আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গায় মায়ের ওপর বোমা নিক্ষেপকারী একাধিক মামলার আসামি সেই বোমা কালামকে গাঁজাসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিজ মায়ের ওপর বোমা হামলার পর থেকে সে বোমা কালাম নামে এলাকায় পরিচিত। ৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাতে বেলগাছী বাগানপাড়া থেকে দূর্ধর্ষ কালামকে ১ কেজি গাঁজাসহ আটক করে পুলিশ।
জানা গেছে, উপজেলার বেলগাছী গ্রামের সাহেব আলী মালিথার ছেলে কালাম (৪০)। কালাম দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা করে আসছেন। নিজের বাড়ির সামনে সরকারি জায়গা দখল করে করেছে ব্যক্তিগত অফিস। সেখানে বোমা কালাম সাউন্ডবক্সে লাউড ভলিউমে মিউজিক বাজিয়ে মাদকদ্রব্য বিক্রি করে আসছেন বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
গত ৬ ডিসেম্বর রাতে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ তাকে গাঁজাসহ আটক করে। বুধবার তাকে সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ইতঃপূর্বেও কালামকে মাদক, ডাকাতি, ছিনতাই ও চুরি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিলো।
বেশ কয়েকবছর আগে তার মা তাকে অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকতে নিষেধ করায় তিনি তার মাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হাতবোমা ছোড়ে। ভাগ্যক্রমে তার মা বেঁচে যান। সেই থেকে তিনি বোমা কালাম নামেই পরিচিত। এরপর থেকে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক বিক্রি, অস্ত্র, মিছিলে বোমা নিক্ষেপসহ বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে তার নামে। বছর খানেক পূর্বে জেল থেকে বাড়ি এসে আবারও গাঁজা বিক্রি শুরু করে। গ্রামের কেউ নিষেধ করলে তাকে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় বলে অভিযোগ আছে।
এছাড়াও, আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মাদকসহ তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে। পরে থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। মাদক মামলায় কয়েক মাস জেলে থাকার পর তিনি জামিনে হাজতমুক্ত হয়ে বাড়ি ফেরেন। তারপর থেকে কিছুদিন চুয়াডাঙ্গা শহরে ও পরে বেলগাছিতেই অবস্থান করে আসছিলেন। ২০১৭ সালের ১০ আগস্ট আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার নিজ ঘরের বিছানার নিচ থেকে একটি ওয়ান শুট্যারগান উদ্ধার করে। ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে আলমডাঙ্গা কলেজপাড়ার নৌকার প্রতীকের মোটরসাইকেল মিছিলে ককটেল হামলা মামলার এজাহারনামীয় আসামি ছিলেন বোমা কালাম। ওই ঘটনার কয়েকদিন পর বোমা কালামকে বিজিবি গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের কিছুদিন পর বাড়ি এসে শুরু করে মাদক ব্যবসা। কয়েক বছর পূর্বে আটক কালাম তার নিজের মাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা ছুঁড়ে মারলে বোমাটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পাশেই বিস্ফোরিত হয়। সৌভাগ্যবশত বেঁচে যান তার মা। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় তিনি বোমা কালাম হিসেবে চিহ্নিত। ২০১২ ও ২০১৬ সালে তার বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানায় আরও দুটি মামলা দায়ের হয়।