স্টাফ রিপোর্টার: দীর্ঘ ১৬ বছর ক্ষমতায় মসনদে থাকা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরদের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আলী মুনছুর বাবুসহ ৬৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দর্শনা পরানপুর গ্রামের মসজিদপাড়ার জহির উদ্দীনের ছেলে রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে দর্শনা থানায় ৬৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি করেন। এতে আরও ৮০-৯০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাবস্থায় দর্শনা পরানপুর মসজিদপাড়ায় আমার বাসভবনের সামনে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। আমি একজন সাধারণ নাগরিক। ওইদিন সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার দিকে আমার নিজবাড়ি ১নং আসামির নির্দেশে ২নং ও ৩নং আসামি আমাকে হত্যার উদ্দেশে আমার বাড়িতে আসামিদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে। একই সাথে বেশ কয়েকটি ককটেল বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আমার বাড়িতে থাকা নগদ ৭০ হাজার টাকা এবং আমার স্ত্রীর ব্যবহার করা দুই ভরি পরিমাণ সোনার চেইন ও হাতের বালা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় আমার স্ত্রীকে মারধর করে। সেই সময় আমার জীবন রক্ষার্থে আমার বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হাতে থাকা আগ্নেয়াঅস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র রামদা-চাপাতি দিয়ে আমাকে ধাওয়া করে আমি কিছু দূর পালিয়ে যাওয়া অবস্থায় পড়ে যায়। পরে সন্ত্রাসিরা আমাকে ধরে ফেলে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্য ১নং আসামির বাসভবনে নিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে এবং অমানুষিকভাবে রাতভর নির্যাতন করতে থাকে। নির্যাতনের কারণে আমি অজ্ঞান হয়ে যায়; এরপর আমার জ্ঞান ফেরার পর দেখি আমার ডান ‘পা’ ভেঙে গেছে। ১নং আসামির বাস ভবনে আমার পরিবারের লোকজন আমাকে উদ্ধার করতে গেলে আসামিরা পা ভাঙা অবস্থায় আমাকে পরদিন ৮ ডিসেম্বর সকালে দর্শনা থানায় পুলিশের কাছে দেয় এবং পুলিশ আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে চুয়াডাঙ্গা আদালতে সোপর্দ করে। দীর্ঘদিন যাবৎ কারাভোগ করি। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হয়রানি, নির্যাতন ও জীবননাশের হুমকি ও আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতার কারণে আমি এজহার ও মামলা করিতে সাহস পায়নি। মঙ্গলবার সন্ধায় দর্শনা থানায় মামলা দায়ের করি।