এমনিতেই সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা দীর্ঘসূত্রতায় আটকে থাকে, মহামারির দুই বছরে সেক্ষেত্রে আরও বেশি অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় গত বছর সরকারি চাকরির নিয়োগে গতি আনতে নির্দেশ দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এতে প্রায় সব সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শুক্রবার ছুটির দিন পরীক্ষা অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে গিয়ে একই দিনে বহু প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা নিতে হচ্ছে। রাজধানীতে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ার মতো উপযোগী প্রতিষ্ঠানের স্বল্পতা থাকায় যারা যখন যেভাবে সিডিউল পাচ্ছে, সেভাবেই পরীক্ষা নিয়ে নিচ্ছে।
একইদিনে একাধিক সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে চাকরি প্রার্থীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়; তেমনই বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান অধিক যোগ্য প্রার্থীর সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। দ্রুত নিয়োগ কার্যক্রম নিশ্চিত করতে ছুটির দিনগুলোয় কোনো কোনো সপ্তাহে ১৫ থেকে ১৮টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরির পরীক্ষা হচ্ছে। এ তথ্য থেকেই স্পষ্ট-চাকরিপ্রার্থীরা এক্ষেত্রে কতটা বঞ্চিত হচ্ছেন।
জানা যায়, একই দিনে একাধিক সরকারি চাকরির পরীক্ষা যাতে অনুষ্ঠিত না হয়, সে উপায় খুঁজছে সরকার। বিষয়টি যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে কী পদক্ষেপ নেয়া যায়, তা খতিয়ে দেখতে এটুআইকে (অ্যাসপায়ার টু ইনুভেট) নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কর্তৃপক্ষের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়।
শিক্ষাজীবন শেষ করে সব চাকরিপ্রার্থী পছন্দের চাকরি পেতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেন। সম্প্রতি সরকারি চাকরির প্রতি সবার আগ্রহ আগের তুলনায় বেড়েছে। চাকরিপ্রার্থী বেশি হওয়ায় এখন সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ এলেও একই দিন একাধিক প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা থাকায় অনেকে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেন না। কর্তৃপক্ষ এ সমস্যার সমাধানে দ্রুত উদ্যোগ নিলে চাকরিপ্রার্থীরা উপকৃত হবে।
একই সঙ্গে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান অধিক যোগ্য প্রার্থীর সেবা পাবে। এ বিষয়ক সমন্বয়ের কাজটি যে সহজ নয়, এটাও স্পষ্ট। তবে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে এ বিষয়ে দ্রুত সুখবর মিলবে, এটাই সবার প্রত্যাশা। একজন প্রার্থী রাজধানীতে না এসে জেলা বা উপজেলায় থেকেও যাতে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে, সে ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা দরকার। বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে আগ্রহী চাকরিপ্রার্থীদের খরচ কী করে ন্যূনতম পর্যায়ে আনা যায়, এ বিষয়েও ভাবা দরকার। নিয়োগ পরীক্ষার স্বচ্ছতা নিয়ে যাতে কোনো রকম প্রশ্ন না ওঠে, এ বিষয়েও কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকতে হবে।