জেলার একজনও শীতে যাতে দুর্ভোগের শিকার না হন সেদিকে আমাদের বিশেষ নজর রাখা দরকার
চুয়াডাঙ্গা জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভার সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান
স্টাফ রিপোর্টার: জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শীতার্তদের দুর্ভোগ লাঘবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ইতোমধ্যেই শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলে জেলার একজন মানুষও শীতে কষ্ট পাবে না। এদিকে আমাদের সকলকেই বিশেষভাবে আন্তরিক হওয়া জরুরি। শীতবস্ত্র শীতের মধ্যেই বিতরণ করা দরকার। শীতের শেষে বিতরণ করলে তা কাজে লাগে না। গতকাল রোববার বেলা ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক। তিনি সমন্বয় কমিটির সদস্য তথ্য জেলার সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বক্তব্য শোনেন। কোথাও কোনো সমস্যা থাকলে তা দ্রুত নিরসনেরও পথ বাতলে দেন। আলোচনায় সর্বাধিক গুরুত্ব পায় শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং শহীদ আবুল কাশেম সড়কের রেল লেবেল ক্রসিঙে ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রসঙ্গ। সড়কের একাডেমি মোড় থেকে বাস টার্মিনালের নিকট পর্যন্ত নির্মানিতব্য ফ্লাইওভারের জন্য সড়কের ধারের বেশ কিছু গাছ কাটার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ ইতোমধ্যেই ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই ফ্লাইওভার নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিযুক্তির লক্ষ্যে দরপত্র আহ্বান করা হবে। সভার সভাপতি চুয়াডাঙ্গার শিক্ষার মান বৃদ্ধির বিষয়ে বিষেভাবে গুরুত্বারোপ করে জেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বেশি বেশি আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জেলার দুটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুদের তালিকা ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত করা হয়েছে। কিছু অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে। এটা যাতে পরবর্তিতে না হয় সেদিকে বিশেষভাবে নজর রাখতে হবে। একই শিক্ষার্থীর একাধিক আবেদন কীভাবে হয়েছে তা দেখার জন্য প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি করতে হবে। কিছু অভিভাবকের অনৈতিকতার জন্য বিব্রতকর অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। অনিয়ম মেনে নেয়া হবে না। সভায় পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক বক্তব্যে বলেন, জেলার আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে। আসন্ন বড়দিন যাতে যথযথভাবে উদযাপন হয় সেদেকি যেমন বিশেষভাবে নজারদারি রাখা হচ্ছে, তেমনই থার্টিফাস্ট নাইটেও যাতে কোনভাবে উশৃঙ্খলের সুযোগ না পায় সেদিকেও নজর রাখা হবে। সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাত হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, যেহেতু চুয়াডাঙ্গায় তীব্র শীত সেহেতু আমাদের সকলকেই শীতজনিত রোগ থেকে মুক্ত থাকার জন্য বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। শিশু ও বয়স্কদের প্রতি যত্মবান হওয়া খুবই জরুরি। তাছাড়া যারা এখনও বুস্টার ডোজ নেননি তাদেরকে দ্রুত তা নিতে হবে। যারা তা নিয়েছেন সরকার ঘোষণা দিলে তাদেরকে দ্রুত সময়ের মধ্যেই ৪র্থ ডোজ টিকা নিতে হবে। সিভিল সার্জনের পাশাপাশি সদর হাসপাতালের হাল চিত্র তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন আবাসিক মেডেকেল অফিসার ডা. ফতে আকরাম। তিনি হাসপাতালের কিছু সমস্যার চিত্র তুলে ধরে গণপূর্ত বিভাগের চুয়াডাঙ্গার নির্বাহী প্রকৌশলীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তা দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধানের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, দালাল চোরের উৎপাত হ্রাসে ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ পুলিশি নজরদারি বৃদ্ধি প্রয়োজন। এছাড়াও সভায় বিভিন্ন দফতরের বিষয়ে চলমান এবং পরবর্তি পদক্ষেপের বিষয়সমূহ উঠে আসে। পতিত জমিতে আবাদের পুনঃ আহ্বান জানিয়ে জেলা প্রশাসক জেলার কৃষি সম্প্রাসরণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক বিভাষ চন্দ্র জেলায় পতিত জমিতে আমাদের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। জেলা প্রশাসক জেলার বিসিক শিল্পনগরীতে আবাদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দেন।
সভায় জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির প্রায় সকল সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সভায় গতসভার কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাদিয়া আফরীন। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উপস্থাপন করে বক্তব্য রাখেন দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মুনসুর বাবু, জীবননগর উপজেলা চেয়ারম্যানসহ অনেকে।