ঠিকই তো, আর কতোদিনই বা ঘরবন্ধি থাকা যায়! সরকার সাধারণ ছুটির মেয়াদ আর বাড়াচ্ছে না। সীমিত পরিসরে গণপরিবহনও চলাচলের অনুমোদন দেয়া হচ্ছে। ‘জীবন ও জীবিকা’ দুটো বিষয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিষয় দুটিকে বিবেচনায় নিয়েই সীমিত আকারে অফিস-আদালত ও অর্থনৈতিক কর্মকা- চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অফিস খুললে কিভাবে চলতে হবে, সে বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ আগেই ১৩ দফা নির্দেশনা জারি করেছে। যদিও প্রশ্ন রয়েছে, দেশে যখন সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী, তখন সবকিছু খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত ভুল হচ্ছে নাতো?
সব কিছু সীমিত পরিসরে খোলার সিদ্ধান্ত নেয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিধি মানার শর্ত দেয়া হয়েছে। সবার জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ১১ মে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এ ১৩ দফা নির্দেশনা দিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠি দেয়। নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে প্রয়োজনীয় সংখ্যক জীবাণুমুক্তকরণ টানেল স্থাপনের ব্যবস্থা নিতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেয়া, অফিস চালুর আগে অবশ্যই প্রতিটি অফিসকক্ষ, আঙিনা বা রাস্তা-ঘাট জীবাণুমুক্ত করা, প্রতিটি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের প্রবেশপথে থার্মাল স্ক্যানার বা থার্মোমিটার দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে অফিসে প্রবেশ করানো, অফিসের পরিবহনগুলো অবশ্যই শতভাগ জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা এবং যানবাহনে বসার সময় কমপক্ষে তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা। সার্জিক্যাল মাস্ক শুধু একবার (ওয়ানটাইম) ব্যবহার করা যাবে। তবে কাপড়ের মাস্ক সাবান দিয়ে পরিস্কার করে পুনরায় ব্যবহার করা যাবে। যাত্রার আগে ও যাত্রাকালীন পথে বারবার হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিস্কার করা, খাবারের সময়ে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, প্রতিবার টয়লেট ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা, অফিসে কাজ করার সময় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, কর্মস্থলে অবশ্যই মাস্ক পরার পাশাপাশি ঘন ঘন সাবানপানি বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিস্কার করতে হবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্যবিধি নিয়মিত মনে করিয়ে দিতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে কি না, তা পরিদর্শন দলের মাধ্যমে তদারক করতে হবে। এছাড়া দৃশ্যমান জায়গায় ছবিসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা নির্দেশনা ঝুলিয়ে রাখা এবং কাউকে অসুস্থ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। অপরদিকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর মত খাবার খাওয়া প্রয়োজন।
কোভিড-১৯ বা নোভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা পদে পদে। এমতাবস্থায় সব কিছুই যখন খুলে দেয়া হচ্ছে তখন সুস্থ থাকা এবং অন্যকে সুস্থ রাখার পরিবেশ গড়ে তোলা প্রত্যেকের দায়িত্বেরই অংশ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এখনও পর্যন্ত এই ভয়ানক ছোঁয়াছে মারণরোগের প্রতিষেধক- প্রতিরোধক আবিষ্কার হয়নি। শতভাগ সু-চিকিৎসার ক্ষেত্রে অপ্রতুলতার অন্তঃনেই। পর্যাপ্ত তথা গণহারে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। ফলে আক্রান্তের শঙ্কা মনে রেখেই সকলকে নিজ নিজ দায়িত্বে স্বাস্থ্য বিধি মানতে হবে। অন্যথায় পরিস্থিতি বেশামাল হওয়ার ভয়ই বেশি।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