চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে মিছিল-অবস্থান কর্মসূচিতে রাজপথে সরব আ.লীগ
স্টাফ রিপোর্টার: অবরোধের প্রথম দিন গতকাল মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে কৃষক দল ও যুবদলের দুই নেতা নিহত হয়েছেন। সিলেটে পুলিশের ধাওয়ায় বাইক উল্টে এক যুবদল কর্মী মারা গেছেন। নেতাকর্মী হত্যার প্রতিবাদে এই দুই জেলায় আজ বুধবার হরতাল ডেকেছে বিএনপি ও যুবদল। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ, বগুড়াসহ কয়েকটি জেলায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে অবরোধকারীদের সংঘর্ষে শতাধিক আহত হয়েছে। আড়াইহাজারে তিন পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। অবরোধ চলাকালে ঢাকার বাইরে অন্তত ১০টি যানবাহনে আগুন দেয়ার খবর পাওয়া গেছে। ভাঙচুর করা হয়েছে অসংখ্য গাড়ি। গত শনিবার ঢাকায় শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলার প্রতিবাদে রোববার হরতাল পালন শেষে গতকাল থেকে তিন দিনের লাগাতার সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। পরে জামায়াতে ইসলামীও একই কর্মসূচি দেয়।
অপরদিকে, বিএনপি-জামায়াত ঘোষিত অবরোধের প্রতিবাদে রাজপথে সরব ছিলো আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে তারা। জনগণের জানমাল রক্ষায় এবং বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের প্রতিবাদে নেতারা নিজ নিজ এলাকায় সতর্ক অবস্থায় পাহারা দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিএনপি-জামায়াতের ডাকা তিন দিনের অবরোধের প্রথম দিন রাজপথ মূলত দখলে রেখেছিলো দলটি। অপরদিকে, বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতারাভিযান অব্যাহত হয়েছে।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা পর্যন্ত কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। এ সময় দেশব্যাপী শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করবে দলটি। মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, নাশকতা ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ কর্মসূচি আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার আগমুহূর্ত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। বিজ্ঞপ্তিতে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের কর্মসূচি পালনের জন্য অনুরোধ করা হয়। একই সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত যেন হরতাল, অবরোধ ও সমাবেশের নামে নাশকতা করতে না পারে সেজন্য সর্বাত্মক সতর্ক অবস্থানে থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গায় বিএনপির ডাকে ৭২ ঘন্টার অবরোধের প্রথম দিনে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে শহরের কেদারগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে একদল দূর্বৃত্ত পেঁপে বোঝাই একটি ট্রাকের সামনের গ্লাস ভেঙে দিয়ে পালিয়ে গেছে। এ সময় ট্রাকের হেলপার তুহিন (২২) সামান্য আহত হয়েছেন।
ট্রাকের হেলপার তুহিন জানান, চুয়াডাঙ্গার দর্শনার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মনি’র মাইশা এন্টারপ্রাইজের একটি ট্রাক ঢাকা মেট্রো-ট-১৮-৮৯০২ নম্বর গাড়িটি দামুড়হুদা থেকে পেঁপে বোঝাই করে চুয়াডাঙ্গা হয়ে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে যাচ্ছিলো। এ সময় চুয়াডাঙ্গা কেদারগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছুলে একদল দূর্বৃত্ত গাড়িটি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় গাড়ির সামনের গ্লাস ভেঙে যায় এবং গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে, গাড়ির হেলপার সামান্য আহত হন। ট্রাকটি চালাচ্ছিলেন ড্রাইভার আল আমিন। পরে গাড়ির মালিকের সাথে কথা বলেন ট্রাক ড্রাইভার। এছাড়া ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ দিয়েছেন ট্রাকচালক।
