স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় আজ বৃহস্পতিবার ভোরে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সদর হাসপাতালের হলুদ জোনে ভর্তি ছিলেন এরা। সদর হাসাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফাতেহ আকরাম বলেছেন, রাত ৩টা থেকে ভোর সাড়ে ৬টার মধ্যে মারা যাওয়া এ তিনজনই কোভিড-১৯ উপসর্গে ভুগছিলেন। আমরা সন্দেহ করছি এরা করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার কারণেই মারা গেছেন। এ আর গতকাল বুধবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গায় ১১ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ৫ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত, বাকি ৬ জন উপসর্গে ভুগছিলেন। অবশ্য সিভিল সার্জন তথ্য দিতে গিয়ে গতরাত পৌনে ১২টার দিকে বলেছেন, চুয়াডাঙ্গায় বুধবার ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামেই রয়েছে করোনা ভাইরাস সংক্রমিত রোগী। দামুড়হুদা উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোত যে হারে সংক্রমিত হচ্ছিলো পক্ষকাল আগে গত কয়েকদিন ধরে সেই হার কিছুটা কমেছে। জীবননগর উপজেলায় বেড়েই চলেছে। অধিকাংশ গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই বর্তমানে সর্দি কাশি জ্বরে ভুগছেন। এদের কেউ কেউ নমুনা দিয়ে করোনা পরীক্ষা করাল্ওে বেশিরভাগ অসুস্থদেরই নেয়া হচ্ছে না হাসপাতালে। করা হচ্ছে না পরীক্ষা। এদের অনেকেই সুস্থ হচ্ছেন বটে, যাদের শ্বাসকষ্ট প্রচ-ভাবে বেড়ে যাচ্ছে তাদের হাসপাতালে নিয়েও বাঁচানো যাচ্ছে না। এ ধরণের রোগীই চুয়াডাঙ্গায় বেশি মারা যাচ্ছেন। এরকমই তথ্য দিয়ে সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার বলেছেন, আলমডাঙ্গা উপজেলার তালুককররা গ্রামের মৃত আফসার বিশ্বাসের ছেলে আনসার আলী বেশ কিছুদিন সর্দি কাশি জ্বরে ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার শ্বাসকষ্ট বাড়ে। তাকে মধ্যরাত নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। ভোর সাড়ে ৬টার দিকে মারা যান ৬৫ বছর বয়সী আনসার আলী। তার নমুনা নেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে দাফনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দামুড়হুদা দর্শনার ঈশ্বরচন্দ্রপুরের তারা চাঁদের ছেলে সুন্নত আলী সর্দি কাশি জ্বর ও গায়ে গলায় ব্যাথায় ভুগছিলেন। তারও শ্বাস কষ্ট বাড়লে বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। হলুদ জোনে ভর্তি করে চিকিৎসা দো হয়। রাত ২টার দিকে মারা যান ৮৫ বছর বয়সী সুন্নত আলী। আজ বৃহস্পতিবার তার দাফন সম্পন্ন করার প্রক্রিয়া করে পরিবারের সদস্যরা। চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের শৈলমারির মিজানুর রহমানের স্ত্রী রাবেয়া খাতুন দিন দশেক ধরে সর্দি কাশি জ্বরে ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার শ্বাস কষ্ট বাড়লে তাকে রাত ১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালের হলুদ জোনে ভর্তির আধাঘণ্টার মাথায় মারা যান ৫০ বছর বয়সী রাবেয়া খাতুন। তারও মৃতদেহ আজ সকালে নিজ গ্রামে দাফনের প্রক্রিয়া করা হয়।
স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেবে চুয়াডাঙ্গায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৫ জন। তবে উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া রোগীর সংখ্যা ধরলে মৃতের সংখ্যা চুয়াডাঙ্গায় দুশর কাছাকাছি। এদের কেউ নিজ বাড়িতে, কেউ হাসপাতালে। এদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের রেডজোনে উপচেপড়া রোগী। হলুদ জোনেও রোগীর অবস্থা অনেকটা বেশামাল। রোগীদের মধ্যে ইতোমধ্যেই অক্সিজেন নিয়ে শুরু হয়েছে কাড়াকাড়ি। যার প্রয়োজন তাকে চিকিৱৎসক নার্স অক্সিজেন দিলেও কেউ কেউ গায়ের জোরেই অক্সিজেন নিয়ে অপচয় করছেন।
করোনার বিস্তারিত পৃথক প্রতিবেদনে।