হাত-পা ভেঙে নবজাতককে হত্যা : মা-নানিসহ গ্রেফতার ৩
ঝিনাইদহে পরকীয়া সম্পর্কের জের ধরে সন্তান জন্ম : নৃশংসতা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: পরকীয়া সম্পর্কের জের ধরে ঝিনাইদহে নবজাতককে হাত-পা ভেঙে, অ-কোষ মুচড়ে ও গলা টিপে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মা নুরুন্নাহার (৩০), নানী কমলা বেগম (৪৫) ও প্রেমিক দুলাভাই গুঞ্জনকে আটক করেছে পুলিশ। জানা গেছে, সোমবার বিকেলে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে প্রসব বেদনা নিয়ে ভর্তি হন কালীগঞ্জ উপজেলার কাদিরকোল গ্রামের আতিয়ার রহমানের মেয়ে নুরুন্নাহার। পরে সন্ধ্যার দিকে হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডের নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তান জন্ম দেন নুরুন্নাহার। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক রোগীর স্বজন জানান, সোমবার রাত ১০টার দিকে নানি কমেলা খাতুন নবজাতকটি কোলে নিয়ে কক্ষের বাইরে নিয়ে গিয়ে হাত-পা ভেঙে, অ-কোষ মুচড়ে ও গলা টিপে হত্যাচেষ্টা করেন। বিষয়টি এক রোগীর স্বজন দেখতে পেয়ে নবজাতকটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে নবজাতকটির মৃত্যু হয়। রোগীর স্বজন জিহাদ হোসেন জানান, নুরুন্নাহারের তিন বছর আগে সদর উপজেলার গান্না গ্রামের রকি নামে এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয়। সেখানে স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় দুই বছর আগে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এ ঘটনায় আদালতে মামলাও চলছে। এরপর নুরুন্নাহার তার বাবার বাড়িতেই থাকতেন। গত ১ আগস্ট কালীগঞ্জ উপজেলার আড়পাড়া গ্রামে সোহাগ হোসেন নামে আর এক ছেলের সঙ্গে আবারও বিয়ে হয় তার। এর মধ্যে তিনি (নুরুন্নাহার) পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। অবৈধ সম্পর্কের কারণে তিনি সন্তান ধারণ করেন। তবে সেই পরকীয়া প্রেমিক কে তা জানা যায়নি। এ ব্যাপারে নুরুন্নাহার জানান, ডেলিভারির পর তিনি হাসপাতালের বেডে ছিলেন। তার ছেলেকে মা কমলা বেগম (নানি) বাইরে নিয়ে গিয়েছিলেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন। এর বেশি কিছু তিনি জানেন না। ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহেল রানা বলেন, পরকীয়া সম্পর্কে মেয়ের সন্তান হওয়ায় মেনে নিতে না পেরে নানি কমলা বেগম নবজাতকটিকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ ঘটনায় নবজাতকটির মা ও নানিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া নুরুন্নাহারের তথ্যমতে পরকীয়া সম্পর্ক গড়া আলিফ আবেদীন গুনজন (৩০) নামে আরও একজন গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই তিনজনের নামে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নবজাতকটির মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। মর্গের প্রতিবেদন দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।