আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গার গোবিন্দপুরের ব্যবসায়ী আজিজুল হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি মিনারুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার দিনগত রাতে কালিদাসপুর আসাননগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ৭ আগস্ট সন্ধ্যায় কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ব্যবসায়ী আজিজুল হককে। দু’দিনের মাথায় ৯ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজিজুল হক মারা যান। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে পুলিশ দুজন আসামিকে গ্রেফতার করে। তবে অন্যতম প্রধান আসামি মিনারুল ইমলাম ছিলেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। দীর্ঘদিন পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সঞ্জিত সাহা মিনারুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছেন। ফলে আজিজুলের পরিবারের সদস্যদের কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।
হত্যা মামলার এজাহার ভুক্ত আসামি মিনারুল ইসলাম (৩৫) উপজেলার কালিদাসপুর ইউনিয়নের আসাননগর গ্রামের দাউদ আলীর ছেলে। ইতোপূর্বে আলমডাঙ্গার আসাননগর পুর্বপাড়ার মৃত নাটোর আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর ও মিশকাত আলীর ছেলে সোহেল গ্রেফতার হয়। তারা দুজনই জেলহাজতে রয়েছে।
হত্যা মামলার বাদি নিহত আজিজুল হকের ছেলে নাজমুস সাকিব বলেন, আলমডাঙ্গা-কুষ্টিয়া সড়কের সাদাব্রিজ সংলগ্ন তার চাচাতো ভাই পাপ্পু হোসেনের ‘আশা ট্রেডার্স’ নামের ইলেক্ট্রনিক্সের একটি দোকান রয়েছে। গত ৭ আগস্ট বিকেলে দরজার একটি কবজা ফেরতের ঘটনায় সবুজ ও মোস্তাক নামের দু’জনের সাথে তার চাচাতো ভাই পাপ্পুর বাক-বিতন্ডার ঘটনা ঘটে। তখন হাতাহাতিও হয়।
সাকিব জানান, হাতাহাতির ঘটনার সময় তার আব্বা ও চাচা রাজ্জাক কমিশনার আপসের জন্য সন্ধ্যার পর দু’পক্ষকে বসার আহ্বান জানান। সন্ধ্যার পর দু’পক্ষ দোকানের সামনে বসে। আপসের কথাবার্তা চলার মধ্যেই সবুজ ও মোস্তাকের বন্ধু জাহাঙ্গীর, সোহেল ও মিনার তার চাচাতো ভাই পাপ্পুকে বেধড়ক পেটাতে থাকে। এসময় তার পিতা আজিজুল হক ঠেকাতে গেলে তাকেও রামদা দিয়ে উপুর্যুপরি কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে তিন দুর্বৃত্ত। এরপর ওই রাতেই মুমূর্ষু অবস্থায় পিতা আজিজুল হককে প্রথমে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসার দুদিনের মাথায় ঢাকা মেডিকেলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
সাকিব জানান, তার বাবার কোন অপরাধ ছিল না। তিনি সাধারণ একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। কিন্তু তিন দুর্বৃত্ত তাদের পরিবারের সবকিছু তছনছ করে দিয়েছে। তিনি তিন আসামি আলমডাঙ্গার আসাননগর পুর্বপাড়ার মৃত নাটোর আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর, একই গ্রামের মিশকাত আলীর ছেলে সোহেল ও মৃত দাউদ আলীর ছেলে মিনারুল ইসলামের উপযুক্ত বিচারের দাবি করেন।
সাকিব বলেন, পুলিশের হাতে গ্রেফতার জাহাঙ্গীর ও সোহেল আদালতের মাধ্যমে থানায় তিনদিনের রিমান্ডে আসে। মিনার ছিলো পলাতক। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর মঙ্গলবার দুপুরে তাকে গ্রেফতার করেছে। সাকিব তার পিতা হত্যা আসামিদের বিচারের মাধ্যমে ফাঁসির দাবী করেছেন।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদুর রহমান জানান, মিনারুল ইসলাম ব্যবসায়ী আজিজুল হক হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তিনি দীর্ঘদিন পালিয়ে ছিলেন। মঙ্গলবার রাতে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে। তাকে সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.