মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার নওপাড়া গ্রামের বাহাজেল ও তৌহিদুল হত্যা মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দেয়া হয়েছে। হত্যার ১৭ বছর পর গতকাল রোববার দুপুরে মেহেরপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় দেন। দ-িতরা হলেন গাংনী উপজেলার নওপাড়া গ্রামের খেদের আলীর ছেলে বাদল হোসেন, ছহির উদ্দীন চৌকিদারের ছেলে আলামিন হোসেন ও হাসেম আলী। তবে আদালতে বাদল হোসেন ছাড়া সবাই অনুপস্থিত ছিলেন। এ মামলায় দোষী প্রমাণিত না হওয়ায় ১০ জনকে বেখসুর খালাস দেয়া হয়েছে। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি কাজী শহিদুল হক।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরনণ জানা যায়, মেহেরপুর সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের আব্দুল ওহাবের ছেলে তহিদুল ইসলাম গাংনী উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের বাহাজেলের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। ২০০৫ সালের ৫ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ির উঠানে একটি চৌকির ওপর বসে গল্প করছিলন তারা। ওই সময় একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। তাদের দেখে তহিদুল ইসলাম পালিয়ে গিয়ে একটি ঘরের কোনে অবস্থান নেয়। সন্ত্রাসীরা তহিদুল ইসলামকে না পেয়ে বাহাজেলকে ধারলো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে ও ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে তহিদুল ইসলামকে অপহরণ করে। এলাকাবাসী রক্তাক্ত জখম বাহাজেলকে উদ্ধার করে প্রথমে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরদিন গাংনী উপজেলার ধলা গ্রামের ভারত সীমান্তের একটি জমি থেকে তহিদুল মরদেহে উদ্ধার করে গাংনী থানা পুলিশ। এদিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে বাহাজেল মারা যান।
ঘটনার দু’দিন পর (২০০৫ সালে ৭ জানুয়ারি) নিহত তহিদুল ইসলামের ভাই আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৫জনকে আসামি করে গাংনী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০০৫ সালের ৮ মে ওই মামলায় ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা গাংনী থানার তৎকালীন এসআই মেজবা উদ্দীন আহম্মেদ ও এসআই আনোয়ার আলম আজাদ। মোট ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ওই মামলার রায় ঘোষণা করেন বিজ্ঞ বিচারক।
মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবি ছিলেন অতিরিক্ত পিপি কাজী শহিদুল ইসলাম ও আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট একেএম শফিকুল আলম।