বর্তমানে দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়েই চলেছে। অর্থনীতির স্বাভাবিক নিয়মে সাধারণত মুদ্রাস্ফীতি হলে, চাহিদা বেড়ে জোগান কম হলে দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়। কিন্তু দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য কোনো যৌক্তিক কারণ বেশির ভাগ সময় খুঁজে পাওয়া কঠিন। ভোজ্যতেল, আটার দামের পরে বর্তমানে চালের ভরা মরসুমে চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে। বিষয়টি নজরে এসেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। ভরা মরসুমেও দেশের বাজারে চালের দাম বেশি কেন? এমন প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কারো কারসাজির কারণে যদি দাম বেশি হয়, তাহলে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সরাসরি অংশ নেন তিনি বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শুধু তাই নয়, কেউ অবৈধভাবে চাল মজুদ করে সংকট সৃষ্টি করছে কিনা-তা দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
করোনা মহামারী চলাকালীন শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষের আয় উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বছরের পরে বছর স্বাভাবিক সুযোগ-সুবিধা বন্ধ রেখেছে। কিন্তু অন্যদিকে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি থেকে শুরু করে সার্বিক স্ফীতি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষজন। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।
রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতির ফলে পুরো বিশ্বের আমদানি-রপ্তানি নির্ভর অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত। সম্প্রতি চরম অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে শ্রীলঙ্কা ও লেবাননের সরকার দেশটিকে দেউলিয়া ঘোষণা করেছে। বৈদেশিক ঋণ আর নিত্যপণ্যের আমদানি অর্থ মেটাতে না পেরে দেশগুলোর সাধারণ মানুষ মানবেতন জীবনযাপন করছে। এই পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে সাবধান হতে শুরু করেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।
আমাদের দেশেও আমদানি প্রবণতা কমাতে এবং দেশীয় পণ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ৬৮ ধরনের পণ্যের ওপর বাড়তি আমদানি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া দেশের কৃষিখাতে বিশেষ নজর দেয়ার বার্তা এসেছে সরকারের পক্ষ থেকে। যা বেশ ইতিবাচক বলে আমরা মনে করি। তবে এর পাশাপাশি বাজারে মজুতদারি ও নানা ধরণের কারসাজি বন্ধ করতে শক্ত হস্তক্ষেপ জরুরি।