জীবননগরে যুবদল নেতার বিরুদ্ধে হাসপাতালের ডাক্তারকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ

জীবননগর বুরো: চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাসকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে যুবদল নেতা ইক্তাজুল রহমানের বিরুদ্ধে। গত শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে কী কারণে হামলা হয়েছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানা না গেলেও একটি সূত্র বলছে, চাঁদা না দেয়ায় এ ঘটনা ঘটতে পারে।
আহত চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস বলেন, স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চেম্বার শেষে শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টাফ কোয়ার্টারে ফিরছিলেন তিনি। রাত ১১টা ৩৭ মিনিটে হাসপাতাল চত্বরে পৌঁছালে মোটরসাইকেল থেকে নেমে তাকে মারধর শুরু করেন জীবননগর পৌর যুবদলের ১নং সদস্য ইকতার রহমান। বিদেশি টর্চলাইট দিয়ে উপর্যুপরি তার মুখে আঘাত করেন ওই যুবদল নেতা। এতে তার মুখে রক্তজমাট বেধে ও ফুলে আহত হন। ডা. জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস আরও জানান, বিষয়টি তিনি তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় বিএনপির নেতাদের জানিয়েছেন। তারা কী ধরণের ব্যবস্থা নেয়, সেটা দেখা তিনি পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মকবুল হাসান বলেন, হামলার বিষয়ে মৌখিকভানে জেনেছি। আমরা এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ বলেন, হামলার বিষয়টি জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আমাকে জানিয়েছেন। আমি ঘটনাটি চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার, জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) অবহিত করেছি। আর এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই চিকিৎসককে জীবননগর থানায় একটি অভিযোগ করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত পৌর যুবদল নেতা ইকতার রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি স্থানীয়ভাবে বসে মীমাংসা করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজন ছিলেন। একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিলো।
এদিকে, হাসপাতাল চত্বরে চিকিৎসকের ওপরে হামলার ঘটনায় চরম আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একজন সিনিয়র স্টাফ নার্স বলেন, ‘প্রতিনিয়ত হাসপাতালের স্টাফদের ওপর হুমকি-ধামকি, অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়। এবার চিকিৎসকের ওপরে হামলা হলো। কয়েকদিন আগে জরুরি বিভাগে ডা. রাশেদকে লাঞ্ছিত করা হয়েছিলো। তিনি ভয়ে সাহস করে কিছু করতে পারেননি। এসব মিলিয়ে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। মানুষের সেবা দিতে এসে যদি নিজেরাই হামলার শিকার হই, তাহলে চাকরি করা কষ্টকর হয়ে যাবে।’

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More