জেঁকে বসেছে শীত : দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়

শীতের তীব্রতা বাড়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষজন
স্টাফ রিপোর্টার: চলতি মরসুমে অগ্রহায়ণের শেষে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে। হাড় কাঁপানো শীতে চুয়াডাঙ্গার জনপদের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত। তীব্র শীত উপেক্ষা করে কাজের সন্ধানে বের হওয়া খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছেন বিপাকে। হেডলাইট জ্বালিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। হিম বাতাসে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে শিশু, বৃদ্ধ আর ছিন্নমূল মানুষ। আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছেন অনেকে। চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ২৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ২৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো টেকনাফে ৩০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গায় বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের দেখা মিললেও কমেনি শীতের দাপট। ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ এলাকার মানুষ। তীব্র শীতের কারণে হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা হাসপাতালে ভিড় করছে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে। গত ১০ দিনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে শিশুসহ এক হাজারের বেশি রোগী ঠান্ডাজনিত কারণে আউটডোরে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন তত্ত্বাবধায়ক ডা. আতাউর রহমান।
জেলা শহরের হোটেল কর্মচারী জাহাঙ্গীর বলেন, সকাল থেকেই হোটেলে কাস্টমারের চাপ সামলারে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ কারণে ভোরেই কাজে চলে আসতে হচ্ছে। পানিতে হাত দিলে মনে হচ্ছে হাত অবশ হয়ে যাচ্ছে। আঙুলগুলো নাড়ানো যাচ্ছে না। তারপরও কাজ করছি। ঠান্ডার ভয় করলে মালিক মজুরি দেবে না।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান হক জানান, শুক্রবার সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এটি।
এদিকে শীতের তীব্রতা বাড়ায় সকালে কাজে বের হতে দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষজন। ঠান্ডা বাড়ায় কাপড়ের দোকানগুলোতে শীতের পোশাক কেনার চাহিদাও বেড়েছে। শীতের তীব্রতায় এ জেলার দরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষেরা দারুন কষ্টে পড়েছেন। কনকনে শীতের কারণে শরীর সহজে গরম হচ্ছে না। হাত-পা হিম হয়ে আসছে। দুর্বিষহ শীতের ছোবলে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ, ছিন্নমূল, দরিদ্র জনগোষ্ঠী। শীতার্ত জনগণ শীত নিবারণের আপ্রাণ চেষ্টা করছে। শিশু ও বৃদ্ধরা এই শীতে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। শীতে খেটে খাওয়া ও দিন মজুরদের বেশি বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। সকালে প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হয়নি।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শুক্রবার সকালে দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল চুয়াডাঙ্গায়। শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে আরও কয়েকদিন লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। কারণ আগামী কয়েকদিন দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আগামী শনি ও রোববার অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এ দুদিন সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলেও জানান এ আবহাওয়াবিদ। আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির জানান, শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এ সময়ে সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More