আব্দুস সালাম: ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার ‘ঘ’ ইউনিটের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে গতকাল। এর আগে প্রকাশ করা হয় ক, খ, ও গ ইউনিটের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এবার ভর্তিযুদ্ধে চুয়াডাঙ্গার শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের অবস্থান রয়েছে অনেকটা শক্ত অবস্থানে। মেধার ভিত্তিতে সরাসরি ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে এই ইউনিটের ১৬জন। এছাড়াও অপেক্ষমাণ তালিকায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে ৪জন। এর মধ্যে সারাহ জেবিন ‘খ’ ইউনিট তথা মানবিক অনুষদে সারা দেশের মধ্যে ১০ম স্থান অধিকার করে চমকে দিয়েছে। ‘ঘ’ ইউনিট তথা সমন্বিত অনুষদে মানবিক বিভাগ থেকে ৭ম স্থানে রয়েছে সারাহ জেবিন। ‘ক’ ইউনিট তথা বিজ্ঞান অনুষদে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে ৯জন। এছাড়াও অপেক্ষমাণ তালিকায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে ৪ জন। ‘ঘ’ ইউনিট তথা সমন্বিত অনুষদে মেধার ভিত্তিতে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে দুজন। অপেক্ষমাণ তালিকায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে ১জন। ‘গ’ ইউনিট তথা বাণিজ্য অনুষদে মেধা তালিকায় সরাসরি ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী একজন। যে ইউনিটগুলোর ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। ভর্তির যোগ্যতা অর্জনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তেও পারে।
‘খ’ ইউনিটে যারা কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে তাদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদরের দক্ষিণ গোরস্থানপাড়ার মোহা. আশরাফ-উল-আলম ও মোছা. নাজমা খাতুনের মেয়ে সারাহ জেবিন। মেধা তালিকায় তার স্থান: ১০, চুয়াডাঙ্গা সদরের এতিমখানাপাড়ার মো. মোমতাজ উদ্দিন ও মোছা. আংগুরা খাতুনের ছেলে মো. আলিফ হাসান। মেধা তালিকায় তার স্থান: ২৪১। আলমডাঙ্গার পোলতাডাঙ্গার মো. ইউনুস ও মোছা. রাশিদা খাতুনের ছেলে হাসান আল নোমান। মেধা তালিকায় তার স্থান: ৩৩৮। দামুড়হুদার জয়রামপুর হাজিপাড়ার মো. জামাল উদ্দীন ও শাহানাজ পারভীন ছেলে মো. ইমন আলী। মেধা তালিকায় তার স্থান: ৫০৩। চুয়াডাঙ্গা সদরের থানা কাউন্সিলপাড়ার মো. মাছুদুর রশীদ মাছুম ও মোছা. রোমানা সুলতানা রুমার মেয়ে মাহামুদা তাবাছুম আঁচল। মেধা তালিকায় তার স্থান: ৬০০। আলমডাঙ্গা পাঁচকমলাপুরের মো. আসলাম হোসেন ও মোছা. আনোয়ারা খাতুনের ছেলে মো. দেলোয়ার হোসেন। মেধা তালিকায় তার স্থান: ৭৩৬। চুয়াডাঙ্গা সদরের হাজরাহাটি, ব্রিজমোড়ের মো. শুকুর আলী ও মোছা. তাছলিমা খাতুনের ছেলে মো. সোহেল তাজ। মেধা তালিকায় তার স্থান: ৭৭০। চুয়াডাঙ্গা সদরের নতুন