স্টাফ রিপোর্টার: আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফের উত্তাপ ছড়াচ্ছে রাজনীতি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে শুরু করেছে নির্বাচনি প্রস্তুতি। দলকে ঐক্যবদ্ধ করাসহ চলছে ইশতেহার তৈরির কাজও। অন্যদিকে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে রাজপথে আন্দোলনের চিন্তা করছে। শিগগিরই ঘোষণা করবে আন্দোলনসহ সার্বিক কার্যক্রমের রূপরেখা। বিএনপির এসব কর্মকা-ের ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখছে আ.লীগ। তত্ত্বাবধায়কসহ মীমাংসিত ইস্যুতে মাঠ দখলের কোনো সুযোগ দেবে না দলটি
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তৃণমূল পর্যন্ত দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। চলছে ইশতেহার তৈরির কাজ। পাশাপাশি বিএনপির কর্মকা-ের ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন তারা। নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধীদের মাঠ দখলের কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গুজব-অপপ্রচারের জবাব দিতে প্রস্তুত করা হচ্ছে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট। কেউ যেন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে, এজন্য কঠোর নজরদারি থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, নির্বাচন কমিশন গঠন এবং নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা ‘মীমাংসিত ইস্যু’। এ নিয়ে কাউকে মাঠ গরম করার সুযোগও দেয়া হবে না।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য লে. কর্লেন (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান শনিবার বিকালে বলেন, আমরা ইতোমধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছি। বিএনপিও নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে, এটা দেশের গণতন্ত্রের জন্য শুভ। কিন্তু এই প্রস্তুতির শুরতেই তারা এমন কিছু কথা বলেছে যা অসাংবিধানিক, গণতন্ত্র ও আইনবিরোধী। বিএনপির দাবিগুলো অবান্তর। তিনি আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল ছিল। কিন্তু সেই ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছিল বিএনপি। শুধু তাই নয়, দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে তারা ধ্বংস করে। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে বসার কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। নির্বাচন কমিশন সার্চ কমিটির মাধ্যমে হয়, এটাই অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
বিএনপির ধারাবাহিক বৈঠক এবং আন্দোলন কর্মসূচি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর আরেক সদস্য আব্দুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, আমরা এগুলো গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি। তবে এগুলো নতুন নয়। আন্দোলনের হুমকি তো শুরু থেকেই দিয়ে আসছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো-দল হিসেবে তাদের আন্দোলন করার শক্তি-সামর্থ্য কোনোটাই নেই। তাছাড়া তাদের কোনো দাবি জনগণের দাবি নয়। অযৌক্তিক কোনো দাবি নিয়ে মাঠে নামলে তারা আবারও প্রত্যাখ্যাত হবে। বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে দাবির কিছু নেই। বিএনপি বরং শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে একটা পরামর্শ দিতে পারে। তবে সেটা অবশ্যই সংবিধানের আলোকে হতে হবে। সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির বৈঠক ও আন্দোলনকে গুরুত্বের সঙ্গে না দেখলেও দলটির কর্মকা- নিয়ে সতর্ক। বিএনপির দাবিগুলোকে ‘অযৌক্তিক’ বললেও আওয়ামী লীগ নেতারা চান-বিএনপি নির্বাচনি মাঠে থাকুক। এতে নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না। কিন্তু নির্বাচনের আগে মাঠ গরম করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির সুযোগ দেয়া হবে না। এ ক্ষেত্রে আগের মতোই কঠোর অবস্থান অব্যাহত রাখবে দলটি। ৯ সেপ্টেম্বর দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সভাপতি শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে সার্বিক দিকনির্দেশনা দেন। শনিবার দলের সম্পাদকম-লীর বৈঠকেও প্রাধান্য পায় আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি। পাশাপাশি আন্দোলনের নামে কেউ বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা চালালে তা কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে বলেও নেতারা মত দেন।
এ বিষয়ে শনিবার এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, জনবিচ্ছিন্ন বিএনপি নির্বাচনকে ভয় পায়। তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে চোরাগলি পথে ক্ষমতায় আসতে নানা পাঁয়তারা করছে। কিন্তু ক্ষমতায় আসতে হলে তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জনগণের ভোটে জয়ী হয়েই আসতে হবে। নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে দেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। সংবিধান অনুযায়ী জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের অধীনেই হবে এ নির্বাচন। সংবিধানের বাইরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নিরপেক্ষ সরকার এ রকম কোনো কিছুই গঠিত হবে না।
