চিহ্নিত ৭০ অর্থ পাচারকারী : আইনের আওতায় আনতে হবে

বিগত সরকারের আমলে দেশ থেকে নানাভাবে অর্থ পাচার হয়েছে। আশার কথা, দুবাইয়ে বিপুল অঙ্কের অর্থ পাচারকারী হিসাবে ৭০ ভিআইপিকে চিহ্নিত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের কর শনাক্তকরণ নম্বরসহ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে চিঠি পাঠিয়েছে দুদক। চিহ্নিত ব্যক্তিদের মধ্যে আওয়ামী লীগের দোসর ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতাদের নাম রয়েছে, যদিও চিঠিতে তাদের পদ বা বিস্তারিত পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি। চিঠিতে বলা হয়েছে, মোট ৪৫৯ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের অর্থ সুইস ব্যাংকসহ বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে পাচার করে পরে তা দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা সুবিধায় ৯৭২টি প্রপার্টি কেনার অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এসব সম্পদের মূল্য প্রায় ৩১৫ মিলিয়ন ডলার। গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযোগের অনুসন্ধানে নেমে ওই ৭০ অর্থ পাচারকারীকে চিহ্নিত করেছে দুদক। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজ ২০২২ সালের মে মাসে তাদের গবেষণা প্রতিবেদনে উপসাগরীয় দেশগুলোয় পাচার করা অর্থ দিয়ে বাংলাদেশিদের আবাসন সম্পদ কেনার বিষয়টি তুলে ধরেছিল। দুবাইয়ে অর্থ পাচারকারীদের একটি অংশকে শনাক্ত করা সম্ভব হওয়ায় আরও যারা নানাভাবে বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার করেছেন এবং সম্পদ কিনেছেন, তাদেরও শনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। শুধু অর্থ পাচারকারীদের শনাক্ত করা নয়, পাচারের অর্থ ফেরত আনাটাও জরুরি। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর পাচারকারীদের শনাক্ত করার পাশাপাশি পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা এসব উদ্যোগের সাফল্য প্রত্যাশা করি। এক্ষেত্রে আরও একটি বিষয় জানা জরুরি এবং তা হলো, পাচারকারীরা কী কী প্রক্রিয়ায় অর্থ পাচার করেছেন। কেননা যেসব প্রক্রিয়ায় অর্থ পাচার হয়ে থাকে, সেগুলো চিহ্নিত করে এর ফাঁকফোকরগুলো বন্ধ করা প্রয়োজন। পাচারের প্রক্রিয়াগুলো জানা সম্ভব হলে ভবিষ্যতে অর্থ পাচার রোধ করা সহজ হবে। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, অর্থ পাচারকারীদের আইনের আওতায় আনা। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যত ক্ষমতাশালীই হোক না কেন, অর্থ পাচারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তাকে আইনের আওতায় আনার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। এ লক্ষ্যে শুধু উল্লেখিত ৭০ অর্থ পাচারকারী নয়, অন্যান্য পাচারকারীকেও চিহ্নিত করতে হবে। সেই সঙ্গে পাচারের অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ আরও জোরদার করা প্রয়োজন বলে মনে করি আমরা।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More