করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ‘সাধারণ ছুটি’র মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ১৬ মে পর্যন্ত। গত সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি বলা হয়েছে, এবারের ঈদের ছুটিতে কর্মস্থলে থাকতে হবে সরকারি চাকুরেদের। এ নীতি শুধু সরকারি লোকজনের জন্য নয়, সব ধরনের কর্মজীবী মানুষের জন্যই বহাল থাকা উচিত। কারণ লোকজনের স্থান পরিবর্তন করোনা ভাইরাসের বিস্তার বাড়াতে পারে। তা যাতে না হয় সেদিকে সবার দৃষ্টি রাখতে হবে। করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকারের সজাগ দৃষ্টি ও জনগণের সচেতন ভূমিকা পালনের বিকল্প নেই।
এটা একদিক। আরেকটি দিক হলো মানুষের রুটিরুজির প্রয়োজনে বের হওয়ার তাগিদ রয়েছে, অর্থনীতির স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনার তাগিদও রয়েছে। এসব ভেবেই কিছু উৎপাদনমূলক ও কিছু ব্যবসায়িক কর্মকা- চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে কিছু পোশাক কারখানা খুলেছে। আগামী ১০ মে বাণিজ্যিক কর্মকা-ের অংশ হিসেবে দোকানপাট ও শপিং মল খোলার বিষয়টি স্থির করেছে সরকার। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সড়ক পরিবহন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো নির্দেশনায় কয়েকটি শর্ত মেনে ঈদ উপলক্ষে বিপণী বিতান খোলার কথা বলা হয়েছে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এসব খোলা থাকবে। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে মার্কেটে প্রবেশের সময় হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। সড়ক পরিবহন খাতের ব্যাপারে নির্দেশনা হচ্ছে, এবার ঈদের সময়ও আন্তঃজেলা গণপরিবহন বন্ধ রাখতে হবে। আন্তঃউপজেলা চলাচলও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ১৬ মে পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। রাজধানী ঢাকা ও অন্য শহরগুলোর অভ্যন্তরীণ যান চলাচলের বিষয়ে অবশ্য কিছু বলা হয়নি। জরুরি প্রয়োজনে জনসাধারণের ঘরের বাইরে থাকার বিষয়ে কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। রাত ৮টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত বাসায় থাকতে হবে। আগে সন্ধ্যা ৬টার পর ঘরের বাইরে থাকা নিষিদ্ধ ছিলো।
সরকারের নির্দেশনা মানা উচিত জাতীয় অর্থনীতির কথা ভেবে, তবে জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে। যেসব কারখানা খুলে রাখা হয়েছে সেসবের কর্তৃপক্ষ যাতে স্বাস্থ্যবিধি মানে তা নিশ্চিত করতে হবে; না মানলে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিপণী বিতান ও শপিং মলের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানা খুব জরুরি। স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় সরকার যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিতে পারেনি। মানুষের সচেতনতার ঘাটতিও রয়েছে। বিপণী বিতান খোলার পর জনসমাগম বাড়বে। তাই এ দফায় সরকারকে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় কঠোর হতে হবে। জনগণকে নিজে থেকেই সচেতন থাকতে হবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