করোনা মহামারী নিয়ন্ত্রণে আসায় দীর্ঘদিন পর স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নির্বাচনকে সামনে রেখে কেউ যেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক আওয়ামী লীগ। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি চলছে। ফলে অনেক অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। এবার মাঠে নামবে, বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরেই তারা বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার প্রস্তুতির সঙ্গে সঙ্গে তারা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে। ষড়যন্ত্রের প্রস্তুতি নিচ্ছে। শেখ হাসিনার সরকার হঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। ছাত্রলীগকে সজাগ থাকতে হবে। এ সময় অতীতের কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর বলেন, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী তত বেশি গুজব অপপ্রচার ছড়ানোর চেষ্টা করবে। যেহেতু তারা রাজপথে পেরে উঠতে পারবে না, তাই তাদের একমাত্র হাতিয়ার গুজব-অপপ্রচার। আমাদের আগামী দিনে এই গুজব-অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে। তিনি জানান, আমরা সারা দেশে ইতোমধ্যে ৬৯টি কর্মশালা সম্পন্ন করেছি। আমাদের লক্ষ্য জেলা পর্যায়ে ১০ হাজার মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করা। আর এই মাস্টার ট্রেইনারদের দ্বারা তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত এক লাখ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট তৈরি করা হবে।
এদিকে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার শর্তে বেশ কিছু দফা তুলে ধরবে বিএনপি। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না-আপাতত এমন বার্তাই দেয়া হবে। এসব দাবির পেছনে যৌক্তিক কারণও তুলে ধরা হবে। সরকার এসব দাবি পূরণে কার্যকর উদ্যোগ না নিলে সরকার হঠানোর এক দফার আন্দোলনে যাওয়ার চিন্তা করছে দলটির হাইকমান্ড। পাশাপাশি আন্দোলন এবং নির্বাচনে দেশের সব শ্রেণিপেশার মানুষের সমর্থন আদায়ে আগাম কিছু প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হবে। এ সংক্রান্ত রূপরেখার খসড়া তৈরি করছে দলটির নীতিনির্ধারকরা।
বিএনপির কেন্দ্রীয়, তৃণমূল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক থেকে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ মত যুক্ত করা হবে এসব খসড়ায়। এরপর স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে হবে বিস্তারিত আলোচনা। প্রাথমিক দফা ও প্রতিশ্রুতি যোজন-বিয়োজন করে তা চূড়ান্ত করা হবে। তবে দাবি ও প্রতিশ্রুতি এ দুটো বিষয় একসঙ্গে নাকি আলাদাভাবে তুলে ধরা হবে-তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আপাতত নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারসহ বেশ কিছু দফা জাতির সামনে তুলে ধরার পক্ষে হাইকমান্ড। আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তা তুলে ধরা হবে। এতে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে। বিএনপির নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
সূত্র জানায়, জাতির সামনে এ রূপরেখা তুলে ধরার দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। দলের নির্বাহী কমিটি ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে বৈঠক শেষ করে তা চূড়ান্ত করার পক্ষে বেশিরভাগ নীতিনির্ধারক। এরপরই আনুষ্ঠানিকভাবে এসব দাবি তুলে ধরতে চান তারা। তবে শনিবার অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত আজ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হতে পারে।
জানতে চাইলে গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন পর বিএনপির ঘুম ভেঙেছে- এটা ভালো লক্ষণ। সকালের নাস্তা করে যদি ফের ঘুমিয়ে পড়ে তাহলে কিছুই হবে না। এখন জেগে থাকতে হবে। দলের করণীয় চূড়ান্তে নেতাদের পাশাপাশি সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও তাদের বসতে হবে। আন্দোলন কিংবা নির্বাচনে তারা কি করতে চায় এমন একটি রূপরেখা দ্রুত জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। তিনি আরও বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে এ দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল হয়েছে। এর বিকল্প হলে খুবই ভালো। যেমন আমি জাতীয় সরকারের একটা প্রস্তাব দিয়েছি। বিএনপিও একটা প্রস্তাব দিতে পারে। তারা যদি নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা দেয় সেটা খুবই ভালো কথা।
