দেশে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারলে বহু পরিমাণের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে
চুয়াডাঙ্গায় ৫০ শয্যার ইম্প্যাক্ট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি
স্টাফ রিপোর্টার: সুবিধা বঞ্চিতদের পাশাপাশি আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ব্যক্তিদের জন্য উন্নত, আধুনিক ও মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবার লক্ষ্যে চুয়াডাঙ্গায় ৫০ শয্যার ইম্প্যাক্ট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের কেদারগঞ্জে ৮ তলা বিশিষ্ট বেসরকারি এ হাসপাতালের শুভ উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছেলুন জোয়ার্দ্দার বলেন, দেশের মানুষের মৌলিক অধিকারের মধ্যে অন্যতম স্বাস্থ্য। খাদ্য বাসস্থানের পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিভাগকে উন্নত করা একান্ত জরুরি। প্রতিবছর আমাদের দেশের অসংখ্য মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশ যান। এতে প্রচুর পরিমাণে অর্থ ব্যয় হয়। দেশে উন্নতমানের চিকিৎসা ব্যবস্থা করা গেলে এ অর্থ কিছুটা হলেও সাশ্রয় হবে। ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন চুয়াডাঙ্গাবাসীর কথা চিন্তা করে হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার তৈরি করেছে এর জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।
ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি ইনাম আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান, পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন, সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসান, যুক্তরাজ্য ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী জুডি স্ট্যাগ ও বিএমএ’র সভাপতি ডা. মার্টিন হীরক চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। এর আগে ইম্প্যাক্ট হাসপাতালের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন সংগঠনের বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী ডা. হাসিব মাহমুদ। এছাড়াও স্বাগত বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. রেজাউল হক। ইম্পাক্টের স্টাফ নার্স সুলতানা রাজিয়ার সঞ্চালনায় আলোচনায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ইম্প্যাক্টের সিনিয়র প্রশাসক ডা. শাফিউল কবীর। স্বাগত বক্তব্যে ট্রাস্টি ডা. রেজউল হক বলেন, ১৯৯৩ সালে চুয়াডাঙ্গাস্থ নিজের বাড়ির ছোট্ট ঘরে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। ধীরে ধীরে সকলের সহযোগিতায় ইম্প্যাক্ট হাসপাতাল ও ডায়গনিস্টক সেন্টার আজ ৮তলা ভবনে উন্নীত হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সেবিকা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা যেমন করা হয়েছে, তেমনই শুধু চক্ষু চিকিৎসা প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে বিভিন্ন রোগ শনাক্ত করে যাতে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা যায় তার সার্বিক ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সকলের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে এ হাসপাতালটি উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারবে। মনে রাখতে হবে, এই হাসপাতালটি অলাভজনক। সামান্য যে অর্থ নেয়া হয় তা দরিদ্র্য রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার মাধ্যমে ব্যয় করা হয়।
আলোচনা সভায় চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সেলিম উদ্দিন খান ও সাধারণ সম্পাদক তালিম হোসেন, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক রাজীব হাসান কচি, জেলা জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতির সভাপতি হাবিল হোসেন জোয়ার্দ্দার, বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল লতিফ, সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাড. রফিকুল ইসলাম ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম সনি, সাংবাদিক সমিতির সভাপতি নাজমুল হক স্বপন ও সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ, ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মহলদার রিন্টু, সংরক্ষিত কাউন্সিলর শাহিনা আক্তার রুবি ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
১৯৯৩ সালে চুয়াডাঙ্গা শহরের কেদারগঞ্জ এলাকায় ছোট একটি ঘরে ইম্প্যাক্ট হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়। সেবার মান ভালো হওয়ায় দিন দিন রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। অবশেষে ২৯ বছরে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হলো। ইম্প্যাক্ট হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা সেবা চালু থাকবে। জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ, আন্তঃবিভাগ, চক্ষু রোগের যাবতীয় সেবা, নাক, কান, গলা, জন্মগত মুগুর-পা, ঠোঁট কাটা, তালু কাটা ইত্যাদি রোগের অপারেশন, অত্যাধুনিক প্যাথলজি সেবা, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পরিচালিত কনসালটেশন সেবা, শিশুদের আইসিইউ সেবা, উন্নতমানের অপারেশন থিয়েটার ৫টি ও অত্যাধুনিক লিফট সেবাসহ বিভিন্ন ধরণের সেবা কার্যক্রম চালু থাকবে। এছাড়া, বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য বিষয়ক কার্যক্রমের সেবা দিয়ে থাকে।