গাংনী প্রতিনিধি: আসন্ন গাংনী পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাছাই সম্পন্ন হতে চলেছে। মেহেরপুর জেলা, গাংনী উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে গঠিত স্থানীয় মনোনয়ন বোর্ড নামের চূড়ান্ত তালিকা প্রেরণ করবে কেন্দ্রীয় কমিটির মনোনয়ন বোর্ডে। গত শুক্রবার ও শনিবার রাতে রাজধানীতে মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সরকারি বাসভবনে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সভায় প্রার্থীদের নামের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। তবে দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় নৌকা প্রতীক পাওয়ার যুদ্ধ থেকে ছিটকে পড়েছেন জীবন বৃত্তান্ত জমা দেয়া তিনজন। গতকাল শনিবার রাতে স্থানীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা ৮ জনের নামের চূড়ান্ত তালিকা করেন। আওয়ামী লীগের তিন ইউনিটের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে ওই তালিকা প্রস্তুত করা হয়। রাতেই তালিকাটি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক বরাবর পাঠানো হয়েছে। এ তালিকার ৮জন আগামি ৮ ডিসেম্বর থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন।
জানা গেছে, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ফরহাদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক, গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাহিদুজ্জামান খোকন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, গাংনী পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি ছানোয়ার হোসেন বাবলু ও সাধারণ সম্পাদক আনারুল ইসলাম বাবুর সমন্বয়ে দু’দফা বৈঠক হয় প্রতিমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে; সেখানে প্রার্থীদের নামের তালিকা চূড়ান্ত হয়। এ তালিকার বাইরে কেউ দলীয় প্রতীকের জন্য মনোনয়নপত্র গ্রহণ করতে পারবে না।
দলীয় বিভিন্নসূত্রে জানা গেছে, জীবন-বৃত্তান্ত দাখিল করেছিলেন বেশ কয়েকজন প্রার্থী। এর মধ্যে আটজনের নামের তালিকা করা হয়েছে। এরা হলেন- পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আনারুল ইসলাম বাবু, সাবেক পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী, সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র নবীর উদ্দীন, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মোশাররফ হোসেন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাইফুজ্জামান শিপু, মাসুদ বিল্লাহ অভি, জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফজলুল হক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা।
কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের কাছে সিভি জমা দেন ১৩ জন। এদের মধ্যে পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক তারিফুল ইসলাম জীবন, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আহম্মেদ দলীয় মনোনয়ন ক্রয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন। অপরদিকে তিনজনকে বাদ দেয়া হয়েছে দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য। এরা হলেন- বর্তমান মেয়র আশরাফুল ইসলাম ও তার স্ত্রী যুব মহিলা লীগ নেত্রী শাহানা ইসলাম শান্তনা এবং উপজেলা যুবলীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিরুল ইসলাম।
২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর গাংনী পৌর নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন বর্তমান মেয়র আশরাফুল ইসলাম। অপরদিকে ২০১৮ সালের উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছিলেন মজিরুল ইসলাম।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনায় প্রতীকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী ও তার পরিবারের সদস্যদের কাউকে এবার দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সুযোগ নেই। তাই ওই তিন প্রার্থীকে প্রাথমিক বাছাই থেকে বাদ দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।
স্থানীয় মনোনয়ন বোর্ডের দাখিলকৃত তালিকার ব্যক্তিরা দলীয় মনোনয়নপত্র ক্রয় করবেন। আগামী ১৫ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মনোনয়ন বোর্ডের সভায় দলীয় প্রতীক কে পাচ্ছেন তা চূড়ান্ত হবে বলে দলীয়সূত্রে জানা গেছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
কার্পাসডাঙ্গায় জোরপূর্বক বিধবা নারীর মাঠের গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