সরকারি কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ৪ জেলায় সাত বিয়ে

দামুড়হুদার বড় দুধপাতিলা গ্রামের বুুলবুল পুলিশের খাঁচায়
স্টাফ রিপোর্টার: মানবপাচার, ধর্ষণ ও প্রতারণার মামলায় আবুল কালাম আজাদ ওরফে শাহারিয়ার নাফিজ ইমন (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পাংশা মডেল থানা পুলিশ। যিনি নিজেকে পরিচয় দিতেন সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে। শনিবার ২৩ ডিসেম্বর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আসামির তথ্য জানান পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদ। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে নাটোরের লালপুর উপজেলার হাজি মার্কেট এলাকা থেকে পুলিশ ও র‌্যাব-৫ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত শাহারিয়ার নাফিজ ইমন ওরফে বুলবুল পরিচয় দিতে গিয়ে পুলিশকে জানিয়েছে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার বড় দুধপাতিলা গ্রামের মৃত আয়নাল হকের ছেলে। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, আসামি আবুল কালাম আজাদ ওরফে শাহারিয়ার নাফিজ ইমন ওরফে বুলবুল তার পরিচয় গোপন করেন। সরকারি চাকরিজীবীর মিথ্যে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জেলার নারীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করতেন। এ পর্যন্ত সে ৭টি বিয়ে করেছেন। পরে তার সব শ্বশুর বাড়ির আত্মীয়-স্বজনদের সরকারি চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন।
আসামি শাহরিয়ার নাফিজ ইমন ওরফে বুলবুল নিজেকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর সরকারি অডিট অফিসার রাজবাড়ী, ফরিদপুর, যশোর, পাবনা, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন উপজেলার সরকারি অফিসের দায়িত্বে আছেন বলে পরিচয় দিতেন। সম্প্রতি তিনি এ পরিচয়ে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার ১৭ বছরের এক কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে আসামি ওই কিশোরীকে প্রতারণামূলক বিয়ে করে ধর্ষণ করে এবং গত ২৭ আগস্ট তাকে ফরিদপুরে যৌনপল্লীতে বিক্রির চেষ্টা করে। সেই সঙ্গে ভুক্তভোগীর বাড়ি থেকে নগদ ৮ লাখ টাকা ও ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে নিয়ে যায়।
পরবর্তী সময়ে ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বিষয়টি জানতে পেরে বাদী হয়ে রাজবাড়ীর পাংশা থানায় ধর্ষণ, প্রতারণা এবং পাচারের অভিযোগে মামলা করেন। মামলার পর থেকে আসামি আবুল কালাম আজাদ ওরফে শাহারিয়ার নাফিজ ইমন ওরফে বুলবুল আত্মগোপনে চলে যান। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ ও র‌্যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নাটোরের লালপুরের হাজি মার্কেট এলাকা থেকে আসামিকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সুপার আরও বলেন, আসামি গত মার্চের ৭ তারিখ থেকে আগস্টের ২৬ তারিখ পর্যন্ত পাংশা থানার বিভিন্ন এলাকায় সরকারি কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৭ জনের কাজ থেকে ২৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আসামির বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৪টি প্রতারণার মামলা ও ১টি চোরাচালানের মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) রেজাউল করিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মুকিত সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইফতেখারুজ্জামান, সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) সুমন কুমার সাহা, ডিআইও-১ বিপ্লব দত্ত চৌধুরীসহ জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More