চুয়াডাঙ্গায় নাশকতার মামলায় দুই বিএনপি নেতাকে গ্রেফতার করেছে সদর থানা পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পৃথক দুটি স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, চুয়াডাঙ্গার নূরনগরের মৃত মহিউদ্দিনের ছেলে সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান লিপ্টন (৫০) এবং সদর উপজেলার হায়দারপুর গ্রামের আলফা মালিথার ছেলে ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য আজিবর রহমান (৩৮)। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত দুজনই নাশকতা মামলার আসামি। আজ বুধবার তাদের আদালতে সোপর্দ করা হতে পারে বলে জানায় পুলিশ।
অপরদিকে, চুয়াডাঙ্গার ছাত্রদলের সহসাংগাঠনিক সম্পাদক রাজু আহম্মেদকে (৩১) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার ভোররাতে দেশীয় অস্ত্রসহ ৬২নং আড়িয়া দাখিল মাদরাসা মাঠ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গড়াইটুপি ইউনিয়নের গোষ্টবিহার গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করেন ৯টি বোমা সাদৃশ বস্তু, ৭পিচ জিআই পাইপ, ১২টি কাঠের বাটাম, ৬ পিস লোহার রড, ১৩ জোড়া পুরাতন স্যান্ডেল। গ্রেফতারকৃতসহ কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে দর্শনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। তবে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে চলমান আন্দোলন সংগ্রামকে দমাতে এটা পুলিশের একটি সাজানো ঘটনা।
এদিকে, দুই নেতাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিবৃতি দিয়েছে জেলা ছাত্রদল। জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিন এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমন করার জন্য সরকারি দল ও প্রশাসন একযোগে কাজ করছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের দুই নেতা গ্রেফতার করা হয়েছে। এ গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে জেলা ছাত্রদল। যেখানে গোটাদেশ জুলুমবাজ সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে সেখানে প্রজাতন্ত্রের সেবক তারাই সরকারকে টিকিয়ে রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করে যাচ্ছে। জেলা ছাত্রদল গ্রেফতারকৃতদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়ে অহেতুক গ্রেফতার বন্ধ করার আহবান জানান।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পুরাতন ঝিনাইদহ বাস্টস্ট্যান্ডে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগে সভাপতি মজনুল হক পঁচা। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক শওকত আলী বিশ্বাস, সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাড. বেলাল হোসেন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিন হেলা, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের জেলা কৃষক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তৌহিদুর রহমান চন্দন, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান কবির, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গরীব রুহানী মাসুম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাদী মিলি, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা নুরুন্নাহার কাকলী, জাতীয় মহিলা সংস্থা চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি নাবিলা রুকসানা ছন্দা, জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক গিণি ইসলাম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি চুয়াডাঙ্গা শাখার সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম শাহান, বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ললিত কুমার দাস, জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক আরেফিন আলম রঞ্জু, পদ্মবিলা ইউপি চেয়ারম্যান আলম ম-ল, যুবলীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম আসমান, শেখ সেলিম, টুটুল, চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম, বিএডিসি শ্রমিক নেতা মোমিন মিয়া, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সাহাবুল হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা অর্নব আহমেদ মিঠুন, রাজা, আসিফ, শাকিব, রিফাত, রিমন, জালাল, বাধন, আকাশ প্রমুখ। সার্বিক সহযোগিতা ও ব্যবস্থাপনায় ছিলেন ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর উজ্জ্বল হোসেন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা রাজা মিয়া ও জয়নাল, ইলিয়াস হোসেন।
