এম আর বাবু: চায়না কমলা, দার্জিলিং কমলা, ছাতকের কমলা, মাল্টা, মসুমবি, শরিফা বা মেওয়া, থাই পেয়ারা, বল সুন্দরী কুল, সিডলেস কুল, সিডলেস লেবু, হাইব্রীড পেঁপে, আ¤্রপালি, কাটিমন আম, বারোমাসি আম ও ড্রাগনসহ কী নেই বাগানে। সকল প্রকার মিশ্র ফলের বিশাল এক রাজ্য গড়ে তুলেছেন জীবননগর উপজেলার উথলীর আবজালুর রহমান ধীরু। ধীরুর স্বপ্ন দেশে উৎপাদিত ফল দিয়েই একদিন এ দেশের মানুষের চাহিদা পূরণ হবে। কমবে বিদেশ থেকে ফল আমদানির নির্ভরতা। এক প্রশ্নের উত্তরে আবজালুর রহমান ধীরু জানান, এবার কতো টাকার মাল্টা বিক্রি করেছি তা আমি বলবো না, এটি আমার সিক্রেট ব্যাপার। তবে বলছি আশাতীত লাভ করেছি। টার্গেটের থেকে অনেক বেশী। অধিক মুনাফার জন্য তিনি আমাদের কৃষক ভাইদের ধান ও অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি ফলের বাগান গড়ে তোলার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
জীবননগর উপজেলার উথলীর মৃত এরাদ আলী বিশ^াসের ছোট ছেলে আবজালুর রহমান ধীরু। তিনি উচ্চ শিক্ষিত একজন মানুষ। দৈনিক ইনকিলাবের জীবননগর প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। পৈতিৃক সূত্রে তিনি প্রায় ১২০ বিঘা জমি পেয়েছেন। আবজালুর রহমান ধীরু দীর্ঘদিন ধরেই আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে থাকেন। ৫ বছর পূর্বে তার ফলের বাগান গড়ে তোলার আগ্রহ জন্মে। প্রথমে আ¤্রপালি আম ও বাও কুল দিয়ে তিনি তার ফলের বাগান গড়ে তোলেন। লাভজনক হওয়ায় পরবর্তীতে একে একে চায়না কমলা, দার্জিলিং কমলা, ছাতকের কমলা, মাল্টা, মসুমবি, শরিফা বা মেওয়া, থাই পেয়ারা, বল সুন্দরী কুল, সিডলেস কুল, সিডলেস লেবু, হাইব্রীড পেঁপে, আ¤্রপালি, কাটিমন আম, বারোমাসি আম ও ড্রাগনসহ অন্যান্য ফলের বাগান গড়ে তুলেছেন। তার ১২০ বিঘা জমির অধিকাংশই বাগানে সৃজিত। হাইব্রীড এ ফলের অভিজ্ঞতা অর্জন ও চারা নিতে তিনি ভারতের উত্তর প্রদেশ, নাসিক, সিমলা, হরিয়ানা, দার্জিলিং, বশিরহাট ভ্রমণ করেছেন। ঈশ^র্দীর পেঁেপ বাদশাসহ দেশসেরা ফল উৎপাদক ও বৈজ্ঞানিকদের সাথে রয়েছে তার নিবিড় যোগাযোগ। তিনি তাদের নিকট থেকে পরামর্শ নেন এবং ফলের চারা সংগ্রহ করেন।
আবজালুর রহমান জানান, বর্তমানে মাল্টা, মসুমবি ও শরিফা বাজারজাত করা হচ্ছে। এ ফল ঢাকার কাওরান বাজার, সাভারের বাইপাইল, গাজীপুর ও সিলেটে যাচ্ছে। বলসুন্দরী ও সিডলেস কুলে ফুল এসেছে। ড্রাগনেও ফল ও ফুলে ভরে রয়েছে। তিনি জানান, এবার যে টাকার মাল্টা ও শরিফা বিক্রি হয়েছে তা আশাতীত। তার স্বপ্ন হচ্ছে বাংলাদেশকে একটি ফলের রাজ্যে গড়ে তোলার। বিদেশী ফলের আমাদানী নির্ভরতা কমানোর। এর ফলে মানুষ দেশীয় ফল অত্যান্ত সস্তায় কিনে খেতে পারবে। তিনি দেশের কৃষক ভাইদের ধানসহ অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি ফলের বাগান গড়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।