চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরে সকাল হতে না হতেই বাড়ছে মানুষের ভিড়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বড় বাজারসহ প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই মানুষের ঠেলাঠেলি দেখে চমকে উঠতে হচ্ছে। সঙ্গত কারণে সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠছে তবে কি আমরা এতোদিন ভয়ানক ছোঁয়াছে রোগ সম্পর্কে সাধারণ মানুষগুলোকে ন্যূনতম দায়িত্বশীল করতে পারিনি? না, পারিনি। ভিড় দেখে ভিড় জমানো মানুষগুলোকে একটু পিছিয়ে যাওয়া বা সরিয়ে দেয়া দূরের কথা, ওই ভিড়ের মধ্যেই দেদারছে চলছে বেচা-বিক্রি। কি কিনতে ভিড় জমাচ্ছে মানুষ? নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর দোকানে ভিড় হলে না হয় কথা থাকে, কিন্তু বাস্তবে ভিড় হাড়ি পাতিল আর ছিট কাপড়ের দোকানসহ প্রায় সকল প্রকারের বিপনি বিতানেই অভিন্ন চিত্র।
নোভেল করোনা ভাইরাস তথা কোভিড-১৯ মারাত্মক সংক্রামক। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। সংক্রামকের স্পর্ষেই শুধু নয়, তার হাঁচি কাশির সর্দ্দি যেখানে লাগছে সেখান থেকেও ছড়িয়ে পড়ছে। বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। লাখের পর লাখ মানুষ হাসপাতালে অনিশ্চয়তার প্রহর গুণছে। আমাদের দেশেও ভয়াবহ পরিস্থিতি। চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর ও ঝিনাইদহেও প্রায় প্রতিদিনই ওই রোগে আক্রান্ত নারী পুরুষ শিশু কিশোর বৃদ্ধ বনিতা শনাক্ত হচ্ছে। এরপরও কেনো আমরা সতর্ক হতে পারছি না? কতজন মরলে, আমরা সতর্ক হবো? চিনে যখন এই ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিলো তখনই যেসব দেশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পেরেছে তারা তুলনামূলক অনেকটাই ভালো অবস্থানে রয়েছে। আমরা ভিয়েতনামসহ বহু দেশের মতভালো অবস্থায় থাকতে পারিনি। প্রায় ২শ’ দেশের মধ্যে আমাদের দেশে করোনা সংক্রামকের পরিস্থিতি অর্ধশতের মধ্যে। দিন দিন অবস্থার অবনতি ঘটছে। বাড়ছে ঝুঁকির মাত্রা। এ অবস্থায় সারা দেশে সীমিত আকারে বিপতি বিতান খোলার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। দোকান খোলার অনুমোদন পাওয়ার পর তথা ১০ মে থেকে চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুরে যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তা অব্যাহত থাকলে নতুন এই মুকুটাকৃতি বিষ বহু মানুষকেই কেড়ে নেবে। পরিস্থিতি বেশামাল হয়ে ওঠার আশঙ্কা অমূলক নয়।
ধরিত্রীর বুকে যুগে যুগে মারণ ভাইরাস বিবর্তিত হয়ে মানুষের প্রাণ কেড়েছে। গণহারে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মানুষের শরীরেই সৃষ্টি হয়েছে প্রতিরোধক ও প্রতিশেধক। নোভেল করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রেও মানুষের শরীরে প্রতিষেধক তৈরি হচ্ছে। তা না হলে ওই ভাইরাস মারার ওষুধ ছাড়াই আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হচ্ছে কীভাবে? আক্রান্তের মধ্যে সুস্থতা পাওয়ার সংখ্যা মৃত্যুর তুলনায় অনেক বেশি হলেও কি যারা মরছে মরুক বলে দায় এড়ানো যায়? অবশ্যই না। সভ্যবলে দাবি করা সমাজে আর যাই হোক মানুষের অকাল গণমৃত্যু মেনে নেয়া যায় না। চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে এখনও পর্যন্ত করোনা পরিস্থিতি বেশামাল পর্যায়ে পৌঁছয়নি। লাশের স্তুপে হাবুডুবু খাওয়ার আগেই দায়িত্বশীলদের নতুন করে ভেবে দেখা দরকার।
পূর্ববর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