বিএনপির নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, দফার সংখ্যা কত হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। প্রাথমিকভাবে তৈরি খসড়ায় অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না- এমনটা ধরে নিয়েই তারা পরিকল্পনা তৈরি করছেন। কোন প্রক্রিয়ায় নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে তা নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করবে বিএনপি। প্রয়োজনে দল হিসাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গেও এ ইস্যুতে কথা বলার চিন্তা রয়েছে। দলটির নেতারা জানান, নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে তারা একটি স্থায়ী সমাধান চান। যাতে প্রতিবার ভোটের আগে এ ইস্যু নিয়ে ঘোলাটে পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়। এ দাবির পেছনে যৌক্তিক কারণও তুলে ধরা হবে। দলীয় সরকারের অধীনে বিগত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চিত্র তুলে ধরবেন তারা। নির্বাচন কমিশন বা প্রশাসনের ইচ্ছা থাকলেও দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে এমন ধারণা জন্ম নিয়েছে। তাই দিন দিন মানুষ ভোটের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। ভোট কেন্দ্রে কমছে ভোটার উপস্থিতি। মানুষকে ভোটকেন্দ্রমুখী করার একমাত্র পথ হচ্ছে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার। ভোটের আগে এমন একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে যাতে ভোটারদের মনে আস্থা ফিরে আসে যে, তারা নিজের পছন্দমতো জনপ্রতিনিধি বেছে নিতে পারবেন। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যারাই ক্ষমতায় আসুক তা সাদরে গ্রহণ করা হবে বলেও জাতির কাছে প্রতিশ্রুতি দেবে দলটি।
দ্বিতীয় দফায় গুরুত্ব পাবে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন। জনগণের আস্থাভাজন একটি কমিশন গঠনে সব দলের সঙ্গে আলোচনা করার প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। তবে তাদের আশঙ্কা যেভাবেই কমিশন গঠন করা হোক তা ক্ষমতাসীন দলের আজ্ঞাবহই হবে। তবে দলটির নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, নির্বাচন কমিশন গঠনকে তারা মূল ইস্যু করতে চান না। তাদের মতে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে সেখানে ইসি যতই শক্তিশালী হোক তাদের পক্ষে নিরপেক্ষভাবে কাজ করা কঠিন। তবুও এ ইস্যুকে সামনে রেখে কাজ শুরু করেছে দলটি। কমিশন গঠনের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। পাশাপাশি বর্তমান কমিশনের বিরুদ্ধে যে ৪২ বিশিষ্ট নাগরিক রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দিয়েছিলেন তাদের মতামতও নেয়া হবে। ইতোমধ্যে তাদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ শুরু হয়েছে। তাদের মতকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশন গঠন ইস্যুতে রাষ্ট্রপতি বরাবর চিঠি দেওয়াসহ প্রয়োজনে আদালতে যাওয়ার বিষয়টিও ভাবা হচ্ছে।
সূত্র আরও জানায়, নির্বাচনকালীন সরকার ও ইসি ছাড়াও আরও কিছু দফা জাতির সামনে তুলে ধরা হবে। এরমধ্যে রয়েছে, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি। তার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে তা প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হবে। পাশাপাশি দলের নেতাকর্মীসহ বিরোধী মতের বিরুদ্ধে করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানাবে দলটি।
জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন আমরা বর্জন করলেও ২০১৮ সালের ভোটে অংশ নেই। তাই নির্বাচন নিয়ে আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। ভবিষ্যতে আমরা সেই অভিজ্ঞতা আর চাই না। আমরা চাই, এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে। দলীয় সরকারের অধীনে তা কখনো সম্ভব হবে না। এজন্যই আমাদের মূল টার্গেট নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার। সেই দাবিতে আমরা সময়মতো কর্মসূচি দেব।
সূত্র জানায়, নির্বাচনে যাওয়ার শর্তে দেয়া বিভিন্ন দফার পাশাপাশি বেশ কিছু প্রতিশ্রুতিও জাতির সামনে তুলে ধরার পরিকল্পনা রয়েছে। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ঘোষিত ‘ভিশন ২০৩০’ কে ধরে তা চূড়ান্ত করা হচ্ছে। সেখানে যেসব প্রতিশ্রুতিগুলোর এখনো গুরুত্ব রয়েছে তা রাখা হবে। পাশাপাশি বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি বিবেচনা করে যোগ করা হবে নতুন কিছু প্রতিশ্রুতি। নির্বাচনী ইশতেহারের আলোকে তৈরি করা হলেও এটাকে ইশতেহার বলা হবে না। আগামী দিনের আন্দোলন এবং নির্বাচনে সাধারণ মানুষ কেন বিএনপিকে সমর্থন করবে তেমন একটা বার্তা দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে মৌলিক কি পরিবর্তন আনতে চায় তার একটা আগাম ধারণা দেয়াই এর মূল লক্ষ্য।
পূর্ববর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