স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ওষুধ ও চিকিৎসার অন্যান্য জিনিসপত্র ক্রয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনার বিষয়টি তদন্ত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের তদন্ত কমিটি। গতকাল রোববার বিষয়টি তদন্ত করতে চুয়াডাঙ্গায় আসেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে তদন্ত।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে করোনাভাইরাস মহামারীতে ওষুধ ও মেডিকেল সার্জিক্যাল রিকয়ারমেন্টস (এমএসআর) দ্রব্যাদি না কিনে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের বিরুদ্ধে। পরে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এতে প্রধান করা হয়েছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. বিধান চন্দ্র ঘোষকে। বাকী সদস্যদের নাম জানা যায়নি। তদন্তের আগে গত ৩ জুন ওষুধ, এমএসআর প্রাপ্তির সকল নথি, মজুদ বহি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে আজ রোববার সকাল ১০টায় তলব করে চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান, সদর হাসপাতালের সাবেক আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও), চার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, ভাণ্ডার রক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের একটি চিঠি দেয় তদন্ত কমিটি। চিঠিতে বলা হয়, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে করোনাভাইরাস মহামারীতে ওষুধ, এমএসআর দ্রব্যাদি না কিনে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের সত্যতা নিরূপনের জন্য গঠিত তদন্ত কমিটি আগামী ৬ জুন (আজ) সকাল ১০ টায় তদন্ত কার্য সম্পাদনের জন্য চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে যাবেন। সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তা ও ভাণ্ডার রক্ষককে উল্লেখিত তারিখ ও সময়ে সিভিল সার্জন কার্যালয় চুয়াডাঙ্গায় উপস্থিত হতে বলা হলো। ওই সময় ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের ওষুধ ও এমএসআর সামগ্রী প্রাপ্তি সংক্রান্ত সকল নথি, মজুদ বহি সাথে আনার জন্য অনুরোধ করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রধান খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. বিধান চন্দ্র ঘোষ সাংবাদিকদের সাথে তদন্ত সম্পর্কে কোন কথা বলতে রাজি হননি। তিনি জানান, ঘটনার সত্যতা নিরূপন করতে আমরা প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে এসেছি। তদন্ত রিপোর্ট স্বাস্থ্য অধিদফতরে পাঠানো হবে। তদন্তের বিষয়ে মন্তব্য করেননি চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের কোন কর্মকর্তাও।
উল্লেখ্য, গত ২০২০ সালের ২৭ ও ২৮ জুন একটি স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের ওষুধ ক্রয় সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়, চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ওষুধ ও মেডিকেল সার্জিক্যাল রিকয়ারমেন্টস কেনার জন্য ১১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। বরাদ্দকৃত ওষুধ ঠিকাদারের মাধ্যমে কেনা হয়। কিন্তু ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী ১১ কোটি ৬৫ লাখ টাকার মধ্যে সাড়ে ৪ কোটি টাকার ওষুধেরই কোন হদিস নেই। ‘ সংবাদ প্রকাশের পর অসন্তুষ্ঠ হয়ে ১ জুলাই বাদী হয়ে সদর থানায় দুই সংবাদকর্মীর নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শামীম কবীর। তিনি বর্তমানে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।