মামলাজট নিরসনে নতুন বিচারক নিয়োগের কাজ চলছে

মেহেরপুরে ন্যায় কুঞ্জ’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে প্রধান বিচারপতি

মেহেরপুর অফিস: মামলার জট কমানোর বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি মামলার জট কমিয়ে আনার। গতকাল মঙ্গলবার সকালে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী মেহেরপুর জজ কোর্ট চত্বরে ন্যায় কুঞ্জ’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে গত বছর ৮২ হাজার কেইস ফাইল হয়েছে। এর মধ্যে ডিসপোজাল হয়েছে ৭৯ হাজার। অর্থাৎ ডিসপোজালের রেট ৯৫ ভাগ। প্রতি জেলায় যা কেইস ফাইল হয়েছে তার চেয়ে বেশি ডিসপোজাল হয়েছে। এই দেশে ৪০ লাখ কেইসের জন্য বর্তমানে জজের সংখ্যা মাত্র ২ হাজার। আমরা চেষ্টা করছি, নতুন ১০২ জন বিচারক নেয়ার প্রসেস সম্পূর্ণ হয়েছে। পুলিশ ভেরিফিকেশন স্টেজে আছে। আমরা এই বছরে তাদেরকে নিয়োগ দিতে পারবো এবং আরও ১০০ জন বিচারক নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আমরা আশাবাদী আমাদের বিচারকগণ পরিশ্রম করে দেশের যে মামলা জট তার সুরাহা করতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, এই রাষ্ট্রের মানুষ এই রাষ্ট্রের মালিক। প্রত্যেকদিন আদালত প্রাঙ্গণে হাজার হাজার মানুষ বিচারের আশায় আসেন। তাদের বসার বা বিশ্রামের কোনো জায়গা নেই। এইসব ভাবনা চিন্তা করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই কষ্টটা কেমন করে লাঘব করা যায়। যাতে আদালতে এসে তারা স্বস্তিতে বসতে পারে এজন্য সরকার ৩৫ কোটি টাকার বাজেট দিয়েছে। অর্থাৎ ৬৪টি জেলায় আমরা প্রায় ৫০ লাখ টাকা দিতে পারবো। যেখানে বেশি জনসমাগম হয় সেখানে একটু বেশি দেয়া হবে। এর আগে সেখানে মোনাজাত করা হয়। পরে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী একটি গাছের চারার রোপণ করেন। এ সময় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, আপিল বিভাগের রেজিস্টার (বিচার) এসকেএম তোফায়েল হাসান, মেহেরপুর জেলা ও দারয়া জজ মো. শহিদুল্লাহ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. রাফিউল আলম, জেলা দায়রা ও জজ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক মো. তহিদুল ইসলাম, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সিদ্দিক, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রিপতি কুমার বিশ্বাস, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এইচএম কবির হোসেন, সিনিয়র সরকারি জজ বেল্লাল হোসেন, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার সেলিম রেজা, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলাম, বর্ণালী রানী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক লিংকন বিশ্বাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামিরুল ইসলাম, পিপি পল্লব ভট্টাচার্য, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি কামরুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক খ ম ইমতিয়াজ বিন হারুন জুয়েল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় সেখানে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

এর আগে এদিন সকালে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী জেলার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সাথে মেহেরপুর জজ আদালত মিলনাতনে এ মতবিনিময় করেন। মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ মো. শহীদুল্লাহ’র সভাপতিত্বে মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এর আগে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী জেলা জজ আদালতের সম্মেলন কক্ষে এসে পৌঁছুলে বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয় এবং সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ মো. শহীদুল্লাহ প্রধান বিচারপতির হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন।

এদিন দুপুরের দিকে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী মেহেরপুরের মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। পরে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী মুজিবনগর আম্রকাননে একটি গাছের চারা রোপণ করেন। এদিকে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী একদিনের এক সংক্ষিপ্ত মঙ্গলবার সকালে মেহেরপুর সার্কিট হাউসে এসে পৌঁছুলে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। মেহেরপুর পুলিশের একটি চৌকস দল প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী সালাম গ্রহণ করেন। এদিকে এর আগে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী মেহেরপুর সার্কিট হাউসে এসে পৌঁছুলে তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More