চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের স্বেচ্ছাসেবক পারভেজের কাণ্ড : একদিনে ৮ বার সরকারি ওষুধ উত্তোলন নিয়ে আলোচনার ঝড়
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাল থেকে চিকিৎসকের সাক্ষর জাল করে একদিনে ৮ বার সরকারি বিভিন্ন ওষুধ উত্তোলন করেছে পারভেজ নামে এক স্বেচ্ছাসেবক। গতকাল মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে এঘটনা ঘটে। পারভেজ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কর্মরত। এদিকে এঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। হাসপাতালজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রাথমিক তদন্তে পরিবারের কয়েকজনের নামে ওষুধ উত্তোলনের বিষয়টি সত্যতা পাওয়া গেছে। আরও তদন্তকরা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ওই স্বেচ্ছাসেবককে হাসপাতালে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবত একাধিক ব্যক্তির নামে-বেনামে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপনা ছাড়ায় (টোকেনের মাধ্যমে) হাসপাতাল থেকে ওষুধ উত্তোলন করে আসছিলো স্বেচ্ছাসেবক পারভেজ। গতকাল ওষুধ তোলার পর একটি ব্যাগে করে বাড়ি নিয়ে যাবার সময় জানাজানি হলে বিষয়টি ধরা পড়ে সংবাদকর্মীদের কাছে। প্রথমে এড়িয়ে গেলেও পরে সংবাদকর্মীদের জেরার মুখে গতকাল একদিনেই ৮টি টোকেনের মাধ্যমে বিভিন্ন ওষুধ নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন স্বেচ্ছাসেবক পারভেজ। পরে হাসপাতাল থেকে দ্রুত সটকে পড়েন স্বেচ্ছাসেবক পারভেজ। এতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে।
স্বেচ্ছাসেবক পারভেজ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গতকাল ৮টি টোকেনের মাধ্যমে হাসপাতাল থেকে ওষুধ উত্তোলন করেছি। কয়েকদিনে ৮টি টোকেনে চিকিৎসকের সাক্ষর নিয়েছিলাম। এই টোকেন দিয়েই আজ ওষুধ উত্তোলন করেছি। এর আগে আমি কখনো ওষুধ উত্তোলন করেনি। এই ওষুধগুলো আমার মেজো ভাই করোনা ইউনিটের স্বেচ্ছাসেবক সোহান ও আমি মিলে তুলেছি পরিবারের জন্য।
এদিকে এঘটনার পর চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগ নড়েচড়ে বসেন। দফায় দফায় অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক পারভেজকে জেরা করা হয়। একপর্যায়ে সে পরিবারের সদস্যদের জন্য ওষুধ উত্তোলন করেছেন বলে স্বীকার করে। তবে ওষুধগুলো বিক্রির জন্য নাকি পরিবারের জন্য উত্তোলন করেছে এই নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। স্বাস্থ্য সচেতন মহলের দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঠিকভাবে তদারকি ব্যবস্থা ও জবাবদিহিতা না থাকায় এ অনিয়ম বেড়েই চলেছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এএসএম ফাতেহ আকরাম বলেন, প্রাথমিকভাবে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতি ছাড়ায় স্বেচ্ছাসেবক পারভেজ ও তার ভাই ওষুধ উত্তোলনের বিষয়টি জেনেছি। রোগী ও তার ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অন্য ব্যক্তি কখনো ওষুধ উত্তোলন করতে পারবেন না। ওই স্বেচ্ছাসেবক পারভেজকে হাসপাতালে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান বলেন, আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। ওই স্বেচ্ছাসেবক বিক্রির জন্য নাকি তার পরিবারের সদস্যদের জন্য ওষুধ উত্তোলন করেছেন এটা তদন্ত করা হচ্ছে। কোন অনিয়মের সত্যতা পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।