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, দর্শনা পুরাতন বাজার এলাকার আব্দুল ওহাব ওস্তগারের ছেলে ফারুক হোসেন, একই এলাকার মো. মুন, শ্যামপুরের তনু মল্লিকের ছেলে আব্দুল হান্নান ছোট, ঈশ্বরচন্দ্রপুরের বেদের আলীর ছেলে মো. মিঠু, আজমপুরের নান্নুর ছেলে মো. রাসেল (৩৫), একই এলাকার হারুনের ছেলে অপু, আব্দুল কাদেরের ছেলে আব্দুল জলিল, আব্দুল জলিল, মৃত ফজলুল করিমের ছেলে ফরাদ হোসেন, মৃত শহর আলী মোল্লার ছেলে রবিউল হক সুমন, দক্ষিণচাঁদপুরের কুটে মল্লিকের ছেলে জয়নাল আবেদীন নফর, জিয়ার ছেলে মো. মিল্লাত, আজিবরের ছেলে শরিফুল ইসলাম, ছবিলের ছেলে তপু, মৃত অপু জোয়ার্দ্দারের ছেলে হবা জোয়ার্দ্দার, মৃত কাউসার আলীর ছেলে মামুন শাহ, হুজুর আলীর ছেলে মাসুম, কেরুজ মিলপাড়ার তহির জোয়ার্দ্দারের ছেলে মো. মাসুদুর, কেরু কর্পোরেশন লাইন এলাকার মোটা সাইদ, কেরু ইউনিয়ন লাইন এলাকার মো. দাউদ, ঈশ্বরচন্দ্রপুরের ইয়াইহার ছেলে মো. ডালিম, হাশেমের ছেলে খাইরুল, আমিরের ছেলে মো. রাশেদ, ইসলামবাজার এলাকার মৃত লুৎফর রহমানের লাল্টু, দুলালের ছেলে মো. জুয়েল, মৃত সুন্নত আলীর ছেলে ইদ্রিস আলী, মৃত মজিবর রহমানের গোলাম ফারুক আরিফ, মৃত রওশন কাসারীর ছেলে রহমান, কেরু মিলপাড়া এলাকার মাসুদুর রহমান মাসুদের ছেলে সৌমিক হাসান রুপম, চটকাতলার কালু কসাইয়ের ছেলে মো. শরীফ, মোবারকপাড়ার আমির হোসেনের ছেলে মো. রানা, মৃত হানিফের ছেলে মো. আক্তার, ইমারতের ছেলে মো. আশিক, মো. মারুফ বিল্লাল জিসান, মো. পিয়াস, আমির হোসেনের ছেলে মো আব্দুল মান্নান, মৃত করিমের ছেলে শেখ আসলাম তোতা, মেমনগরের জমির ছেলে মো. ইকবাল, আফসার আলীর ছেলে শাহ আলী, রমজান আলীর ছেলে ফয়সাল, রমজান আলীর ছেলে ফলেহার, রামনগরের মৃত ডাবির ছেলে মো. নোমান, খেদেরের ছেলে মো. রেজাউল, মনু সর্দারের ছেলে পিকু, আফসার আলীর ছেলে ছলেমান, পরানপুরের ইজার ছেলে সানি, পুরাতন বাজার স’মিলপাড়ার আনোয়ার হোসেনের ছেলে জাকারিয়া আলম, দর্শনা বাসস্ট্যান্ড সিঅ্যান্ডবিপাড়ার আবু তাহেরের ছেলে আব্দুল হাকিম, বদর উদ্দীনের ছেলে ইসমাইল হোসেন, মো. হায়দার আলী, দর্শনা বাসস্ট্যান্ড মাস্টারপাড়ার টিপু ডাক্তারের ছেলে সাধন, মান্দার ডাক্তারের ছেলে শহীদুল ইসলাম, শ্যামপুর হিন্দুপাড়ার রুস্তম আলী, আমতলাপাড়ার মো. হিরন, কলেজপাড়ার ছোট’র ছেলে মোহাম্মদ আলী, পারভেজ, কেরু হাসপাতালপাড়ার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে সুমন, আব্দুর রশিদের ছেলে ফারদিন সোহেল, মৃত বাদশার ছেলে সান্টুর কেরু স্কুলপাড়ার শাহ আলম ড্রাইভার, হঠ্যাৎপাড়ার আব্দুস সাত্তারের ছেলে আব্দুস সালাম, বড়দুধপাতিলা দক্ষিণপাড়ার ইউসুফের ছেলে সুমন, কেরু প্রাইমারি স্কুলপাড়ার আজিজুর রহমানের ছেলে রিপন, খাদিমুল হকের ছেলে আশরাফুল ইসলাম, শ্যামপুর জোড়াবটতলাপাড়ার রবজেল মিয়া বিল্লাল হোসেন, দর্শনা থানাপাড়ার মৃত মনজুর ছেলে ফাহিম, আনোয়ারপুরের ফৌজোর ছেলে নাসির ও আজিজ ড্রাইভার, চুয়াডাঙ্গা। এ বিষয়ে দর্শনা থানার ওসি তদন্ত শফিউল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে দর্শনা থানায় একটি এজাহার দাখিল হয়েছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.