অপরদিকে, বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের নামে নাশকতা ঠেকাতে চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের আহবায়ক জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দারের নেতৃত্ব অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে নেতা-কর্মীদের নিয়ে অবস্থা কর্মসূচি পালন করেন যুবলীগের নেতৃবন্দ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতা- কর্মীদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে আওয়ামী যুবলীগ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাজদুল ইসলাম লাভলু, যুবলীগ নেতা জুয়েল জোয়ার্দ্দার, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা রামীম হোসেন সৈকত, দিপু বিশ্বাস, তানভীর রেজা টুটুল, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিউল শেখ সুইট, জেলা ছাত্রলীগের সার্বিক সদস্য খালিদ ম-ল, ৫নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আব্দুল আলিম, সাধারণ সম্পাদক মিঠু, সহ-সভাপতি জুয়েল, ৭নং যুবলীগের সভাপতি আসাদুর রহমান আসাদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ বিপ্লব, সাংগঠনিক সম্পাদক আলতাব, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম, শঙ্কুশ চন্দ্র ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজ, মহসিন হক রনি, সুমন, রুবেল, বক্কর, আশা, রাসেল, আরিফ, বাবু, তারিক, সোহাগ, রিংকু, টিপু, কবির, লিপ্টন, হাসান, সজীব, আবুল্লা, তিব্বত, আবুল, জনি, তন্ময়, জনি, সিকদার, সাব্বির, জিতু, জিনারুল, বিপ্লব, শাহিন, লাল্টু, বাচ্চু, জাহিদ, সাকের, আরাফাত, রসূল, রতন, রজত, রনি, ইমরান, নয়ন, অমিত, সান, রকি, ইমন, পারভেজ, সিফাত, মাহফুজ, রাজা, রানা, আবির, শিশির রাজন মিলন, টিটন, আলো, রনি, জনি, বিপ্লব, সোহেল, তুষার, সোহান, আলামিন, ইয়াসিন, রবিন, নয়ন, নাঈম, শাকিল, ইমরান, কাফি, শাকিব, তানজিল, মিশা, আলী, ছাত্রলীগ নেতা ইমাদ ওয়াসিম, শাকিল, সাব্বির, জিম, আরিন, জুয়েল, সবুজ, কবির, শরিফুল, হৃদয়, শরিফ, রুবেলসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ।
অন্যদিকে, চুয়াডাঙ্গায়-১ আসনের নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী যুব মহিলা লীগের সভাপতি আফরোজা পারভিনের নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের নাশকতা ঠেকাতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে যুব মহিলা লীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধ কর্মসূচি বানচাল করা ও সাধারণ জনগণের সাধারণভাবে জীবনযাপনে উৎসাহিত করার জন্য ভ্যান যোগে চুয়াডাঙ্গা জেলার বড় বাজার শহীদ হাসান চত্বর কোর্ট মোড় একাডেমি মোড় কেদারগঞ্জ বাসটার্মিনাল এলাকায় শো-ডাউন ও অবস্থা কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায় জেলা যুব মহিলা লীগের নেতৃবৃন্দের। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলিজা খাতুন, সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি-কাজলী আক্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপ্না খাতুন চিনি, দামুড়হুদা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহেদা খাতুন, আলমডাঙ্গা উপজেলার যুব মহিলা লীগের সভাপতি মনিরা খাতুন, সাধারণ সম্পাদক জাহানারা খাতুন, পূর্ণিমা হালদার, চুয়াডাঙ্গা পৌর ৯নং ওয়ার্ড সভাপতি-আরজিনা খাতুন, সাধারণ সম্পাদক বেবি, সাংগাঠনিক সম্পাদক মিতা রানী, ৬নং ওয়ার্ড সভাপতি রুপালি, সাধারণ সম্পাদক ফাহিমা, ২নং ওয়ার্ড কমিটির অর্থ সম্পাদক শিউলি খাতুন, মিমি খাতুন, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতৃবৃন্দ রাতুল, সাকিব শেখ, মাহফুজ, আকাশ, কুতুব, রিপন, শাওন, জিরান, সেজান ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ চুয়াডাঙ্গা জেলা ও আলমডাঙ্গা উপজেলা যুব মহিলা লীগের নেতৃবৃন্দ।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, জীবননগরে বিএনপির নেতাকর্মীরা গোপনে বৈঠক চলাকালে পুলিশের ধাওয়ায় চার বিএনপির নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় বোমা সাদৃশ্য ৪টি ককটেল, ৪টি টায়ার, ১২টি মোটরসাইকেল ও ১০-১২টা বাঁশের লাঠি উদ্ধার করে। সোমবার রাতে শহরের বসুতিপাড়া উপজেলা বিএনপির নেতা সীমান্ত ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিন ময়েনের বাসার সামনে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
