মেহেরপুরে পাবলিক প্রসিকিউটরের বিরুদ্ধে মামলা

খুন-গুমের ভয় দেখিয়ে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর জেলা জজ আদালতের বর্তমান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) পল্লব ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সহযোগী আসামি ১৮১ অস্ত্রবাজ ও সন্ত্রাসী সংগঠণ গঠণ করে নীরিহ মানুষদের মামলা, খুন ও গুমের ভয় দেখিয়ে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। পল্লব ভট্টাচার্য ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ শারমিন নাহারের আদালতে হাজির হয়ে কামাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় পিপির সহযোগী হিসেবে ১৮১ জনের নাম উল্লেখ করে তাদেরও বিচারের আওতায় আনার আবেদন করা হয়। মামলাটি আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক শারমিন নাহা সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবী মারুফ আহমেদ বিজন এসকল তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার ১৮১ আসামির মধ্যে অন্যতম কয়েকজন হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ভগ্নিপতি আব্দুস সামাদ বাবুল বিশ্বাস, বুড়িপোতা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহ জামাল চৌধুরী, বারাদি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম, কুতুবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী মাস্টার, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফুয়ান আহমেদ রুপক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক বারিকুল ইসলাম লিজন, যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান হিরণ, ছাত্রলীগ নেতা কুতুব উদ্দিন।
মামলার এজাহারে বাদি লিখেছেন, ‘মেহেরপুর জেলা জজ আদালতের পিপি পল্লব ভট্টাচার্য প্রভাব খাটিয়ে সরকারের গুরত্বপূর্ণ পদ দখলে নিয়ে সন্ত্রাসী ও অস্ত্রবাজ সংগঠন তৈরি করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেন এবং নিরীহ লোকদের মামলা, খুন ও গুমের ভয় দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বিগত ২০১৩ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৫৯টি মামলার আসামিদের কাছে থেকে তার সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজন দিয়ে নিরীহ লোকদের তার বাড়িতে বা তার চেম্বারে ডেকে নিয়ে এসে চাঁদা আদায় করিয়াছে। যেসব লোকজন আসামিকে চাঁদা দিতে ব্যর্থ হইয়াছে তাহাদের উপরে উল্লেখিত মামলায় আসামি করিয়াছে এবং উল্লেখিত মামলায় আসামির সংখ্যা অনুমান দেড় থেকে দুই হাজার হইবে। এই আসামিদের সহিত জামিনের মুক্তি বা চার্জ হইতে খালাস বা খালাস প্রদানের নামে আসামিকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো ও সাজা দেয়ার ভয় দেখিয়ে তিন কোটি টাকা আদায় করেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ১২ জুন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাদী তার দলীয় সংগঠনের পক্ষ হইতে মামলা মোকদ্দমা পরিচালনা করিবার দায়িত্ব থাকায় আসামি তাহাকে তাহার নিজস্ব বাড়ীর ‘ল’ চেম্বারে ডেকে নেন। এবং সাক্ষীগণদের উপস্থিতিতে ১১ জন আসামির জামিনের জন্য ৪ লাখ টাকা চাঁদা গ্রহণ করেন।’
উল্লেখ্য, মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটার অ্যাডভোকেট পল্লব ভট্টাচার্য গত জুলাই মাস থেকে দুই মাসের ছুটিতে জাপানে অবস্থান করছেন।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More