স্টাফ রিপোর্টার: জীবননগরের স্কুলছাত্রীর ধর্ষণ রিপোর্ট জমা দেয়া না দেয়া নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তার মধ্যে রশি টানাটানি শুরু হয়েছে। সঠিক রিপোর্ট ও ধর্ষণের সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার আশায় ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর অসহায় পরিবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপতাল, সিভিল সার্জন অফিস ও জীবননগর থানাসহ বিভিন্ন অফিসে অফিসে ঘুরছে। ধরনা দিচ্ছে বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদের বারান্দায়। সঠিক বিচার পেতে জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার ও পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলামের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অসহায় স্কুলছাত্রীর পরিবার।
ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর পিতামাতা ও ভাইবোনকে গতকাল চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ও সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসারের অফিসে ধরনা দিতে দেখা গেছে। স্কুলছাত্রীর পিতা দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, গত ২৪ আগস্ট মামলার তারিখ নির্ধারিত হওয়ায় রিপোর্টের বিষয়ে খোঁজ নিতে সিভিল সার্জন অফিসে যায়। সিভিল সার্জন অফিসের স্টেনোগ্রাফার নুর আলম বলেন, ২২ আগস্ট ২০২০ ইং তারিখে ১৩৬৪ স্মারকে ধর্ষণের রিপোর্টটি ডাকযোগে পাঠানো হয়। কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তা জীবননগর থানার এসআই ওসমান জানিয়েছেন কোনো রিপোর্ট আমার হাতে বা জীবননগর থানায় পৌঁছায়নি।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম কবীর বলেন, যথাযথভাবে রিপোর্টটি দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের স্বাক্ষর করে সিভিল সার্জন অফিসে পাঠানো হয়েছে। থানায় বা তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট পৌঁছাবে সিভিল সার্জন অফিস।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান বলেন, রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কিভাবে মিসিং হলো তা আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারের সাথে কথা হয়েছে। পুলিশ সুপারের কথামতো রিপোর্টটি দ্বি-নকল করে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কবে কখন পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের ডেকে সিভিল সার্জন সাংবাদিকদের সামনে জানতে চান রিপোর্টটি দ্বিতীয় বার পাঠানো হয়েছে কি-না। কিন্তু স্টেনোগ্রাফার নুর আলম ও সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা বলেন, দ্বিতীয়বার রিপোর্টটি হাসপাতাল থেকে আসেনি। বিষয়টি জানার জন্য আবারো আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীর কবীরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রিপোর্টটি আমার অফিসের সাইফুলের নিকট ছিলো। মনে হয় এখনো পাঠানো হয়নি। তবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ওসমানের আবেদনের প্রেক্ষিতে রিপোর্টের কপি সত্যায়িত করে হাতে হাতে পাঠানো হয়েছে। যদি আবারও মূলকপি চাই তবে রিপোর্টকারী ডাক্তারদের স্বাক্ষর করে তা দেয়া হবে। সে প্রসেজিং করা আছে।
গতরাতে জীবননগর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ওসমানের মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি বলেন, রিপোর্টের ১টি কার্বন কপি আমাকে সত্যায়িত করে দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল জীবননগর উপজেলার মিনাজপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রীকে তার প্রাইভেট শিক্ষক মোক্তারপুর মাঝের পাড়ার আল-মামুন নিজ ঘরে ধর্ষণ করে মর্মে জীবননগর থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ সংশোধিত ২০০৩ ৯(১) ধারায় মামলা রেকর্ড করা হয়।