চুয়াডাঙ্গায় চুরির অপবাদ দিয়ে বাঁশের খুঁটিতে বেঁধে শিশু নির্যাতন
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার দোস্ত গ্রামে চুরির অপবাদ দিয়ে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দুপুর ২টার দিকে বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে দর্শনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন নির্যাতনের শিকার শিশুটির মা। পরে অভিযান চালিয়ে দোকান মালিক ও তার মেয়েকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন সদর উপজেলার দোস্ত গ্রামের মায়ের দোয়া ফ্যাশন হাউজের মালিক আলী আহম্মেদ (৬৫) ও তার মেয়ে রুমানা আক্তার রুমা (২৭)। এর আগে সদর উপজেলার দোস্ত গ্রামে রোববার দুপুরে টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আরাফাত হোসেনকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠে দোকান মালিকের বিরুদ্ধে। নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় শুরু হয় পুরো এলাকাজুড়ে। ওই ঘটনায় অভিযুক্তের শাস্তির দাবি জানান এলাকাবাসী।
মামলার এজহারে বলা হয়েছে, দোস্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র শিশু আরাফাত হোসেন রোববার দুপুরে টিফিনের সময় দোস্ত গ্রামের মায়ের দোয়া ফ্যাশন হাউজ ও ফাস্ট ফুডের দোকানে খাবার কিনতে যায়। কিছুক্ষণ পর দোকান মালিকের মেয়ে রুমানা খাতুন ওই শিশুকে বলেন, তুই দোকানের ক্যাশ বক্সে থাকা টাকা চুরি করেছিস। ওই শিশু কোনো টাকা চুরি করেনি বলে জবাব দিলে তাকে দড়ি দিয়ে বাঁশের খুঁটির সাথে বেঁধে ফেলেন দোকান মালিক আলী আহম্মেদ। পরে ভরদুপুরে রোদের মধ্যে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে তারা। খবর পেয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক গিয়ে তাকে মুক্ত করে নিয়ে যান।
এ বিষয়ে দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবীর বলেন, ওই ঘটনায় বাদী হয়ে দোকান মালিক আলী আহম্মেদ, তার মেয়ে রুমানা আক্তার রুমা ও স্ত্রী রাহিমা খাতুনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন নির্যাতনের শিকার শিশুটির মা ফাতেমা খাতুন। পরে অভিযান চালিয়ে দোকান মালিক আলী আহম্মেদ, তার মেয়ে রুমানা আক্তার রুমাকে গ্রেফতার করা হয়। বিকেলে তাদের দর্শনা আমলী আদালতে সোপর্দ করা হলে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিজ্ঞ বিচারক। অপর আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
উল্লেখ্য, রোববার দুপুরে সদর উপজেলার দোস্ত গ্রামে টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আরাফাত হোসেনকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠে দোকান মালিকের বিরুদ্ধে।
তবে, দোকান মালিক আলী আহমেদের মেয়ে রুমানা আক্তার দাবি করেছেন, তিনি নিজে টাকার কৌটাসহ ওই শিশুকে ধরেছেন। যদিও শিশুটির দেহ তল্লাশি করে কোনো টাকা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন দোস্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোমিন হোসেন।