম কিনতে ৮ হাজার ৭১১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ওই প্রকল্প আপাতত স্থগিত রাখা হয়। তা ছাড়া ইভিএম মেরামতের জন্য প্রায় ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা প্রয়োজন। সেই টাকা অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় এই টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছে। যেহেতু সব ইভিএমই মেরামত করতে হবে সে পরিমাণ অর্থ নির্বাচন কমিশনের কাছে নেই। এ ছাড়া এটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এর সঙ্গে হয়তো কাজ করেছে রাজনৈতিক অনৈক্য। যদিও ইসির এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ডিজিটাল বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও ভালো নির্বাচনের জন্য ইভিএমে ভোট নেয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল আওয়ামী লীগ। বিভিন্ন নির্বাচনের মাধ্যমে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, দ্রুত ভোটগ্রহণ ও ফলাফল পাওয়া যায় ইভিএমে। ব্যালট পেপার চুরি, ছিনতাই, ছিঁড়ে ফেলা, নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। সেজন্য ইভিএমে ভোটের পক্ষে আওয়ামী লীগ। অবশ্য বিএনপির মতামত ভিন্ন। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের এ ব্যাপারে কোনো আগ্রহ নেই। শুধু টাকার কারণেই জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম থেকে সরে আসা, নাকি অন্য কোনো কারণ এ ধরনের প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়। আমরা মনে করি, নির্বাচন যেভাবেই হোক, নির্বাচন হতে হবে অবাধ ও নিরপেক্ষ। তা ছাড়া দেশের রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের ব্যাপারে এখনো ঐকমত্য পোষণ করতে পারেনি। দুটি প্রধান দলের মতামত দু’রকম। এমন পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া কঠিন। এই কঠিন কাজটিই নির্বাচন কমিশনকে করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে সব দলের অংশগ্রহণ। এর কোনো বিকল্প নেই।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More