দৈনিক মাথাভাঙ্গা পরিবারের আজ শোকের দিন। নভেম্বর মাসটাই মূলত শোকের। ২০১২ সালের আজকের দিনে মৃত্যুবরণ করেন সাইফুল ইসলাম পিনু। তিনি দৈনিক মাথাভাঙ্গার অগ্রযাত্রার পথিকৃৎই শুধু নন, আদর্শও। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে দীর্ঘদিন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুর দিনেও ছিলেন তিনি দৈনিক মাথাভাঙ্গার প্রধান সম্পাদক। একই মাসে এক বছর আগে মারা যান সাইফুল ইসলাম পিনুর পত্মী। আজ থেকে দু’বছর আগে এ মাসেই মৃত্যুবরণ করেন দৈনিক মাথাভাঙ্গা প্রকাশক মুদ্রাকর তথা প্রতিষ্ঠাতা সরদার আল আমিনের মা। যার উৎসাহ আর গচ্ছিত অর্থেই মাথাভাঙ্গা পরিবার খুঁজে পায় সাহস, যাত্রা হয় তরান্বিত। এসব মানুষ যে মাসে চলে গেছেন সে মাস কি মাথাভাঙ্গা পরিবারের জন্য শোকের মাস নয়? প্রয়াত সকলের জন্য সকলের নিকট দোয়া কামনা। অনুষ্ঠানিকতার চেয়ে মন থেকে দোয়া করাই উত্তম।
দৈনিক মাথাভাঙ্গার চলার পথে অসংখ্য গুণী মানুষ পাথেয়। ১৯৯১ সাল। তখন দেশে প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকার। পত্রিকা প্রকাশের ছাড়পত্র পাওয়ার শর্তে শিথিলতা স্বপ্নের বীজ বোনে। হামিদুল হক মুন্সীকে সম্পাদক করে ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য স্বত্বাধিকারী প্রকাশক মুদ্রাকর সরদার আল আমিন আবেদন করেন। ২৬ মার্চ প্রস্তাবিত সংখ্যাও প্রকাশ পায়। সম্পাদক হওয়ার শর্তে সমস্যা দেখা দিলে পদটি যে মানুষটির পূরণ করতে সামনে এসে দাঁড়ান তিনিই সাইফুল ইসলাম পিনু। তখন তিনি দ্বিতীয়বারের মতো চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। জনপ্রিয়তার শীর্ষে তথা গণমানুষের অকৃত্রিম বন্ধু সাইফুল ইসলাম পিনুর সততা এবং ন্যায় নিষ্ঠা মাথাভাঙ্গা পরিবারকে শুধু অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেই শেখায়নি, সমাজ থেকে কুসংস্কার দূর করার কাজে নিজেদের কিভাবে যুদ্ধ করতে হয় তাও শিখিয়েছেন। সাইফুল ইসলাম পিনু একটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব পালন করলেও কোনোভাবেই তিনি দলীয় সংকীর্ণতায় পত্রিকাকে আবদ্ধ হতে দেননি যেমন, তেমনই তাঁবেদারি থেকে দূরে থেকে সত্য প্রকাশের মাধ্যমে পাঠকের প্রত্যাশা পূরণ কতোটা গুরুত্বপূর্ণ তাও তিনিই শিখিয়েছেন। তার আদর্শেই তিনি বেঁচে আছেন মাথাভাঙ্গা পরিবারে।
সাইফুল ইসলাম পিনু এমনই একজন মানুষ ছিলেন, তার কীর্তি বর্ণনা স্বল্প পরিসরে অসম্ভব। তিনি ছিলেন মুক্ত আকাশের মতো বিশাল। যার বুকে ঘোরা যেতো, ওড়া যেতো মুক্ত বিহঙ্গের মতো। কর্মে ছিলো সৃষ্টিশীলতা। মুক্তমনের সৃষ্টিশীল মানুষের আদর্শ লালন করে দৈনিক মাথাভাঙ্গা পরিবার। সাইফুল ইসলাম পিনুর পত্মীও ছিলেন সকলকে আগলে রাখা গুণী নারী। মাথাভাঙ্গা প্রতিকার প্রতিষ্ঠাতার মা ছিলেন সত্যিকারের মা। মাথাভাঙ্গা পরিবারের আরও অনেকেই চলে গেছেন না ফেরার দেশে। সকলকেই মাথাভাঙ্গা পরিবার মনে রেখে সুন্দর সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখে। সকল পাঠক, শুভানুধ্যায়ী মাথাভাঙ্গা পরিবারভুক্ত, পাঠককূল-ই পাথেয়। মাথাভাঙ্গা পরিবার সকলের অকৃত্রিম সহযোগিতা সব সময় আশা করে। যাদের অবদানে মাথাভাঙ্গা পরিবার পূর্ণতা পেয়েছে তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আবারও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