গাংনী প্রতিনিধি: ছোট্ট শিশু আজরা আদিবা (৫) গাংনী বিআর লাইসিয়াম স্কুলের পি-১ ক্লাসের ছাত্রী। গতকাল বৃহস্পতিবার স্কুলে জীবনের প্রথম পরীক্ষা দেয়। পরীক্ষায় বেশ ভালো করেছে তাই মায়ের কাছে আখের রস খাওয়ার আবদার করে। সন্তানের আবদার মেটাতে কে না চায়? সাথে সাথে তাকে নিয়ে স্কুল থেকে গাংনী বাসস্ট্যান্ডের উদ্দেশ্যে গেলেন মা। স্কুল থেকে সামান্য পথ হাঁটলেই বাসস্ট্যান্ড। সেখানে রস খাওয়ার পর বাড়ি ফেরার পালা। এ সময় বালু বহনকারী একটি ট্রাক ধাক্কা দেয় আদিবাকে। শিশুটি ছিটকে পড়ে ট্রাকের চাকায় পিস্ট হয়। মুর্হূতেই রস খাওয়ানোর তৃপ্তি মাখা মায়ের মুখ কালো হয়ে যায়। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিলেও শিশুটি চলে গেল পরপারে। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ট্রাক চালকের বিচারের পাশাপাশি গাংনী শহরের সড়ক নিরাপত্তার বিষয়টি সবার মুখেই এখন আলোচনা চলছে। নিহত আদিবা গাংনী থানাপাড়ার ইনামুল হকের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনার মর্মান্তিক দৃশ্য বাজারের অনেকেই প্রত্যক্ষদর্শী। তারা দ্রুত ছুটে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা ¯^াস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। দ্রুত চিকিৎসা দিতে না পারলে শিশুটিকে বাঁচানো যাবে না বলে সতর্ক করেন চিকিৎসকরা। সাথে সাথেই অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন ¯^জনরা। এ সময় উপস্থিত অনেকের শিশুটির জন্য চোখের পানি ফেলছিলেন। চোখের সামনে নির্দয় মর্মান্তিক ঘটনা মেনে নিতে পারছিলেন না প্রত্যক্ষদর্শীরা। তাদের মুখে ছিলো শুধুই আফসোস।
এদিকে কুষ্টিয়া মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ খবর গাংনীতে পৌঁছুলে শোকের ছায়া নেমে আসে। আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী, দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং শিশুটির স্কুলের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী এবং অবিভাবক কেউ ই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।
দুর্ঘটনার পর থেকেই দাবি উঠেছে গাংনী শহরের সড়ক নিরাপত্তা। একের পর এক দুর্ঘটনা আর প্রাণহানী স্থানীয়দেরকে নতুন করে ভাবাচ্ছে। প্রতিদিন যেমনি বাড়ছে পথচারী মানুষের সংখ্যা তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নানা প্রকার যানবাহন। ছোট্ট সড়কে যানবাহন ও আর মানুষের চাপে যেন জঞ্জাট সৃষ্টি হচ্ছে। তাই ট্রাফিক পুলিশ ব্যবস্থা এখন সময়ের দাবি বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। এতোটুকু শহরের ব্যস্ততার মাঝে দ্রুতগতির যানবাহনের কারণেও দুর্ঘটনা ঘটে আসছে। তাই আর কোন প্রাণ ঝরে যাওয়ার আগেই সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এমন দাবি এখন গাংনীবাসীর।