ভা-ারদহের মো. রবিউল ইসলাম ও মোছা. সাবিনা ইয়াসমিনের ছেলে মো. তুহিন আলম। মেধা তালিকায় তার স্থান: ৭৮০। চুয়াডাঙ্গা সদরের আলিয়ারপুরের মো. রেজাউল হক ও মোছা. বিলকিস পারভীনের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস রিচি। মেধা তালিকায় তার স্থান: ৮৩২। দামুড়হুদার দেউলীর মো. জাকির হোসেন ও মোছা. রোকেয়া খাতুনের মেয়ে মোছা. তাসলিমা আক্তার জুঁই। মেধা তালিকায় তার স্থান: ৮৯৯। চুয়াডাঙ্গা সদরের বোয়ালমারীর মো. বদর উদ্দিন ও মোছা. রেকসনার মেয়ে মোছা. হোসনে আরা। মেধা তালিকায় তার স্থান: ১০৫৮। জীবননগরের সন্তোষপুর, স্কুলপাড়ার মো. হাবিবুর রহমান ও মাজেদা খাতুনের ছেলে ফয়সাল আহম্মেদ। মেধা তালিকায় তার স্থান: ১৩৯৩। আলমডাঙ্গার হাড়োকান্দির আমিরুল ইসলাম ও মোছা. ইসমত আরার মেয়ে উম্মে নোশিন আরা। মেধা তালিকায় তার স্থান: ১৪৩০। দামুড়হুদার জিরাটের খন্দকার নুরুজ্জামান ও হোসনে আরার ছেলে খন্দকার হাদিউজ্জামান আতিক। মেধা তালিকায় তার স্থান: ১৫০৩। চুয়াডাঙ্গা সদরের গহেরপুরের মো. নাসির উদ্দীন ও মোছা. সেলিনা বেগমের ছেলে মো. শাহাবুল হোসেন। মেধা তালিকায় তার স্থান: ১৬৯৯। চুয়াডাঙ্গা সদরের বোয়ালমারী পূর্বপাড়ার মো. রেজাউল করিম ও মোছা. সাজেদা পারভীনের মেয়ে মুশতুরাইয়া জান্নাত আকসা। মেধা তালিকায় তার স্থান: ১৭১০। অপেক্ষমাণ সুবিধাজনক তালিকায় রয়েছে দামুড়হুদা জয়রামপুরের মো. আক্কাছ আলী ও রাশিদা খাতুনের মেয়ে মোছা. আল আসমাউল হুসনা। মেধা তালিকায় তার স্থান: ১৮৫৬। চুয়াডাঙ্গা সদরের সরোজগঞ্জের মো. আব্দুল মোত্তালিব ও মোছা. লায়লা আঞ্জুমানের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম। মেধা তালিকায় তার স্থান: ১৯০৯। দামুড়হুদার পারকৃষ্ণপুরের মো. আব্দুর রাজ্জাক ও মোছা. শিল্পী খাতুনের ছেলে মো. শীলন আলী। মেধা তালিকায় তার স্থান: ১৯৪৬। চুয়াডাঙ্গা সদরের সুজায়েতপুরের মো. আতিয়ার রহমান ও মোছা. আনুরা বেগমের ছেলে মো. আনিছুর রহমান। মেধা তালিকায় তার স্থান: ১৯৬৪।
‘গ’ ইউনিট তথা বাণিজ্য অনুষদে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে জীবননগর উপজেলার উথলী সন্তোষপুরের জহুরুল ইসলাম ও রাজিয়া সুলতানার মেয়ে সোহানা সুলতানা। তার মেধাক্রম ৫৯৮। ‘ঘ’ ইউনিট তথা সমন্বিত অনুষদে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ঐশি। সে ৮৩তম অবস্থানে রয়েছে। দামুড়হুদা উপজেলার রামনগরের হাসানুজ্জামান ও শিউলী খাতুনের মেয়ে সানজানা জামান জিমের মেধাক্রম ১১৬৮।
