টানা ১৩ দিন পর শিশুর গলা থেকে বের করা হলো লোহার ওয়াশার
চুয়াডাঙ্গায় চিকিৎসক আল ইমরান জুয়েলের অস্ত্রোপচার ছাড়াই সাফল্য
আফজালুল হক: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হাতিভাঙ্গা গ্রামের শিশু ওয়ালিদ (৪) নামের এক শিশুর গলার ভেতরে আটকে থাকা লোহার একটি ওয়াশার অপসারণ করেছেন চিকিৎসক। গত সোমবার দুপুরে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিগত চেম্বারে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের নাক, কান ও গলা রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আল ইমরান জুয়েল কোনো অস্ত্রোপচার ছাড়াই ওয়াশারটি অপসারণ করেন। শিশু ওয়ালিদ চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের হাতিভাঙ্গা গ্রামের পশ্চিমপাড়ার কৃষক জামাল উদ্দিনের ছেলে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে ওয়ালিদ সবার ছোট।
স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে শিশু ওয়ালিদের সঙ্গে আসা তার চাচাতো ভাই আশিকুর রহমান দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, গত ২৭ রমজান খেলার সময় সবার অজান্তেই শিশু ওয়ালিদের গলায় লোহার ওয়াশারটি আটকে যায়। সেই দিনই গলা ব্যথার কথা জানিয়ে হঠাৎ বমি করতে থাকে সে। এরপর থেকেই খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে যায় তার এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। ঈদের পরদিন ওয়ালিদকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানকার চিকিৎসক জানান, তার শিরায় টান লেগেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা নিলেই সুস্থ হয়ে যাবে। তখন কিছুটা সুস্থবোধ করায় তিনদিন পর সদর হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নেয়া হয়। এই কদিন পানি ছাড়া কোনো কিছুই সে খায়নি। সোমবার সকালে আবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ওয়ালিদকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সড়কের বেসরকারি স্বাস্থসেবা প্রতিষ্ঠান হেলথ এইড মেডিকেল সেন্টারে নাক, কান ও গলা রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আল ইমরান জুয়েলের ব্যক্তিগত চেম্বারে নেয়া হয়। চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখতে পান তার গলার মধ্যে লোহা জাতীয় কিছু আটকে আছে। পরে দক্ষতার সঙ্গে অস্ত্রোপচার ছাড়াই আটকে থাকা লোহার ওয়াশারটি অপসারণ করেন। তিনি আরও বলেন, আমরা ভাবতেও পারেনি ওয়ালিদের গলার মধ্যে লোহার ওয়াশার আটকে ছিলো। শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ অনেক জায়গায় চিকিৎসা করিয়েছি। কেউ ধরতে পারেনি। লোহার ওয়াশারটি দেখে আমরা হতভাগ হয়ে যায়। সবশেষ রাতে আমিও খোঁজ নিয়েছি ওয়ালিদের। সে এখন পুরোটায় সুস্থ। হাঁটা চলাফেরাসহ স্বাভাবিকভাবে খাওয়া-দাওয়া করছে। ডা. আল ইমরান জুয়েল দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, সোমবার সকালে শিশুটিকে আমার ব্যক্তিগত চেম্বারে নিয়ে আসে পরিবারের সদস্যরা। অসুস্থতার কারণে শিশুটির ঘাড় কাত হয়ে পড়েছিলো। পরে আমি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখতে পাই শিশুটির গলার মধ্যে একটি লোহার গোল জাতীয় জিনিস আটকে আছে। পরে আমার সহযোগিদের নিয়ে বিনা অস্ত্রোপচারে লোহার ওয়াশারটি অপসারণ করতে পেরেছি। দীর্ঘ ১৩ দিন শিশুটির গলায় আটকে ছিলো ওয়াশারটি। আল্লাহর রহমতে কোনো দুর্ঘটনা ছাড়াই শিশুটির গলা থেকে ওয়াশারটি অপসারণ করা হয়েছে। শিশুটি এখন সুস্থ আছে।