রেড জোন এলাকায় নির্দেশনা না মেনে শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারীর সমবেত
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় লকডাউনের মধ্যেই আলোচনাসভা ও প্রীতিভোজ অনুষ্ঠান হয়ে গেলো চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে। জেলা প্রশাসনকে না জানিয়েই বুধবার সকাল থেকে এ আয়োজন করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। শিক্ষক পরিষদের সভা বলে কলেজের অধ্যক্ষ এড়িয়ে গেলেও কয়েকজন শিক্ষক বলেছেন, অধ্যক্ষের আসন্ন বিদায় উপলক্ষেই মূলত এ আয়োজন করা হয়েছিলো। অধ্যক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়।
জানা গেছে, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ৯নং ওয়ার্ডকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করে মঙ্গলবার থেকে লকডাউন কার্যকর করেছে জেলা প্রশাসন। ওই এলাকায় অবস্থিত চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ। হিসেব অনুযায়ী কলেজের সকল কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ থাকার কথা। এমনই নির্দেশনা ছিলো গত মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায়। এমনকি লকডাউন পালনে কঠোর হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেন সোলাইমান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি। অথচ গতকাল চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে আলোচনাসভা ও প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়। আলোচনাসভা ও প্রীতিভোজে উপস্থিত ছিলেন প্রায় শতাধিক মানুষ। প্রিন্সিপাল, ভাইস-প্রিন্সিপালসহ কলেজের ৪৭ জন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানে। কলেজের কর্মচারীসহ আরও অর্ধশতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। ১২০ জনের আয়োজন থাকলেও উপস্থিত ছিলেন প্রায় শতাধিক মানুষ। করোনা ভাইরাসের কারণে যখন মানুষ আতঙ্কে রয়েছে ঠিক তখন ধুমধাম করে সরকারি কলেজ চত্বরে এ আয়োজন করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের একাধিক শিক্ষক জানান, ‘আগামী ৭ আগস্ট কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক কামরুজ্জামান অবসরে যাচ্ছেন। ওই সময় আসন্ন ঈদের কারণে হয়তো শিক্ষক-কর্মচারী এক জায়গায় সমবেত হওয়া সম্ভব হবে না। তাই অধ্যক্ষের আমন্ত্রণে আমরা শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী সমবেত হই এবং আলোচনা শেষে দুপুরের প্রীতিভোজে অংশ নিই।’
লকডাউনের মধ্যে কেনো এমন আয়োজন? এমন প্রশ্নের জবাবে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক কামরুজ্জামান বলেন, ‘শিক্ষক পরিষদের একটা আলোচনাসভা ছিলো। আমরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই আলোচনা ও প্রীতিভোজে অংশ নিই।’ আমার নিজের টাকায় প্রীতিভোজের ব্যবস্থা করা হয়। এর বেশি কিছু বলতে পারবো না।
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ৯নং ওয়ার্ড করোনা বিস্তার প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন বলেন, বিষয়টি শোনার পর আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সকলকে অবহিত করেছি। সংক্রমণ প্রতিরোধ আইনে বলা আছে আলোচনাসভা, প্রীতিভোজ ও জনসমাগম করা যাবে না। এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান বলেছেন, ‘বেশি মানুষের উপস্থিতি ও প্রীতিভোজের আয়োজন করা ঠিক হয়নি। তাছাড়া সংক্রমণ প্রতিরোধ আইনেও এটা অপরাধ।’ জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেছেন, ‘তারা এ বিষয়ে আমাকে কিছুই জানাননি। তারা শিক্ষিত লোক হয়ে এটা কেনো করলেন বুঝছি না।’