‘ক’ ইউনিট তথা বিজ্ঞান অনুষদে মেধা তালিকায় ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে দামুড়হুদা দশমীপাড়ার মো. আসমত আলী বিশ^াস ও মোছা. শামসুন্নাহারের ছেলে আসিফ আসমত নিবিড়। মেধাক্রম ৫৫০। আলমডাঙ্গা বাবুপাড়ার মো. ইসমাঈল মাহমুদ ও মোছা. রওশন আরার ছেলে মো. ফরহাদ মোনায়েম। মেধাক্রম ৮৮৩। চুয়াডাঙ্গার এতিমখানাপাড়ার মো. শাহীন আকতার ও দীপা ইয়াসমিনের ছেলে মো. সাহরিয়ার রাফাত। মেধাক্রম ৯৩১। আলমডাঙ্গা উপজেলার কয়রাডাঙ্গার মো. নিয়ামত আলী ও সেলিনা রহমানের ছেলে মো. আহনাফ তাহমিদ। এর মেধাক্রম ১০২৮। বুয়েটেও তার যোগ্যতার স্বাক্ষর রয়েছে। বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষায় তাহমিদের অবস্থান ৫৫০তম। নিয়ামত আলী অবশ্য বর্তমানে যশোরের বাসিন্দা। চুয়াডাঙ্গা বেলগাছির মো. আনোয়ার হোসেন ও মোছা. মঞ্জুয়ারা খাতুন তুলির ছেলে শেখ আল আরাফাত। তার মেধাক্রম ১২০১। জীবননগর উথলী পূর্বপাড়ার মো. মশিয়ার রহমান ও মোছা. শলোকা পারভীনের ছেলে মো. মোর্শেদুর রহমান শান্ত। তার মেধাক্রম ১২৫৩। চুয়াডাঙ্গা গোরস্থানপাড়ার মোহা. খলিলুর রহমান ও মোছা. সেলিনা খাতুনের ছেলে নূরে আলম সিদ্দিকী প্রিন্স। তার মেধাক্রম ১২৯১। বুজরুকগড়গড়ি মাদরাসাপাড়ার আল ইমরান ও বিলকিছ আরার মেয়ে ইসরাক জাহান মায়া। মেধাক্রম ১৪২৯। চুয়াডাঙ্গা কোর্টপাড়ার মো. মহসীন আলী ও মোছা. আঞ্জুমান আরার ছেলে মুহতাসিম ফাইয়াজ হামিম। মেধাক্রম ১৭২২। অপেক্ষমাণ তালিকায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে চুয়াডাঙ্গা বেলগাছির শহিদুল ইসলাম ও ইসমত আরার ছেলে সৈকত ইসলাম। মেধাক্রম ৩০৮৭। চুয়াডাঙ্গা সিনেমাহলপাড়ার মো. মাহফুজুর রহমান মিনার ও লাভলী আক্তারের ছেলে রাফিদ শাহরিয়ার। মেধাক্রম ৩৩১৬। দামুড়হুদার মো. কবির হোসেন ও মোছা. জহুরা খাতুনের ছেলে তানভির আহমেদ। তার মেধাক্রম ৩৪২৯ এবং চুয়াডাঙ্গা রেলপাড়ার মো. শরিফুল ইসলাম ও মোছা. মাহবুবা খাতুনের ছেলে মুনতাসির বিল্লাহ সিফাত। তার মেধাক্রম ৩৭৩৬।
গত ৫ বছরের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করে অপেক্ষমাণ তালিকার সুবিধা স্থান বিবেচনা করা হয়েছে। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় দেশের সকল মেধাবী শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। জেলা বা উপজেলা ভিত্তিক কোনো কোটা নেই। সারাহ জেবিন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে কলা অনুষদে ভর্তি যুদ্ধে সারা দেশের মেধাবীদের মধ্যে রয়েছে ১০ম স্থানে। সমন্বিত অনুষদে রয়েছে ৭ম স্থানে। জেবিনের পিতা আশরাফ উল আলম আলমডাঙ্গার সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে কর্মরত। মাতা নাজমা খাতুন কাথুলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। জেবিন এক প্রশ্নের জবাবে বলেছে, পাঠ্যপুুস্তকের পাশাপাশি সকল বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ইন্টারনেটের সাহায্য নিয়েছে। মন দিয়ে পড়েছে। দেশি-বিদেশি সংবাদপত্রসহ উপন্যাস পড়ার অভ্যাস শিক্ষার্থীদের অনেকদূর এগিয়ে নিতে পারে। বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য একাদশ শ্রেণি থেকেই প্রস্তুতি নেয়া উচিত।