থানাসূত্রে জানায়, আটককৃতরা হলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি ও আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মোল্লা ফয়েজউদ্দিন (৪৩), একই ইউনিয়নের বাসিন্দা ও জীবননগর থানা কৃষক দলের সহ-সভাপতি আরিফুজ্জামান (৪০), বিএনপির কর্মী ও পাথিলা গ্রামের বাসিন্দা ইনামুল শেখ (৩৫) ও রায়পুর ইউনিয়নের বাসিন্দা বিএনপিকর্মী নাইম শেখ (২৫)। পুলিশ জানায়, সোমবার রাতে উপজেলার বিএনপির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ও সীমান্ত ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিন ময়েনের বাসায় বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিএনপির ৩১ অক্টোবর কর্মসূচি বাস্তবায়নে বৈঠক করছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে ধাওয়া করলে বৈঠক ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় উপস্থিত বিএনপির নেতাকর্মীরা পালানোর চেষ্টা করলে ৪ জনকে আটক হয়। এ সময় তাদের নিকট থেকে বোমা সাদৃশ্য ৪টি ককটেল, ৪টায়ার, ১০-১২টা লাঠি ও ১২টা মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
জীবননগর থানার ওসি এসএম জাবীদ হাসান জানান, বিএনপির কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও নাশকতার পরিকল্পনা করছিল তারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে তারা পালিয়ে যায়। এ সময় ৪ জন বিএনপির নেতাকর্মীসহ নাশকতার কাজে ব্যবহারের জন্য রাখা সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ গতকাল মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এছাড়া দর্শনা থানার বিভিন্ন স্থান থেকে নাশকতার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে চারজনকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়। তারা হলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের দোস্তগ্রামের পূর্বপাড়ার মৃত রমজান শিকদারের ছেলে বিএনপির সক্রিয় সদস্য সালমান শিকদার ওরফে ছোট বাবু (২৯), একই উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মৃত শুকুর আলী ছেলে বজলু মোল্লা (৬৮), একই গ্রামের দক্ষিণপাড়ার জামায়াতকর্মী মৃত করিমের ছেলে সুমা (৪০) ও দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি বড় দুধপাতিলা গ্রামের মৃত আলী হোসেনের ছেলে তরিকুল ইসলাম (৩৮)। দর্শনা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা চারজনকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মেহেরপুরের গাংনীর বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপির ছয় নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নাশকতার মামলায় তাদেরকে গ্রেফতার করে মেহেরপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত পুলিশের পৃথক অভিযানে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে-সাহারবাটি গ্রামের রুহুল কুদ্দুসের ছেলে আসমাউল হুসনা (২৫), জালশুকা গ্রামের গোলজেনের ছেলে ইসরাইল হোসেন (৩৬), একই গ্রামের মৃত তারা চাঁদের ছেলে সামসুল হুদা (৫০) ও গোলাম রসুলের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৩৩), গাংনী ঈদগাহপাড়ার নবিছদ্দিনের ছেলে মানিক রসুল (৩০), বড় বামন্দী গ্রামের সৈয়দ আলীর ছেলে হাফিজুর রহমান (৫০)। গাংনী থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, পূর্বের দুটি নাশকতার মামলার আসামি হিসেবে তাদেরকে গ্রেফতার করে মেহেরপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিজ্ঞ আদালতের আদেশে তাদেরকে মেহেরপুর জেলা কারাগারে হাজতবাসে পাঠিয়েছে পুলিশ।
