বাস চাপায় মোটরসাইকেল চালক ও আলমসাধু উল্টে যাত্রী নিহত
চুয়াডাঙ্গার ছয়মাইলে ও ঝিনাইদহের ডাকবাংলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনা
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক ও আলমসাধুর যাত্রী নিহত হয়েছেন। বুধবার দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মরদেহ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। নিহতরা হলেন ঝিনাইদহ জেলার হরিণাক-ু উপজেলার হিংগারপাড়ার বাসিন্দা হাসনাত কবির দিপু (৩৫) ও চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আটমাইল-নবীনগর গ্রামের বাসিন্দা মফিজ উদ্দিন (৪০)। আহত ব্যক্তি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা ইকরামুল হককে সদর হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, দুপুরে চুয়াডাঙ্গার নীলমণিগঞ্জের বোনের বাসা থেকে মোটরসাইকেলযোগে নিজ বাড়ি ঝিনাইদহের হিংগার পাড়ায় ফিরছিলেন হাসনাত কবির দিপু। এ সময় সদর উপজেলার ছয়মাইল নামক স্থানে পৌঁছুলে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসার চুয়াডাঙ্গাগামী যাত্রীবাহী বাস জেআর পরিবহনের সঙ্গে একটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেল চালক হাসানাত কবির দীপু গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত দীপু ঝিনাইদহ সদর উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের হিঙেরপাড়ার (কুঠিরপাড়া) আবু নছের বিশ্বাসের ছেলে।
দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, বোনের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা থেকে মোটসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। ছয়মাইল নামকস্থানে পৌঁছুলে যাত্রীবাহী বাস জেআর পরিবহনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তিনি আরও বলেন, দীপু কুয়েত প্রবাসী ছিলেন। চলতি মাসের ২৭ তারিখে কুয়েতে যাওয়ার কথা ছিলো। তার আগেই চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তিনি এলাকার দানশীল ব্যক্তি নামে ব্যাপক পরিচিতি ছিলেন। নিজ এলাকার দুটি মসজিদ নির্মাণ ও একটি মহিলা হাফেজিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করছেন। পরিবারের সদস্যরা জানায়, সকালে বোনের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নীলমণিগঞ্জে গিয়েছিলো। ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আর কয়েকদিন পর কুয়েতে চলে যেতো সে। ছোট ছোট দুই মেয়ে রেখেই চলে গেলো না ফেরার দেশে।
অপরদিকে গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডাকবাংলায় আলমসাধু নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চালক ও যাত্রী আহতের ঘটনা ঘটে। তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে যাত্রী মফিজ উদ্দিনের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। নিহত মফিজ উদ্দিন (৪০) চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের নবীননগর গ্রামের ছাকার উদ্দিনের ছেলে এবং আহত আলমসাধু চালক ইকরামুল হক চুয়াডাঙ্গার শিবপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার ইখলাসের ছেলে।
পুলিশ জানায়, চুয়াডাঙ্গা থেকে আলমসাধুযোগে ঝিনাইদহ যাচ্ছিলেন তারা। এসময় ডাকবাংলা কৃষি ফার্মের সামনে পৌঁছুলে আলমসাধুর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাকা রাস্তার পাশে উল্টে যায়। এতে দুজন গুরুতর জখম হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আলমসাধুর যাত্রী মফিজ উদ্দিনের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নূরজাহান রুমি বলেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দীপুকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। হাসপাতালে আসার আগেই তিনি মারা যান। অপরদিকে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মফিজ উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, যাত্রীবাহী বাস জেআর পরিবহনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মোটরসাইকেল চালকের। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে চুয়াডাঙ্গা বড়বাজার চৌরাস্তার মোড় থেকে বাসটি আটক করে। অপরদিকে ঝিনাইদহ ডাকবাংলায় আলমসাধু উল্টে আহত মফিজ উদ্দিন নামে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। অভিযোগ না থাকায় আবেদনের প্রেক্ষিতে সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে দুজনের মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।