দেশে সোনার চোরাচালান এক ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। কিছুতেই এই চোরাচালান রোধ করা যাচ্ছে না। যাদের এই চোরাচালান রোধ করার দায়িত্ব তারাও অবলীলায় জড়িয়ে পড়ছে এ চক্রের সাথে। এর আগে চোরাচালানের সাথে জড়িত এমন চক্রের সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দারা। গত কয়েক দিন ধরে সীমান্তবর্তী এলাকায় বিপুল পরিমাণে সোনার চালান আটক করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ফুলবাড়ি সীমান্ত থেকে কোটি টাকা মূল্যের সোনার ১৩টি বার উদ্ধার করেছে বিজিবি। এছাড়া বুধবার দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত থেকে ২৪টি স্বর্ণের বারসহ ৫ বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রীকে আটক করা হয়। ১৮ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে যশোরের ঝিকরগাছায় সাড়ে ১২ কেজি ওজনের ১০৬ পিস, ১৭ অক্টোবর বেনাপোলে চার পিস, ১৬ অক্টোবর সাতক্ষীরায় ৫০৬ গ্রাম ওজনের চারটি, ১৪ অক্টোবর যশোরের শার্শায় ৪৩ পিস, ১১ অক্টোবর বেনাপোলে চার পিস ২৬ সেপ্টেম্বর চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে চারটি, ১৫ সেপ্টেম্বর দামুড়হুদায় ৯ কেজি ৮৬০ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে সোনার বার। টহল পুলিশের তল্লাশিতে দামি গাড়িতেও পাওয়া যাচ্ছে সোনার বার। দেশের সীমান্ত এলাকায়ও ধরা পড়ছে সোনার চোরাচালান। এই ঘটনায় এটাই প্রমাণিত হয় যে চোরাচালানকৃত সোনাই দেশীয় চাহিদা মেটাচ্ছে। তাছাড়া বাংলাদেশ যে সোনা চোরাচালানের নিরাপদ রুট এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়। এখান থেকে ভারতে সোনা পাচার করা হয়; আর সোনা আনা হয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে। এই ধরনের সোনার চালান যে প্রায় প্রতিদিনই মধ্যপ্রাচ্য থেকে বাংলাদেশে আসছে এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। যখন ধরা পড়ে তখন চারদিকে হইচই পড়ে যায় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তৎপর হয়ে ওঠে। মোটরসাইকেলে, জুতোয়, মানিব্যাগে, লাগেজে, হ্যাঙ্গার গেটে, বের্ডি ব্রিজ সর্বত্রই পাওয়া যাচ্ছে সোনার বার। এ সব ঘটনা থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, বাংলাদেশকে যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে চোরাচালানের নিরাপদ রুট হিসেবে। এর সাথে আন্তর্জাতিক চোরাচালানি চক্রও কাজ করছে। যা বাংলাদেশের জন্য বিপজ্জনক। সোনা মূল্যবান জিনিস হওয়ায় একশ্রেণির মানুষের সোনার প্রতি ঝোঁক ও লোভ দুটোই অতিমাত্রায় বেড়ে গেছে। যারা এই চোরাচালানের সাথে জড়িত তারা রাতারাতি ধনী হতে চায়। কিন্তু তারা আজ দেশ ও জাতির শত্রু। এর ফলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি মারাত্মভাবে ক্ষুণœ হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যাদের ওপর চোরাচালান রোধের দায়িত্ব তারা যদি এর সাথে জড়িয়ে পড়ে তাহলে কীভাবে এটা রোধ করা সম্ভব। এমন ঘটনা যে প্রায়ই ঘটছে না এর প্রমাণ কী? আমরা মনে করি এ পরিস্থিতি দেশের জন্য খুবই উদ্বেগজনক। এ অবস্থার দ্রুত অবসান হওয়া জরুরি। আমরা চাই, দেশ থেকে চোরাচালান একেবারেই বন্ধ হোক। সে জন্য সক্রিয় হতে হবে সরকারকেই এবং এর কোনো বিকল্প নেই।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