অপরদিকে, বিএনপির ডাকা অবরোধের প্রতিবাদে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা শহরে শান্তি সমাবেশ ও বিক্ষোভ করেছে আওয়ামী লীগ। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মুকুলের নেতৃত্বে গতকাল সকাল আটটা থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। তবে অবরোধের স্বপক্ষে বিএনপি কোন কর্মসূচি নেই। শান্তি সমাবেশটি থানা সড়ক থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে প্রদক্ষিণ শেষে বাসস্ট্যান্ডে সমাবেশের মাধ্যমে অবস্থান নেয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নিয়ে অবরোধের বিরুদ্ধে সেøাগান দিচ্ছেন তারা। সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা আক্তারুজ্জামান বাবু, উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি নবীরুদ্দীন, পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক জাকির হোসেন বাচ্চু, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আমিনুল ইসলাম সেন্টু, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহন ও ছাত্রলীগ নেতা ঝন্টুসহ নেতৃবৃন্দ। একই কর্মসূচির অংশ হিসেবে সন্ধ্যার পরে আক্তারুজ্জামান বাবুর নেতৃত্বে মোটরসাইকেল শোডাউন করা হয় গাংনী শহরে। এদিকে সন্ধ্যায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শিপুর নেতৃত্বে উত্তরপাড়া থেকে এবং এমপিপতœী মহিলা আওয়ামী লীগ নেতা লায়লা আরজুমান বানুর নেতৃত্বে থানা সড়ক থেকে দুটি পৃথক বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণ করে বাসস্ট্যান্ডে সমাবেশের মাধ্যমে সমাবেশে মিলিত হয়। বিক্ষোভ মিছিল থেকে বিএনপি জামাতকে রাজপথে না আসার জন্য সতর্ক করে সেøাগান দেয় নেতাকর্মীরা। সমাবেশে সাবেক ছাত্রনেতা শাহিদুজ্জামান সিপুর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন এমপি পতœী লায়লা আরজুমান বানু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান, গাংনী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনারুল ইসলাম বাবু, বামন্দী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ওবাইদুর রহমান কোমল, উপজেলা শ্রমিক লীগ আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম মনি, যুগ্মআহবায়ক আবুল বাসার, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জুবায়ের হোসেন উজ্জ্বল ও তানভিরুল ইসলাম উজ্জ্বলসহ নেতৃবৃন্দ।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঝিনাইদহে বিএনপির ডাকা ৩দিনের অবরোধ কর্মসূচি চলছে। অবরোধের প্রথমদিন মঙ্গলবার ঝিনাইদহ থেকে দূরপাল্লার কোনো যাত্রীবাহী বাস ছেড়ে যায়নি। তবে সকাল থেকে স্থানীয় কিছু কিছু সড়কে যাত্রীবাহী বাস চলাচল করতে দেখা গেছে। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। এদিকে সোমবার দিনগত রাতে বিএনপি ও জামায়াতের ৪৫জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় শহরের বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। মোড়ে মোড়ে চলছে পুলিশের টহল। তবে আটকের নামে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। জেলার কালীগঞ্জ থেকে আটকদের মধ্যে একজন জামাল উদ্দিন। তিনি উপজেলার দামোদরপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় ইঞ্জিনচালিত আলমসাধু চালক। কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত না বলে দাবি তার পরিবারের। জামাল উদ্দিনের স্ত্রী রাবিয়া বেগম বলেন, ‘সোমবার সারাদিন মাঠে ধানের কাজ করে রাতে ঘুমিয়ে ছিল। গভীর রাতে পুলিশ গিয়ে ধরে নিয়ে আসে। এখন শুনছি মামলা দেবে। কিসের মামলা দেবে বুঝতে পারছি না।’ ওই রাতে কালীগঞ্জ থেকে সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ। যাদের সবাই সাধারণ খেটে-খাওয়া মানুষ বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। তবে কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলছেন, তারা সবাই বিএনপি-জামায়াতের কর্মী-সমর্থক। এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঝিনাইদহ বাসটার্মিনালের একজন কাউন্টার ম্যানেজার বলেন, ‘একটি বাসের অনেক দাম। যদি কেউ ভেঙে দেয় তাহলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই আপাতত বন্ধ রেখেছি।’ ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার আজিম উল আহসান জানান, নাশকতার মামলায় ৪৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ।
পূর্ববর্তী পোস্ট
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.